Literary Critiques on The Importance of Being Earnest
Literary
Critiques on The Importance of Being Earnest
The
Importance of Being Earnest লেখা হয়েছিল ১৮৯৪ এর আগস্ট-সেপ্টেম্বর এ-যখন অস্কার ওয়াইল্ড তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে ওয়ার্থিং এ ছিলেন এক সংক্ষিপ্ত ছুটিতে। সে দিনগুলো ছিল ওয়াইল্ড এর জন্য বিব্রতকর এক পরিস্থিতির সময়, কারণ,
যথেষ্ট আয় থাকা সত্ত্বেও তিনি ব্যয় এর ব্যাপারে ছিলেন খামখেয়ালিপূর্ণ এবং বেশ অমিতব্যয়ী। তাঁর এই বাধা সত্ত্বেও এ নাটকটি লেখা হয় প্রফুল্লটিত্তে এবং নিরুদ্বেগে। নাটকটি তাৎক্ষণিকভাবে সাফল্য অর্জন করে এবং তাঁর সকল নাটকের মধ্যে এ নাটকটি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায়। খ্যাতিমান এবং প্রসিদ্ধ অভিনেতা স্যার জন এর কথায়-এ নাটকটি কনশ্রীভ” (Congreve - কনগ্রীভ বিখ্যাত ইংলিশ নাট্যকার) এর সৃষ্ট সবচাইতে উন্নত মানের কাজের সমতুল্য। অস্কার ওয়াইল্ড নিজে তাঁর নাটকটি সম্বন্ধে মন্তব্য করেন,
“এটি এক ধরনের হাস্যরসোদ্দীপক মিলান্তক নাটক”।
এটি অপরূপ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে গতানুগতিক জীবনযাত্রা। নাটকটিতে খুঁজে পাওয়া যাবে সূক্ষ্ম আকাশকুসুম কল্পনার একটি ছবি। তাছাড়া, এ নাটকে আরো পাওয়া যাবে তার নিজস্ব দর্শন। তিনি আরো বর্ণনা করেছেন যে এটি এক প্রজাপতির লেখা নাটক প্রজাপতিদের জন্য।
বার্নার্ড শ নাটকটির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন কারণ তিনি মনে করেছিলেন গঠন এবং রচনাশৈলীতে নাটকটি ছিল প্রাচীনপন্থি এবং এর বিষয়স্তুতে কোনো প্রাণ ছিল না। তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে একটি মিলান্তক নাটক যা তার মনকে ছুঁতে পারেনি এবং তাকে আনন্দ দিতে ব্যর্থ হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে তাঁর একটি সন্ধ্যাবেলাকে অপচয় করেছে। শ এর এই সমালোচনা পড়ে মনে হয় তা ওয়াইল্ড এর শ্রেষ্ঠ নাটকের উপর অন্যায্যভাবে নিষ্ঠুর এবং রূঢ় ছিল,
কারণ, অনেক সীমবদ্ধতার মধ্যেও এ নাটকে দেখা গিয়েছিল জীবনের কিছু কিছু দিকের সমালোচনা।
Arts for Arts Sake (সৃজনশীলতার উদ্দেশ্যে শিল্পকর্ম) এর দলভুক্ত একজন লেখক হিসাবে তিনি নিজেই তার দাবি পরিত্যাগ করতেন, যদি না এ নাটকে শিক্ষামূলক কিছু থাকত। এ নাটকের মাধ্যমে যে দর্শন প্রতিফলিত হয় তার সাথে নাটকের লেখকের নিজস্ব দর্শনের অনেকটা মিল ছিল,
কারণ তিনি বলতে চেয়েছিলেন জীবনের তথাকথিত গম্ভীর এবং রাশভারী বিষয়বস্তুকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত এবং তথাকথিত হালকা বিষয়বস্তুকে গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ এবং বিবেচনা করা উচিত।
The
Importance of Being Earnest এ ওয়াইল্ড কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আলোচনার মধ্যে নিয়ে আসেন, যেমন,
নারীশিক্ষা, উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি লাভ,
