Discussion about the Social, Cultural and Literary Context of the Novels of Virginia Woolf (Bangla) |
Discussion
about the Social, Cultural and Literary Context of the Novels of Virginia Woolf
সামাজিক, সাংস্কৃতিক
ও সাহিত্যিক পটভূমি
সব
লেখকই তার যুগের, তার সময়ের প্রভাবাধীন। কোনো না কোনো প্রকারে,
লেখক যে যুগে জন্মগ্রহণ করেন, বেড়ে উঠেন,
তা তাকে এত গভীরভাবে প্রভাবিত করে যে, তার যুগকে
না বুঝে লেখককে সম্পূর্ণ বুঝা দুঃসাধ্য প্রায়। সাহিত্যের অন্যান্য শাখার চেয়ে উপন্যাসের
বেলায় এই সত্যটি অলঙ্ঘনীয়।
১৮৯০
সাল ইংল্যান্ডের সাহিত্য ও সমাজ জীবনের উল্লেখযোগ্য সময়। এ সময়ে ইংল্যান্ডের সমাজ
জীবনে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে, এ পরিবর্তন জীবন বিকাশের সব দিকে ছাপ ফেলে।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষাংশে ইংল্যান্ডের অর্থনীতিতে কৃষির ভিত্তি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে,
গ্রামগুলো দ্রুত ক্ষয়ে গিয়ে নগর গড়ে উঠতে থাকে। শিল্পায়ন ও নগরায়ণ
বাড়তে থাকে, এছাড়া জনসংখ্যাধিক্য, আবাসন
সঙ্কট, অপরাধ, নরনারীর যৌন সম্পর্কের নৈতিকতার
অবনতি এসব সমস্যাও ঘটতে থাকে। এক কথায় নগর সভ্যতা তাঁর সমগ্র বিসদৃশ্যতা নিয়ে উপস্থিত
হয়। নগরীর আবহাওয়া ক্রমেই হয়ে উঠতে থাকে ধূলি, ধোয়াময়,
কোলাহলাকীর্ণ। বৃহদায়তন নগরীর সব বিশ্রী রূপের রূপায়ন দেখা যায় “মিসেস ড্যালোওয়ে” উপন্যাসে।
নগরায়ণের একটি শুভ দিক হলো সামাজিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা য়োগ। প্রচলিত ভিক্টোরীয়
টাকা বানানোর প্রতিযোগিতা, আর শুধু টাকার সম্পর্কের স্থলে,
নতুন সমাজে নৈতিকতা ও সমাজ দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে। কল্যাণ রাষ্ট্রের
ধারণাটিও তখন ভিত্তি পায়। সমাজ ও রাষ্ট্র জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য
ও সুস্থ জীবন নির্বাহের দায়িত্ব গ্রহণ করে। ফলে, বিবাহবিচ্ছেদ
যত না গুরুত্ব পেত তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে থাকে দরিদ্রদের বঞ্চনা ও শিশু অধিকার।
ব্যক্তিগত নৈতিকতাবোধের চেয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার ভূমিকা বলিষ্ঠতর হয়।
নৈতিকতা
বোধ সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় নিপতিত হয়। বিজ্ঞানের ও বৈজ্ঞানিক চেতনাবোধের বিকাশের সাথে
সাথে অনেক নৈতিক ভিত্তি ও প্রশ্নাক্রান্ত হয়ে ক্রমেই সমাজ জীবনে অনিশ্চয়তা ও উদ্বিগ্নতা
বাড়িয়ে তোলে।
বুদ্ধিবাদ
ও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, অনেক প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে
প্রশ্নের সম্মুখীন করে তোলে। ধর্মের ক্ষেত্রে সংশয়বাদ ও অজ্ঞেয়তাবাদ-এর প্রভাব দেখা দেয়, এরকম অবস্থা ভিক্টোরীয় যুগেও দেখা
দেয়, কিন্তু ভিক্টোরীয় লেখকরা সমাজ ও নৈতিকতার উৎপত্তি নিয়ে
তেমন কোনো সমালোচনায় আগ্রহী ছিলেন না। ডিকেন্স ও থেকারে সমালোচনা করেছেন সীমিত কিছু
সামাজিক সমস্যার কিন্তু সর্বোপরি তারা সার্বিক জীবন ব্যবস্থাকে মেনে নেন। উনিশ
শতকের শেষ পর্যায়ের লেখক; শ’, ওয়েলস
ও গলসওয়ার্দীকে, বিদ্যমান সামাজিক, নৈতিক
ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সমালোচনা করতে দেখা যায়। বিদ্যমান সব ব্যবস্থা সম্পর্কে
তাদের পরস্পর বিরোধী মতগুলো সাধারণ মানুষকে দ্বন্দ্বে ফেলে দেয়; কোন্ মতটি গ্রাহ্য, কোটি বর্জ্যনিয় তা নিয়ে সাধারণ মানুষ
দোটানায় পড়ে যায়।
এই
দ্বন্দ্বের দোলাচলে সাধারণ মানুষ পূর্বের তুলনায় আরো বেশি অন্তর্মুখী হয়ে নিজের
মধ্যে নিজেই লুকাতে শুরু করে। ফ্রয়েডের মনস্তত্ত্ব সাধারণ মানুষের অন্তর্মুখীনতাকে
আরো তীব্র করে তোলে। ফ্রয়েড চেতন মনকে কীভাবে অচেতন মন প্রভাবিত করে, মানুষের
আচরণকে প্রভাবিত করে তা দেখান। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি, মানুষের
আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ বলে ফ্রয়েড অভিমত দেন। তিনি মানুষকে ততটা বুদ্ধিবাদী মনে করেন
না যতটা বুদ্ধিবাদী মানুষ নিজেকে মনে করে, যতটা যুক্তিবাদী নিজেকে
মনে করে, মানুষ বরং অবচেতনের আবেগ চালিতই হয় প্রধানত। ইয়ুং
ও বার্গস ফ্রয়েডের মতকে আরো যৌক্তিক ভিত্তি দেন। এভাবেই
চেতন মনের চেয়ে অচেতন মনের প্রভাবই মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি বিশ্লেষণের পরিমাপক হয়ে
উঠে।
মনস্তত্ত্বের
এই ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ মানুষের চেতনার জগতে বিপ্লব আনে আর এমন প্রেক্ষাপটে সাহিত্য বিশেষভাবে
উপন্যাস হয়ে উঠে জনপ্রিয় মাধ্যম। অন্য সব বিনোদন মাধ্যমের সঙ্গে প্রতিয়োগিতা করে
উপন্যাস জনপ্রিয়তা লাভ করে কারণ অন্য মাধ্যমে যেমনঃ কবিতায় মানুষের মনোবৈকল্যের, বিক্ষিপ্ত
চিন্তার সংক্ষিপ্ত রূপই প্রকাশিত হয়। উপন্যাস তাঁর দীর্ঘ বিশ্লেষণ করে বলেই উপন্যাস
বিংশ শতকে সমধিক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
No comments:
Post a Comment