Discussion about the novels of Virginia Woolf (Bangla) |
Discussion about the novels of Virginia Woolf (Bangla)
উপন্যাস
তত্ত্ব
ও
ভার্জিনিয়া
উলফ
ভার্জিনিয়া
উলফের
উপন্যাস
সম্পর্কে
একটা
নিজস্ব
তত্ত্ব
ছিল,
যদিও
তা
নিয়ে
তিনি
কোনো
সুসংবদ্ধ
আলোচনা
করেননি,
কিন্তু
বিক্ষিপ্ত
মন্তব্য
করেছেন;
তাঁর
ব্যক্তিগত
ডায়েরিতে,
বিভিন্ন
চিঠিপত্রে
ও
প্রবন্ধে।
তার
“The common Reader” গ্রন্থে সংকলিত
“Modern Fiction” প্রবন্ধে উপন্যাস
সম্পর্কে
তার
ধারণা
পাওয়া
যায়।
ভার্জিনিয়া
উলফ
যখন
উপন্যাস
রচনায়
হাত
দেন
তখন
ছিল
ওয়েলস
ও
গলসওয়ার্দীদের
সুসংগঠিত
উপন্যাসের
যুগ,
তাঁরা
মূলত
অষ্টাদশ
শতকীয়
উপন্যাস
রচনানুসারী
ছিলেন।
তাঁদের
উপন্যাসের
শুরু-মধ্য
ও
শেষ
ছিল,
ছিল
পূর্ণদৈর্ঘ্য
চরিত্র।
ভার্জিনিয়া
এরকম
উপন্যাসে
কোনো
চমৎকারিত্ব
খুঁজে
পাচ্ছিলেন
না।
ভার্জিনিয়া
এসব
ঔপন্যাসিকদের
বাহ্যিক
রূপকার
বলে
চিহ্নিত
করলেন,
তিনি
বললেন,
এসব
ঔপন্যাসিকরা
মোটেও
“মানুষের
অন্তর-ভাবনা
নিয়ে
বিচলিত
নন,
তারা
শুধু
বাহ্য
দেহ
বর্ণনায়ই
তাদের
দায়িত্ব
শেষ
করেন।
তিনি
মন্তব,
করেন,
“যত
শীঘ্র
ইংরেজি
উপন্যাস-এর
প্রভাব
মুক্ত
হয়,
ততই
তা
মন
ও
চিন্তা
কেন্দ্রিক
হবে।”
ওয়েলস
সম্পর্কে
ভার্জিনিয়ার
মন্তব্য
ছিল,
“সরকারের
যা
করণীয়
ঔপন্যাসিক
হিসেবে
তিনি
তাই
করেছিলেন।”
“সামাজিক,
রাজনৈতিক,
অর্থনৈতিক
আলোচনা
করতে
গিয়ে
তিনি
ব্যক্তি
মানুষকে
ভুলে
গিয়েছিলেন”
অর্থাৎ
অতিরিক্ত
সমাজ
চেতনা
ওয়েলসের
শিল্পী
সত্তার
মৃত্যু
ঘটিয়েছিল।
সমসাময়িক
অন্যান্য
ঔপন্যাসিকদের
সম্পর্কে
তাঁর
মন্তব্য
ছিল
প্রায়
একই
রকম।
তাদের
উপন্যাসে
তিনি
জীবন
খুঁজে
পাননি
আর
“সম্ভবত
জীবনই
খুঁজে
পাওয়া
না
গেলে
সবই
মূল্যহীন।”
তাঁর
মতে
সমসাময়িক
ঔপন্যাসিকরা
সকলে
কেবল
প্রথার
অন্ধ
অনুকরণ
করে
তাদের
উপন্যাসকে
সাজিয়েছেন।
উপন্যাসের
উৎকৃষ্ট
কাঠামোর
যুপোকাষ্ঠে
‘জীবনকে
উৎসর্গ
করেছেন।
তাই
তাঁদের
উপন্যাসে
সব
কিছু
থাকলেও
জীবন
নেই,
অন্তরানুভব