বিবাহের অযোগ্যতা, সমাজে শ্রেণিবিভেদ, ঐতিহ্যের ভূমিকা, অভিসিঞ্চন সংক্রান্ত অনুষ্ঠান (Baptism), খাদ্য, অর্থ
(টাকা), ইত্যাদি। তার যুগে সমাজে যা যা কার্যাবলি ছিল পূতপবিত্র, বলতে গেলে তার সব কিছু একধরনের হাস্যরসাত্মক আকারে তুলে ধরেন তিনি। অন্যদিকে যেসব বিষয়কে নগণ্য বা হাস্যকর ঘটনা বলে বিবেচনা করা হয়, সেসব বিষয়কে তুলে ধরা হয় আরো উচ্চতর অবস্থানে, যেখানে কৌতুক সৃষ্টি হয় লেখকের তীক্ষ্ণ রসবোধ থেকে। কিছু কিছু বিষয়বস্তু যেমন জন্ম, পদমর্যাদা এবং ফ্যাশনকে এ নাটকে যেভাবে দেখানো হয়েছে তা কখনো কখনো মনে হতে পারে হাস্যকর অথবা অবাস্তব। এর কারণ হলো আজকের সমাজ সে সময়ের তুলনায় অনেকটুকু বদলে গিয়েছে। তারপরও বলতে হবে এ নাটকে যেসব মূল্যবোধ এবং ধ্যান ধারণা দেখানো হয়েছে, সেসব ইংলিশ সমাজে আজও অনেকটুকু প্রচলিত রয়েছে।
একথা স্বীকার করতে হবে যে এ নাটকের সফল্যের মূল কারণ এর কাহিনি বা বিষয়বস্তু নয়,
বরং এর আকর্ষণীয় এবং চমৎকার সংলাপ। আরও মনে দাগ কাটে বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তাধারা এবং বিভিন্ন রকমের ব্যঞ্জনাময় উক্তি আর কূটাভাস। ওয়াইল্ড নিজেই ঘোষণা করেছেন যে এ নাটকের মাধ্যমে দাবি করার মতো কিছু যদি থেকে থাকে, তা এর আকর্ষণীয় সংলাপ। আত্ম বিজ্ঞাপনে ওয়াইল্ড এর ঝোঁক ছিল একথা সকলেরই জানা। একবার তিনি বলেছিলেন, Lady
Windermere's Fan এর লেখকের চাইতে জ্ঞানী ব্যক্তি হয়তো-বা আছে। তবে এমন ব্যক্তির সাথে আমার কখনো পরিচয় হয়নি। The Importance of Being Earnest এর মাধ্যমে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন একজন সংলাপ লেখক হিসাবে। তিনি এ নাটকে ব্যবহার করেছিলেন অনেক ব্যঞ্জনাময় উক্তি যা ছিল মার্জিত এবং তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন। ডব্লিউ. এইচ. অডেন মন্তব্য করেছেন যে এই নাটকে অস্কার ওয়াইল্ড সংলাপকে প্রাধান্য দিয়েছেন অন্যান্য সব নাটকীয় বিষয়ের উপরে। চরিত্রগুলো তৈরি হয়েছে সংলাপগুলো প্রকাশ করার জন্য এবং নাটকের কাহিনিও সাজানো হয়েছে ঠিক সেভাবে। নাটকের মাধ্যমে প্রকাশিত জীবন দর্শন প্রসঙ্গটি অডেন সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন, যদিও অস্কার ওয়াইল্ড এ বিষয়টিও বিবেচনা বা সমাধানের জন্য উপস্থাপন করেছেন। প্রতিটি চরিত্র, জ্যাক, এলগারনন, মিস প্রিজম, লেন,
সবার ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে তারা রহস্যময় উক্তি করে যা একরকম তাদের অভ্যাসের। মতো বলে প্রতীয়মান হয়। এই সব রহস্যময় উক্তির মূল উপাদানই হলো কূটাভাস। তাদের উক্তিগুলো আপাতঃদৃষ্টিতে স্ববিরোধী মনে হলেও সেসব সত্য বর্জিত নয়। কটুক্তি (Paradox) এর উৎপত্তি খুঁজে পাওয়া যায় রেস্টোরেশন যুগ এ (Restoration Period) এবং পরে অষ্টাদশ শতাব্দীতে শেরিডান (Sheridon) এর লেখায়। ইতিপূর্বে এলিজাবেথীয় যুগে
(Elizabethan Age) বেন জনসন
(Ben Johnson) আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটক (Comedy of
