The Metaphysical Poets - T S Eliot - Translation in Bangla |
দ্য
ম্যাটাফিজিকাল
পোয়েটস - টি এস ইলিয়ট - বাংলা অনুবাদ
এমন
এক
প্রজন্মের
কবিদের
এই
কবিতাগুলো
সংগ্রহ
করেছেন
প্রফেসর
গ্রীয়ারসন
যাদের
নাম
শোনা
গেছে
বেশি
কিন্তু
তাঁদের
কবিতার
পাঠ
হলেও
সফল
ও
সার্থক
পাঠ
কমই
হয়েছে,
আর
এমন
একটা
গুরুত্বপূর্ণ
সংগ্রহের
জন্য
তিনি
কৃতিত্বের
দাবিদার।
তাঁর
সংগৃহীত
কবিতার
অনেকগুলোর
সঙ্গে
পাঠকদের
পরিচয়
হয়েছে
বিভিন্ন
সঙ্কলনে,
সে
কবিতাগুলোর
সঙ্গে
অরেলিয়ান
টাউনশেণ্ড এবং
লর্ড
হার্বার্ট অব
চেরবারীর কবিতাও
যুক্ত
হয়েছে।
কিন্তু
এই
সঙ্কলনটি,
প্রফেসর
সেইন্টসবারীর
ক্যারোলাইন
কবিদের
সঙ্কলন
বা
অক্সফোর্ড
বুক অব
ইংলিশ ভার্স
সঙ্কলনটির
মতো
নয়।
প্রফেসর
গ্রীয়ারসনের
সঙ্কলনটি
নিজেই
একটি
সমালোচনামূলক
সঙ্কলন
এবং
অনেক
সমালোচনার
উদ্যোক্তা।
সবচেয়ে
বড়ো
কথা
হচ্ছে,
কবি
জন
ডানের
অনেকগুলো
কবিতা
তিনি
ম্যাটাফিজিকাল
কবিতার
সাক্ষ্যপ্রমাণ
হিসেবে
অন্তর্ভুক্ত
করেছেন
(যদিও
অনেক
সংস্করণে
তা
নেই)। ম্যাটাফিজিকাল’
শব্দগুচ্ছ
দীর্ঘদিন
হয়
ভুল
অর্থে
ব্যবহৃত
হয়েছে
বা
শান্তধী,
সুরুচি
অর্থে
প্রয়োগ
হয়েছে।
প্রশ্ন
হচ্ছে,
ঠিক
কতদুর
তথাকথিত
‘ম্যাটাফিজিকাল’
কবিরা
একটা
স্বতন্ত্র
ধারা
সৃষ্টি
করতে
পেরেছিলেন
(আমাদের
যুগে
বলতে
হয়
একটা
কাব্য
আন্দোলন’)
এবং
ঠিক
কতদূরই
বা
প্রচলিত
কাব্য
ধারা
থেকে
তাদের
স্বাতন্ত্র
ছিল।
‘ম্যাটাফিজিকাল’
কবিতা
বলতে
ঠিক
কীরকম
কবিতাকে
বুঝায়
তা
নির্ণয়ই
শুধু
কঠিন
কাজ
নয়;
ঠিক
কোন
কোন
কবিরা
তাঁদের
কোন
কোন
কবিতায়
‘ম্যাটাফিজিকাল’
ছিলেন,
তা
নির্ণয়
করাও
একই
রকম
কঠিন
কাজ।
কবি
জন
ডানের
(১৫৭২-১৬৩১)
অনেক
কবিতা
(অন্যান্য
কবিদের
তুলনায়
কবি
মার্ভেল
ও
বিশপ
কিং এর
অনেক
নিকটবর্তী)
ডান
ছিলেন
এলিবেথান
যুগের
শেষ
দিকের
কবি;
কাজেই
তিনি
কাব্যাদর্শে
ছিলেন
কবি
চ্যাপম্যানের নিকটবর্তী।
courtly কবিতার
ধারাটি
আসে
জনসন
থেকে,
জনসন
উদারভাবে
ল্যাটিন
থেকে
ঋণ
গ্রহণ
করেছিলেন।
এই
ধারাটির
মৃত্যু
হয়
পরবর্তী
শতকে,
প্রায়র
এর
‘witticism’ উদ্ভাবনের সাথে
সাথেই।
সবশেষে
দেখ
যায়,
হার্বার্ট,
ভন
ও
ক্ৰশর
ভক্তি
কবিতা
(অনেক
পরে
ক্রিষ্টিনা
রোসেট্টি
ও
ফ্রান্সিস
থমসন
একই
ধারায়
কাব্য
রচনা
করেন);
ক্রশঅ,
কখনো
কখনো
অন্য
কবিদের
তুলনায়
অনেক
