To the Lighthouse - Virginia Woolf - Discussion about Characters (Bangla) |
To the Lighthouse – Virginia Woolf - Discussion about
Characters –
টু দ্যা লাইটহাউজ - চরিত্রসমূহ
আলোচনা - ভার্জিনিয়া উলফ
চরিত্র তালিকাঃ
১। জনাব র্যামজে (Mr. Ramsay)
২। মিসেস র্যামজে (Mrs. Ramsay)
৩। লিলি ব্রিসকো (Lily Briscoe) – একজন মহিলা চিত্রকর এ জনাব র্যামজের বন্ধু।
৪। জেমস র্যামজে (James Ramsay) -
জনাব র্যামজের সবচেয়ে ছোট ছেলে।
৫। পল রেইলে (Paul Rayley) -
র্যামজে পরিবারের একজন কমবয়সী বন্ধু ও মিন্টা ডয়েলের স্বামী (পরে বিয়ে করেন)
৬। মিন্টা ডয়েল (Minta Doyle)
৭। চার্লস ট্যান্সলে (Charles Tansley) – একজন কমবয়সী দার্শনিক ও জনাব র্যামজের ছাত্র।
৮। উইলিয়াম ব্যাঙ্কস (William Bankes) – একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও জনাব র্যামজের বন্ধু।
৯। অগাস্টাস কারমাইকেল (Augustus Carmichael) -
একজন আফিমখোর কবি।
১০। অ্যান্ড্রু র্যামজে (Andrew Ramsay) -
জনাব র্যামজের সবচেয়ে বড় সন্তান।
১১। জ্যাসপার র্যামজে (Jasper Ramsay) -
জনাব র্যামজের ছেলে।
১২। রজার র্যামজে (Roger Ramsay) -
জনাব র্যামজের ছেলে।
১৩। প্রু র্যামজে (Prue Ramsay) -
জনাব র্যামজের সবচেয়ে বড় মেয়ে।
১৪। রোজ র্যামজে (Rose Ramsay) -
জনাব র্যামজের মেয়ে।
১৫। ন্যান্সি র্যামজে (Nancy Ramsay) -
জনাব র্যামজের মেয়ে।
১৬। ক্যাম র্যামজে (Cam Ramsay) -
জনাব র্যামজের সবচেয়ে ছোট মেয়ে।
১৭। মিসেস ম্যাকনাব (Mrs. McNab) -
জনাব র্যামজের বাড়ির পরিচারিকা।
১৮। ম্যাকঅ্যালিস্টার (Macalister) – একজন জেলে – যিনি জনাব র্যামজেকে লাইটহাউজে নিয়ে
গিয়েছিলেন।
১৯। ম্যাকঅ্যালিস্টার এর ছেলে (Macalister’s boy) –
জনাব জনাব র্যামজেকে লাইটহাউজে নেয়ার সময় নৌকার দাঁড় বাইতেছিল যে ছেলেটি।
প্রতিষ্ঠিত ধারার সমালোচকগণের মতে ভার্জিনিয়া উলফের চরিত্ররা স্মরণীয় কোনো চিত্র নির্মাণে ব্যর্থ। তার চরিত্ররা পাঠক মনে ছাপ রাখতে পারে না, পাঠক দ্রুতই তার চরিত্রদের ভুলে যায়। মূল বিষয় হচ্ছে ভার্জিনিয়ার চরিত্রদের প্রথাগত সমালোচনার মানে বিচার করা যাবে না, যেহেতু তার চরিত্ররা চিত্রিত হয় নতুন ঔপন্যাসিক আঙ্গিকে।
হেনরী ফিল্ডিংয়ের যুগ থেকে উপন্যাসে চরিত্র দু’ভাবে চিত্রিত হয়।