Manners) এবং ভুলভ্রান্তি কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটক (Comedy of
Errors) কে জনপ্রিয় করেন। এ প্রসঙ্গে বোনামি ডোব্রী (Bonamy Dobree) বলেন, এই দুই ধরনের মিলান্তক নাটকের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা স্পষ্ট নয়। যখন হাস্যরস কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটক মানুয়ের লুকানো মনের ইচ্ছাকে প্রদর্শন করে, আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকগুলো প্রমাণ করে যে মানুষ তাদের অপ্রকাশিত মনের ইচ্ছাগুলোকে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে পারে। সাধারণভাবে আশা করা হয় যে হাস্যরস কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকগুলো নৈতিকতার সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতি রেখে রচনা করা হবে,
কিন্তু আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকগুলোতে তা-ই প্রদর্শিত হয় যা কোনো একটি যুগ (অর্থাৎ যুগে যুগে কোনো সমাজের মানুষের আচার-আচরণ এ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়) এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে এ নাটক একটি ফ্যাশন অনুসরণকারী জীবন প্রদর্শন করে কেবল মানুষকে আনন্দ দেবার চেষ্টাই করেনি। নাটকটি মানুষের মনের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা এবং আবেগও প্রকাশ করেছে অত্যন্ত গভীরভাবে। নাটকটি বিশেষ করে মানুষের বোধশক্তি এবং বিচার বুদ্ধিকে নাড়া দেয়। এটি মানুষের (সমাজের) গড়ে তোলা কিছু নির্বুদ্ধিতা এবং কৃত্রিম আচরণকে তুলে ধরে।
হাস্যরস কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটক এর আবেদন সার্বজনীন কিন্তু আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকের আবেদন কোনো নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। এ ধরনের নাটকে যে সমাজের চিত্র তুলে ধরা হয়, তার নিয়মগুলো ঠিকভাবে জানা অত্যন্ত প্রয়োজন এবং আরও জানা প্রয়োজন সে সময়ের সমাজের রীতিনীতি। কারণ মানুষের ব্যবহার এবং আচার-আচরণ নির্ধারিত হয় সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারণে এবং সাফল্য অথবা ব্যর্থতা নির্ধারিত হয় সামাজিক মানদণ্ডের ব্যবহারের মাধ্যমে। লেখক তাঁর প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেন কখনো কখনো সেসব সামাজিক রীতিনীতি মান্য করার মাধ্যমে এবং কখনো কখনো প্রচলিত প্রথাকে আক্রমণ করার মাধ্যমে। আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকগুলোতে যে সমাজ দেখানো হয়, তার স্থায়িত্ব হয় খুব সীমিত।
সমাজের উঁচু শ্রেণির লোকজন যে ভুলগুলো করে তা এর নাটকে দেখানো হয়েছে হালকাভাবে। তা ছাড়া, লেখক কিছু কিছু মূল্যবোধ তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন যার তাৎপর্য দীর্ঘদিন ধরে চলার মতো। আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলনান্তক নাটকটি বুদ্ধিমত্তার সাথে উপস্থাপিত হয়েছে। এর সাথে যুক্ত ছিল অসাধারণ কথা বলার কলাকৌশল যা প্রতিটি চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। ।