গভীর
দৃষ্টিভঙ্গিরও
কম
আঞ্চলিক
ছিলেন,
মাঝে
মাঝে
তিনি
এলিযাবেথীয়
কবিদের
অনুসরণ
করে
প্রাথমিক
যুগের
ইটালীয়
কবিদেরও
ছুঁয়ে
গেছেন।
সংক্ষেপে,
শুধু
metaphor, similie, বা conceit ব্যবহারের
ভিত্তিতে
এই
গোষ্ঠীর
কবিদের
চিহ্নিত
করা
যায়
না
কারণ
রচনা
শৈলির
বৈশিষ্ট্য
হিসেবে
এ
যুগের
সব
কবিরাই
এসব
ব্যবহার
করতেন।
সুতরাং
শুধু
এসবের
metaphor, similie, conceit) ব্যবহারের
ভিত্তিতেই
এঁদেরকে
একটা
বিশেষ
কবি
গোষ্ঠী
হিসেবে
চিহ্নিত
করা
কঠিন।
জন
ডান
ও
কাউলে
এমন
কৌশল
ব্যবহার
করেন
যাকে
বৈশিষ্ট্যগতভাবে
‘ম্যাটাফিজিকাল’
বলা
যায়;
বিস্তারিত
বর্ণনা
(সংক্ষিপ্ত
বর্ণনার
তুলনায়)
যদি
কোনো
বাক্যালঙ্কারকে
কবির
মৌলিকতা
গুণে
ততদূর
নিয়ে
যেতে
পারে।
তাই
দেখা
যায়
কাউলে,
সাধারণ
তুলনার
পরিবর্তে
দীর্ঘ
স্তবকে
পৃথিবীকে
তুলনা
করেন
দাবার
বোর্ডের
সঙ্গে
(To Destiny) এবং ডান
আরো
মহিমায়
‘A valediction কবিতায় প্রেমিক
প্রেমিকাকে
কম্পাসের
দুটি
কাটার
সঙ্গে
তুলনা
করেন।
কিন্তু
অন্যত্র,
দেখা
যায়
শুধু
উপমার
বুদ্ধিদীপ্তিতে
সীমিত
না
থেকে,
দ্রুত
মিশ্র
চিন্তার
(association of thought) অবতারণা
করা
হয়েছে
যার
পাঠোদ্ধারে
পাঠকের
যথেষ্ট
প্রত্যুৎপন্নমতিত্ত্বের
প্রয়োজন।
‘বৃত্তাকার
বলের
উপর
শিল্পী
এক,
যার
কাছে
ছবি
আছে,
আঁকতে
পারে
অনায়াসে।
একটা
ইউরোপ,
আফ্রিকা
এবং
একটা
এশিয়া,
দ্রুত
আঁকতে
পারে
পূর্ণ
মহাদেশ,
শূন্যস্থানে
তার
তেমনি
প্রতি
বিন্দু
অশ্রু-ঝর
গড়িয়ে
দু’চোখ
থেকে
তোমার
একটা
পৃথিবী
গড়ে
সহজে।
তোমার
অশ্রু,
আমার
অশ্রুতে
মিশে
অশ্রুর
দুই
ধারা
মিলেমিশে
আমার
স্বর্গ
গড়ে
শেষে।
(এ
ভেলেডিকশন:
অব
উইপিং
লাইন
১১-১৮)
এখানে
আমরা
কবির
ব্যবহৃত
অন্তত
দুটি
উপমা
পাই,
যা
আপাতদৃশ্যে
সদৃশ
নয়
কিন্তু
কবি
জোর
করে
তাতে
সাদৃশ্য
এনেছেন:
চিত্রকরের
ভূগোল
আর
প্রিয়ার
অশ্রু
এবং
দুই
অশ্রুর
মিলিত
ধারা।
পক্ষান্তরে,
ডানের
অনেক
সফল
উপমাই
সংক্ষিপ্ত
শব্দে
হঠাৎ
তুলনায়
সমৃদ্ধ:
‘সোনালি
চুলের
বাজুবন্ধ
জড়ানো
হাড়ে’
(রিলিক
লাইন:
৬)।
এখানে
‘সোনালি
চুল’
এবং
হাড়ের
উপমায়
যে
তাৎক্ষণিক
সংযোগ
সৃষ্টি
হয়
তার
গুরুত্ব
লক্ষ্যণীয়।
এরকম
দূর-কল্প
উপমায়
যে
ভাবনার
সংযোগ
ঘটায়,
সে
রকম
শব্দগুচ্ছ
সে
সময়কার
অনেক
নাট্যকারই
যে
ব্যবহার
করতেন,
কবি
ডান
তা
জানতেন।
শেক্সপিয়র