প্রথম ধরনটি হচ্ছে: নির্দিষ্ট ছকে ঔপন্যাসিকরা চরিত্র আঁকেন: তারা দেখতে কেমন, তাদের পোশাক আশাক কী, তাদের পূর্ণতা কোথায়, শূন্যতাই বা কোথায়, কী তাদের দোষগুণ, কী তাদের বৈশিষ্ট্য সবই ঔপন্যাসিক বর্ণনা করেন।
দ্বিতীয় ধরনটি হচ্ছে: চরিত্ররা নিজেরাই নিজেদের কথা বলে, নিজেদেরকে
ফুটিয়ে তোলে, আবার অন্যরা তাদের সম্বন্ধে কী মন্তব্য করে তার মাধ্যমেও তাদের চরিত্র ফুটে উঠে। ভার্জিনিয়া উলফ দ্বিতীয় ধরনের চরিত্র নির্মাতা, কারণ প্রথম ধরনের চরিত্র চিত্রণ, ভার্জিনিয়ার
মতে বহিরাবরণেই সীমাবদ্ধ, প্রথম ধরনের চরিত্রদের মনের খোঁজ মেলে না। ভার্জিনিয়ার উদ্দেশ্য ছিল, চরিত্রদের দেহ অপেক্ষা মনকে, মনের প্রতি স্তরকে ফুটিয়ে তোলা, বাস্তব তুল্য করে তোলা। সর্বোপরি আধুনিক উপন্যাসের চরিত্র চিত্রণ যেহেতু মনের উপরই অধিক গুরুত্ব দেয়, আধুনিক ঔপন্যাসিক হিসেবে ভার্জিনিয়া তাই করেছিলেন।
চেতনা প্রবাহী ধারায় পর্যায়ক্রমিকভাবে ভার্জিনিয়ার চরিত্ররা রূপ লাভ করে স্থান ও প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে, চক্রাকারে, প্রসঙ্গ বা অনুসঙ্গকে ঘিরে। ভার্জিনিয়ার সৃষ্ট চরিত্ররা একবারেই নির্মিত হয় না, ধীরে ধীরে চরিত্রটির মনের উপর অতীত ও বর্তমান ঘটনা প্রবাহ কী প্রতিক্রিয়া করে তার চেতনায় সে সব উপাদান নিয়েই ভার্জিনিয়ার চরিত্ররা গড়ে উঠে। এভাবেই ড্যালোওয়ে চরিত্রটি গড়ে উঠে পিটারের চেতনার মাধ্যমে, অন্যান্য চরিত্রদের চেতনার মাধ্যমে।
চরিত্র নির্মাণে ঔপন্যাসিক ভার্জিনিয়া নিজেকে যতদূর সম্ভব দূরত্বে রাখেন, ঔপন্যাসিকের সর্বদর্শিতায় বিরত থাকেন। পাঠক চরিত্রদেরকে হঠাৎ হঠাৎ যেভাবে দেখে, সেভাবেই চরিত্ররা পূর্ণাবয়ব লাভ করে। প্রচলিত উপন্যাসের চরিত্র পরিস্ফুটনের চেয়ে ভার্জিনিয়ার পদ্ধতিতে পরিস্ফুটন; চরিত্রদের পরস্পরকে পরস্পরের অনুভূতির মাধ্যমে পরিস্ফুটিত করে তোলা আরো বেশি বাস্তবধর্মী, আরো বেশি কার্যকর।
ভার্জিনিয়া তার চরিত্রদের স্থির বা অপরিবর্তিত কোনো গণ্ডিতে আবদ্ধ করেন না। তাঁর চরিত্ররা ক্রম পরিবর্তন পেতে পেতেই একটা পর্যায়ে পৌঁছে। কোনো একটা বা দুটো ঘটনা দিয়েই তার চরিত্ররা গড়ে উঠে না। পিটার ওয়ালস, লেডী ব্রুটন, হিউহোয়াইটব্রেস, স্যার ব্র্যাডশ’ সবগুলো চরিত্রই এভাবে গড়ে উঠে। পিটার ওয়ালসের প্রেমে অপূর্ণতাবোধের যন্ত্রণা, ডরিস কীলম্যানের
উচ্চাভিলাষে ব্যর্থতা ও এলিযাবেথের সরল, নিস্পাপ জীবনাচরণ পাঠকের কাছে স্বচ্ছ হয়ে উঠে। কিন্তু চরিত্র চিত্রণে