নেই।
, জেমস
জয়েসই
ঔপন্যাসিক
হিসেবে
ভার্জিনিয়া
উলফের
দৃষ্টি
আকর্ষণ
করেন।
জয়েসের
“ইউলিসিসি”
পাঠে
ভার্জিনিয়া
যেন
তার
অভিষ্টের
সন্ধান
পেলেন—এক
নতুন,
এক
মৌলিক,
এক
বৈপ্লবিক
উপন্যাসের
সন্ধান
পেলেন।
প্রচলিত
ঔপন্যাসিকদের
সঙ্গে
জেমস
জয়েসকে
তুলনা
করে
তাকে
“আধ্যাত্মবাদী”
বলে
চিহ্নিত
করলেন,
তার
নিজের
ভাষায়
“যাদের
আমরা
বস্তুবাদী
ঔপন্যাসিক
বলেছি,
তাদের
তুলনায়
জেমস
জয়েস
“আধ্যাত্মবাদী”। যে
কোনো
মূল্যে,
তিনি
অন্তরের
সেই
প্রদীপকে
জ্বালিয়ে
রাখেন,
যে
প্রদীপ
সমগ্র
চেতনার
বার্তা
বহন
করে
নতুন
কিছু
শোনাতে
চায়”
আর
সে
নতুনের
তাড়নায়
সব
প্রচলিত
প্রথাকে
নির্ভয়ে
পরিত্যাগ
করেন
তিনি।
ভার্জিনিয়া
উলফের
মতে,
“জীবন
মানে
সারিবদ্ধ
আনন্দ
প্রদীপ
নয়;
জীবন
মানে
রঙের
বলয়,
এক
আলোর
বৃত্ত,
এক
অর্ধস্বচ্ছ
মোড়ক,
চেতনাকে
যা
আবৃত
করে
রাখে
শুরু
থেকে
শেষাবধি।
ঔপন্যাসিকের
কাজ
কি
এই
বিচিত্র,
অজ্ঞাত,
অনুদ্ঘাটিত
সত্যে
যত
বিচ্যুতি
যত
জটিলতাই
থাকুক
না
কেন
তাকে
একটু
অচেনা
করে
উপস্থাপন
করা
নয়?”
মানব
চেতনা
হচ্ছে
বিশৃঙ্খল
কিছু
অনুভূতি,
পলায়মান,
ভাসমান,
তুচ্ছ
সব
বিষয়ের
সমাহার।
ঔপন্যাসিকের
দায়িত্ব
হচ্ছে
সে
সব
অনুভূতিকে
জীবন
ঘনিষ্ঠ
করে
তোলা।
বাহ্যিক
কোনো
রূপারোপ
না
করে,
কোনো
নিয়ন্ত্রণ
না
করে,
সংগঠিত
করার
চেষ্টা
না
করে
সে
সব
অনুভূতিকে
অবিকৃতভাবে
উপস্থাপন
করাই
ঔপন্যাসিকের
প্রধান
দায়িত্ব।
সে
রকম
উপস্থাপন
করতে
গিয়ে
ঔপন্যাসিক
প্রচলিত
গল্পাংশ,
ট্র্যাজেডি,
কমেডি,
ক্লাইম্যাক্স
এসবকে
পরিহার
করবেন,
কারণ
এসব
প্রথাবদ্ধতা
বাস্তব
অনুভবকে
বিকৃত
করে,
কৃত্রিম
করে
তোলে।
লেখক
তাই
তাঁর
রচনাকে
কোনো
যৌক্তিক
ভিত্তিতে
প্রতিষ্ঠিত
করার
চেষ্টা
করবেন
না,
তিনি
শুধু
চরিত্রসমূহের
অন্তঃসত্যকে
তুলে
ধরবেন।
এমন
সব
তত্ত্ব
দিয়েই
ভার্জিনিয়া
উলফ
চেতনা
প্রবাহী
ঔপন্যাসিকদের
মধ্যে
নিজেকে
প্রতিষ্ঠিত
করেন।
দুর্ভাগ্য
যে,
তাঁর
তত্ত্বকে
ভার্জিনিয়া
তাঁর
কর্মে
অবিকল
অনুসরণ
করতে
পারেননি।