ছাড়াও,
মিডলটন,
ওয়েবস্টার,
টার্নার
এরকম
শব্দগুচ্ছ
ব্যবহার
করে
তাদের।
ভাষাকে
সমৃদ্ধ
করেছেন।
স্যামুয়েল
জনসন
প্রথম
ম্যাটাফিজিকাল
কবিকুল
অভিধাটি
ব্যবহার
করেছিলেন।
তিনি
সম্ভবত
কবি
ডান,
ক্লীভল্যান্ড
ও
কাউলের
কথা
মাথায়
রেখেই
তাদের
সম্বন্ধে
মন্তব্য
করেছিলেন;
‘অনেক
বিসদৃশ
ভাবনাকেই
তাঁরা
জোরপূর্বক
সদৃশ
করেছিলেন।
তাঁরা
জোরপূর্বক
ভাবগুলোকে
জুড়ে
দিয়েছিলেন
কিন্তু
তাদেরকে
ঐক্যবদ্ধ
করতে
পারেননি,
আর
এ
রকম
অপব্যবহারকে
আমরা
যদি
রচনা
শৈলি
মনে
করি
তাহলে
ক্লীভল্যান্ডের
অনেক
কবিতায়
আমরা
জনসনের
মন্তব্যের
যথার্থতা
দেখতে
পাব।
কিন্তু
আপাত
সংযোগবিহীন
বহু
ভাবনাকে
কবি
মন
ঐক্যবদ্ধ
করে
তাকে
একটি
পূর্ণাঙ্গ
রূপ
দেয়—এটাই
কবি
ও
কবিতার
বৈশিষ্ট্য।
উদাহরণ
দেখাবার
জন্য
আমাদেরকে
বদলেয়ারের
এই
লাইনটির
উদ্ধৃতি
দিতে
হয়
না:
‘আমাদের
চেতনা
‘আইকেরির
সন্ধানে
তিন
মাস্তুলের
জাহাজ
যেন;
(‘আইকেরি’ বলতে
এমন
এক
কাল্পনিক
স্থানকে
বুঝানো
হয়েছে
যার
অস্তিত্ব
বাস্তবে
নেই)।
জনসনের
নিজের
কবিতায়ও
আমরা
এরকম
কিছু
লাইন
খুঁজে
পেতে
পারি
যেমন
‘দি
ভ্যানিটি
অব
উইশেজ’:
তার
ভাগ্য
আবদ্ধ
ছিল
কোনো
এক
নিষ্ফলা
তীরে,
যেন
এক
ক্ষুদ্র
দুর্গ,
যেন
কোনো
সন্দিগ্ধ
হাত
বেঁধে
রাখে
তারে;
এমনি
এক
নাম
রেখে
গেলো
পৃথিবীকে
চমকিত
করে,
নৈতিকতায়
এমন
উজ্জ্বল,
কোনো
গল্পে
যুক্ত
হতে
পারে,
এখানে
স্যামুয়েল
জনসনের
সাফল্য
হচ্ছে;
ভিন্নমুখী
ভাবকে
তিনি
একই
উদ্দেশ্যে
ভিন্ন
মাত্রায়
ব্যবহার
করেছেন
অথচ
ম্যাটাফিজিকাল
কবিদের
ঠিক
একই
প্রয়োগকে
তিনি
মৃদু
সমালোচনা
করেছেন।
এ
যুগের
শ্রেষ্ঠতম
(অন্য
কোনো
যুগে
এরকম
একটি
কবিতা
লেখা
সম্ভব
ছিল
না)
একটি
কবিতা,
বিশপ
কিংয়ের
‘Exequy কবিতায় প্রসারিত
উপমা
উৎকৃষ্ট
দক্ষতায়
ব্যবহার
করা
হয়:
ভাব
ও
উপমা
এক
হয়ে
যায়;
যেখানে
কবি
বিশপ
কিং
একটি
ভ্রমণের
রূপকে
তার
মৃত
স্ত্রীকে
দেখবার
জন্য
ব্যাকুল
হয়ে
উঠেন:
সেখানেই
থেকো
আমার
জন্য;
আমি
আসব
নিশ্চয়
তোমাকে
দেখতে,
সেই
আঁধার
উপত্যকায়।
অকারণ
ভেবো
না
আমার
বিলম্ব
দেখে;
আমি
এখন
যাত্রাপথে,
তোমার
কাছে
আসব
সবেগে
সকল
বাধা
পেরিয়ে,
প্রবল
আবেগে।
অনুপল
ক্ষুদ্র
অতি
প্রতি
দণ্ডে
তোমার
নিকটবর্তী।
বিশ্রামে
যাই
যখন
প্রতি
রাতে
জীবন
প্রান্তে
পৌছি
প্রতি
প্রভাতে:
প্রতি
রাতের
স্নিগ্ধ
নিদ্রায়
...