একটি আচার-আচরণ কেন্দ্রিক মিলান্তক নাটকে যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা প্রয়োজন, তার সবকটিই ছিল
The Importance of Being Earnest এ। জন্মসূত্র, পদমর্যাদা এবং ফ্যাশন—এসব বিষয়ে সমাজের অতিরঞ্জিত যে মূল্যবোধ দেখা যায়,
তা নিয়ে লেখক যেন খানিকটা পরিহাস করেন। নাটকটিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা যায় তার সংলাপের চমৎকারিত্বের কারণে, যা এর প্রতিটি চরিত্র তুলে ধরেছে। একই সাথে নাটকটি কিছু কিছু স্থায়ী চিন্তাধারা এবং মূল্যবোধকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত করেছে যা আজও ইংলিশ সামাজিক জীবনে খুঁজে পাওয়া যায়। লেডী ব্র্যাকনেল সম্পদ এবং বংশকে যে রকম মাত্রাতিরিক্ত প্রাধান্য দেন,
সে বিষয়টিকে বিদ্রুপ করা হয়েছে। নাটকের প্রথম দৃশ্য যেখানে এ্যালগারনন এবং লেনকে দেখানো হয়েছে, তা ছিল হালকা হাস্যরসের পূর্বাভাস। ঐ দৃশ্যেই দেখানো হয়েছে এমন একটি সমাজ যা শ্রেণিবিভেদের মাধ্যমে বিভক্ত। লেডী ব্র্যাকনেল এর ধারণা এই-ই যে সার্বজনীন শিক্ষার ফলে সমাজে উৎপীড়ন ছড়িয়ে পড়বে। সেসিলির গাছে পানি দেয়ার কাজ মিস প্রিজম অনুমোদন করেননি কারণ তার ধারণা এ ধরনের কাজের জন্য উযুক্ত নিম্নশ্রেণির কর্মচারী এবং সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের জন্য উপযুক্ত কাজ হলো কেবল আনন্দ উল্লাসে সময় কাটানো, যা ধীশক্তি সম্বন্ধীয় অথবা বুদ্ধিবৃত্তিক। গোয়েন্ডোলেন একসময় প্রকাশ করে বিত্ত এবং সামাজিকে মর্যাদাহীনতার প্রতি তার লুকিয়ে রাখা মানসিকতা যখন সে বলে সে কোনোদিন কোনো
Spade এর সাথে পরিচিত হয়নি। নাটকের শেষ দৃশ্যে যখন লেডী ব্র্যানেল জ্যাক ওয়ার্থিংকে তার ভাগ্নে হিসেবে গ্রহণ করে নেয়,
তখন বোঝা যায় ইংলিশ সমাজে গোত্র প্রীতিসম্পন্ন চেতনা ঠিক কতটুকু শক্তিশালী। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিদীপ্ততা এবং সংলাপের অন্তরালে খুঁজে পাওয়া যায় সমাজের বাস্তবতা সম্বন্ধে লেখকের গভীর জ্ঞান। এ নাটকে আরো প্রতীয়মান হয় তুচ্ছ নগণ্য বিষয়গুলো নিয়ে লেখকের সার্বক্ষণিক চিন্তা এবং শিল্পকর্মের মাধ্যমে তার সে চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। নাটকে আরো দেখা গেছে সুবিচার এবং ন্যায়নীতির প্রতি তাঁর ইতিবাচক মানসিকতা। তাঁর এ রচনার মধ্যে দিয়ে তাঁর সহৃদয় এবং
ভূমিকা দয়ালু মনেরও পরিচয় পাওয়া যায়, যেভাবে মানব জাতির কিছু কিছু দুর্বলতাকে সৌহার্দ্যময়তার সাথে প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি। মনে হয় অস্কার ওয়াইল্ড উদ্বিগ্ন ছিলেন যে কিছু কিছু মূল্যবোধ সমাজে স্থায়িত্ব লাভ করবে কি না। মনে হয় তিনি চেয়েছিলেন এমন একটি সমাজকে খুঁজে পেতে যা কল্পনায় তিনি দেখেছিলেন এবং যার প্রতিনিধিত্ব তিনি নিজে করেছিলেন।
No comments:
Post a Comment