ভার্জিনিয়ার সীমাবদ্ধতা হচ্ছে; ভার্জিনিয়া তাঁর শ্রেণি চেতনাবদ্ধ। ইংরেজ মধ্যবিত্ত সমাজকে ভার্জিনিয়া বুঝতেন নির্ভুলভাবে, তিনি নিজেও ছিলেন মধ্যবিত্ত শ্রেণিভুক্ত। তাই তিনি মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে চিত্রিত করেন সফলভাবে। পক্ষান্তরে, নিম্নবিত্তের মানুষেরা, দরিদ্র মানুষেরা তাঁর উপন্যাসে জীবন্ত হয়ে উঠে না। ভার্জিনিয়া মধ্যবিত্ত শ্রেণির গণ্ডির বাইরে নিজেকে তুলে ধরতে পারেন না সমান সাফল্যে। দোকানদার, ক্ষুদে ব্যবসায়ী, বড়ো ব্যবসায়ীরা ভার্জিনিয়ার জগতে অনুপ্রবেশ
করতে পারে না।
নিজে একজন নারী হওয়ায়, ভার্জিনিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নারী কেন্দ্রিক। তার জীবনবোধ প্রজ্ঞা প্রধান না হয়ে বরং ধ্যান প্রধান। বস্তুবাদিতার চেয়ে তিনি বেশি প্রকৃতিবাদী। তাই তিনি সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ বাস্তবতার চেয়ে বেশি আগ্রহী; বৃক্ষ, ফুল, শামুকের জীবনে। সমাজ ও ধর্ম বিষয়ে তার একটা নারীসুলভ অনীহা আছে। জীবনের যে চিত্র তিনি আঁকেন, তাতে দারিদ্র, জীবনের করুণ দিক, নিষ্ঠুরতা প্রবলভাবে অনুপস্থিত। মধ্যবিত্ত শ্রেণির নারী হওয়ায় তাঁর উপন্যাসে এসবের অনুপ্রবেশ ঘটেইনি। তাছাড়া, তিনি গণ সমালোচনার আশঙ্কায়, সমাজ নিন্দার আশঙ্কায়/ভয়েও হয়ত-বা এসব সমাজ বাস্তবতাকে তাঁর উপন্যাসের বিষয়বস্তু করেননি সচেতনভাবেই। ইংরেজি উপন্যাসকে তিনি আরো বেশি নারীবাদী বৈশিষ্ট্যেই ভারী করে তুলেছেন।
তবে প্রেমাকুলতা বর্ণনায় তার নারী বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি
ছিলেন বেশ সংযত। প্রেমাকুলতা ও যৌনতা বর্ণনায় অতি খোলামেলা হওয়া থেকে সংযত। প্রেম ও যৌনতা বিষয়ক প্রসঙ্গে তিনি বেশ সতর্ক: কিছুদূর এগিয়েও থেমে যান।
সবকিছু মিলিয়ে ভার্জিনিয়া উলফের স্থান ইংরেজি সাহিত্যে সুচিহ্নিত। আধুনিক ইংরেজি ঔপন্যাসিকদের মধ্যে তার নাম উল্লেখ্য। শ্রেষ্ঠতমদের অন্যতম না হলেও ভার্জিনিয়া উলফ তাঁর বস্তুবাদী যুগে অন্তর্বাদী ধারা প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। উপন্যাসকে আত্মিক নান্দনিকতায় সমৃদ্ধ করেছিলেন। নতুন যুগকে, নতুন ধরণের উপন্যাসকে তিনি তাঁর দেশে এমন সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, সেখান থেকে ইংরেজি উপন্যাসের আর পূর্বাবস্থায়, প্রচলিত ধারায় ফিরে যাওয়া ছিল অসম্ভব প্রায়।
No comments:
Post a Comment