ভার্জিনিয়া
উলফ
মনে
করতেন,
উপন্যাস
রচনায়
তত্ত্বের
ভূমিকা
গৌণ,
মুখ্য
হচ্ছে:
উপন্যাস
কতটা
সত্য
করে
জীবনকে
চিত্রিত
করে,
আধুনিক
মনোবিজ্ঞান
মনের
যে
আঁধার
দিকের
কথা
বলে
সে
দিকটাকে
কতটা
আলোকিত
করে।
প্রচলিত
উপন্যাসের
সঙ্গে
আধুনিক
উপন্যাসের
বিরোধ
তাই
স্বাভাবিক
ব্যাপার।
আধুনিক
ঔপন্যাসিকের
দৃষ্টি
নিবদ্ধ
মানুষের
অবচেতন
এমনকি
অচেতন
মনের
দিকেই।
জেমস
জয়েসই
প্রচলিত
প্রথার
বিরুদ্ধে
প্রথম
সাহসী
পদক্ষেপ
নেন,
তার
মৌলিক
সৃষ্টিশীলতা
দিয়ে,
অতি
সাধারণ,
তুচ্ছ
সব
অনুভূতিকে
পরিত্যাগ
না
করে,
তাকে
উপন্যাসে
অন্তর্ভুক্ত
করে।
ভার্জিনিয়া
উলফ
জেমস
জয়েস
ও
রুশ
ছোটো
গল্পকারদের
প্রভাবে
জীবনকে
দেখতেন
উপসংহারবিহীন
এক
অনন্ত
বহমান
নদীর
মতো
করে,
তাই
তিনি
প্রথাগত
কোনো
গ্রন্থিমোচন
বা
বিপর্যয়কে
গুরুত্ব
দিতেন
না।
তিনি
মনে
করতেন
এসব
মেকি
প্রথারোগ,
জীবন
প্রবাহে
মেকি
যতি
টানার
সামিল,
জীবনকে
গতি
বিরোধী
চিহ্নিত
করার
সামিল।
ভার্জিনিয়া
উলফ
মনে
করেন
উপন্যাস
কখনোই
আরনল্ড
কথিত
“criticism of life” নয়, “জনপ্রিয়
বিনোদন
মাধ্যম
নয়,
উপন্যাস
হচ্ছে;
কোমলে,
কঠিনে,
লঘুতে,
গুরুতে
মিশ্রিত
অবিকল
জীবনেরই
প্রতিরূপ।”
প্রচলিত
ঔপন্যাসিকদের
রচনায়
তাই
তিনি
ক্ষুব্ধ,
ক্ষুন্ন।
ইংরেজ
ঔপন্যাসিকদের
তিনি
রুশ
গল্পকারদের
অনুসারী
হতে
উদ্বুদ্ধ
করেন।
ভার্জিনিয়া
উলফের
উপন্যাস
তাই
হয়ে
উঠে
গীতি
কবিতাধর্মী।
জীবন,
মৃত্যু
আর
প্রেমের
অভিজ্ঞতাকে
তিনি
উপসংহারে
নিয়ে
যান
না
বরং
সেগুলোকে
সামগ্রিক
জীবনানুভবের
সঙ্গে
এমনভাবে
জুড়ে
দেন
যে
হর্ষ,
বিষাদ,
সুশ্রী,
বিশ্রী
সব
মিলিয়ে
তা
অনুভূতিতে
আলোড়ন
তোলে।
জীবনের
বাঁকে
বাঁকে
প্রেমের
বিচিত্র
অভিজ্ঞতা
তিনি
তুলে
ধরেন
তাঁর
উপন্যাসে।
মিসেস
ড্যালোওয়ে
একজন
বিবাহিতা
মহিলা,
তার
জীবনে
আনন্দের
অধ্যায়
প্রায়
শেষ,
কিন্তু
তার
অতীত
জীবনের
বিচিত্র
সব
অভিজ্ঞতার
স্মৃতি
রোমন্থনই
তার
বর্তমান
জীবন।
পিটার
ওয়ালসের
সঙ্গে
তার
অভিজ্ঞতা
এখন
তার
কাছে
সেন্টিমেন্টাল
মনে
হয়।
অনেক
দিন
পর
পিটার
ওয়ালসকে
দেখে
স্মৃতিরা
সব
অর্গল
ভেঙে
ছুটে
আসে।
পাঠক
তার
সে
সব
পুনর্নির্মিত
স্মৃতিতে
আনন্দানুভব
করে।
একইভাবে
রিচার্ড,
সেলী
সেটনের
সঙ্গে
তাঁর
সম্পর্কও
উঠে
আসে,
এলিযাবেথের
জন্য
তাঁর
স্নেহ
উঠে
আসে,
উঠে
আসে
ডরিস
কীলম্যান
সম্পর্কে
তাঁর
ঘৃণা
বোধ।
এভাবে
ঔপন্যাসিক
ভার্জিনিয়া
একজন
কবির
মতো
প্রেম,
জীবনকে
কেমন
করে
প্রভাবিত
করে
তা
দেখান।
এভাবে
তিনি
প্রচলিত
উপন্যাসের
অতি
নাটকীয়তার
স্থলে
উপরে
বর্ণিত
সব
অনুভূতিকে
প্রতিস্থাপিত
করে
তাঁর
উপন্যাসের
পূর্ণাবয়ব
দেন।
তাঁর
উপন্যাসে
গীতি
কবিতার
মতো
বর্ণনার
মধ্যে
এমন
একটা
নাটকীয়তা
থাকে
যা
সহজেই
পাঠককে
আকৃষ্ট
করে।
তাঁর
নাটকীয়
বর্ণনা
দক্ষতায়
পাঠক
আকৃষ্ট
বোধ
করে।
ভার্জিনিয়ার
উপন্যাসের
বৈশিষ্ট্য
হলো,
একটা
সাধারণ
দিনে,
একজন
মানুষ
যে
সব
বহু
বিচিত্র
চেতনার
মধ্য
দিয়ে
অতিক্রম
করে
তার
সত্য
বর্ণনা
তুলে
ধরে
ভার্জিনিয়ার
উপন্যাস।
বহু
চেতনা
থেকে
কিছু
নির্বাচিত
চেতনাকে
তিনি
শৃঙ্খলাবদ্ধ
করে
একক
রূপ
দেন।
প্রতিষ্ঠিত
‘সত্য,
সুন্দরের
ধারণাকে
তিনি
অচেনা
করে
তোলেন
তাঁর
উপন্যাসের
কাব্যাকৃতির
মাধ্যমে।
নির্দিষ্ট
কিছু
মানব
মানবীকে
নির্দিষ্ট
সময়
ও
স্থানে
আবদ্ধ
করে,
তাঁদের
অন্তর্ব্যবচ্ছেদ
ঘটালেও
ভার্জিনিয়া
তাদের
বৃহত্তর
প্রেক্ষিত
বিচ্যুত করেন
না
কখনো। তাই
তার
চরিত্ররা
চলমান
পৃথিবীতে
চলমান
বাস্তবতার
প্রতিরূপই
তুলে
ধরে।
জীবন,
প্রেম,
মৃত্যু
কোথাও
জীবন
প্রবাহে
যতি
টানে
না।
সেপ্টেমিয়াসের
আত্মহত্যা,
লুক্রেজিয়াকে
মুহ্যমান
করে
দেয়
না
তার
জীবনকে
অসহনীয়
করে
তোলে
না
বরং
লুক্রেজিয়া
এক
ধরনের
লঘুতায়,
কাব্যিকতায়
মুক্তির
আস্বাদ
অনুভব
করে।
মানসিক
পীড়াগ্রস্ত
তার
স্বামী
সেপ্টেমিয়াস
তার
জন্য
যে
সার্বক্ষণিক
যন্ত্রণার
কারণ
ছিল,
সেপ্টেমিয়াসের
মৃত্যুতে
লুক্রেজিয়া
যেন
নিজেকে
নির্ভার
ভাবে।
এটাই
বাস্তবতা!
এটাই
সত্য!
ভার্জিনিয়া
সে সত্যের
নির্মোহ
ও
নিরাবেগ
প্রকাশ
ঘটান।
No comments:
Post a Comment