জীবন-দৈর্ঘ্য
শেষ
হয়ে
যায়,
ধমনীর
মৃদু
ধ্বনি
আমার
বলে
যায়
বার
বার,
কাছেই
এসে
গেছি
তোমার;
যাত্রা
আমার
হয়
হোক
ধীর
অবশেষে,
তোমার
পাশে
বসে
হবো
স্থির।
(কবিতাটির
শেষ
ক’টি
চরণ,
বিশপ
কিংয়ের
অনেক
ভক্তের
একজন
এডগার
এ্যালোন
পো’কে
ভীষণভাবে
প্রভাবিত
করেছিল।
আমরা
লর্ড
হার্বার্টের
[লর্ড
হার্বার্ট
: অব
চেরবারী
(১৫৮৩-১৬৪৮)] গীতি কবিতা
থেকে
স্বচ্ছন্দে
কটি
স্তবক
উদ্ধৃত
করতে
পারি
যা
ম্যাটাফিজিকাল
কবিদের
যথার্থ
প্রতিনিধিত্ব
করে:
অতএব,
এ
ভুবন
ছেড়ে
যখন
চলে
যাব,
কেউ
রবে
না,
না
তুমি,
না
আমি,
এ
দু’জনের
মাঝে
রহস্য
আসবে
নামি
দু’জনে
এক
হবো,
দুজনেই
এক
হয়ে
রব।
এটুকু
বলে,
মুখটি
উঁচু
করে
সে
দুটি
চোখে,
যে
দুটি
চোখ
তার
আকর্ষণ
আকাশের
তারার
যেন
মাটিতে
পতন
ফিরে
শেষে
নিজ
কক্ষ
পরে।
এমনি
যখন
অটল
নীরব
শান্তি
বাঁধে
তাদের
নীরব
চেতনা
তাতে
পেতে
পারে
কেউ
কোনো
প্রেরণা
তাদের
অনুভবে
দেখে
অস্থির
অশান্তি।
(ওড
আপন
এ
কোয়েশ্চান
মুভড,
হোয়েদার
লাভ
এ্যড
কন্টিনিউ
ফর
এভার
--হার্বার্ট)
এই
লাইন
কটিতে
উল্লেখযোগ্য
তেমন
কিছুই
নেই
(শুধু
মাত্র
চোখের
সঙ্গত
চমৎকার
উপমাটি
ছাড়া);
স্যামুয়েল
জনসন,
কবি
কাউলের
উপর
রচিত
তার
প্রবন্ধে
প্রায়
এরকমই
মন্তব্য
করেন।
ভাবনা
সংযোগ
স্থাপনে
(association of ideas) ধার করা
‘becalmed’ শব্দটির ব্যবহারে
যথাযথ,
কিন্তু
সবকটি
স্তবকে
প্রকাশিত
অর্থ
বেশ
স্পষ্ট,
সরল
ভাষার
ব্যবহারেও
আছে
চমৎকারিত্ব।
লক্ষ্যণীয়
যে,
ম্যাটাফিজিকাল
কবিকুলের
ব্যবহৃত
ভাষা
প্রথাগতভাবেই
সরল
ও
নির্ভেজাল।
বিশেষ
করে,
জর্জ
হার্বার্টের
সরল
ভাষার
ব্যবহার
তাঁর
কবিতাকে
এমন
উচ্চাসনে
নিয়ে
যায়—যা
অনেক
আধুনিক
কবিও
করে
দেখাতে
ব্যর্থ।
অনেক
সময়,
ম্যাটাফিজিকাল
কবিদের
বাক্য
গঠন;
খুবই
সহজ
ও
সরল
ধরনের;
কিন্তু
এমন
বাক্য
গঠনে
কেউ
ত্রুটি
ধরবে
না,
কারণ
বাক্য
সগঠনের
চেয়ে
তারা
চিন্তা
ও
ভাব
প্রকাশে
ছিলেন
বেশি
বিশ্বস্ত।
বলা
যায়,
তাদের
ভাষা
এতই
অকৃত্রিম
ছিল
যে,
টমাস
গ্রের
কোনো
গীতি
কবিতার
ভাষাও
এত
অকৃত্রিম
ছিল
না।
তাঁদের
ভাবে
শুধু
বিশ্বস্ততাই
ছিল
না,
বৈচিত্রও
ছিল;
ভাবে
ও
সুর
ধ্বনিতে
সন্দেহ
হয়;
সারা
অষ্টাদশ
শতকে
একই
মিটারে
রচিত
হয়েও
এত
অসম
গঠন
আর
কোনো
দুটি
কবিতায়
পাওয়া
যাবে
কিনা,
যেমন
পাওয়া
যাবে
মার্ভেলের
‘coy Mistress’ ও ক্র্যাশো’র
‘Saint Teresa', কবিতা দুটিতে।
একটিতে
হ্রস্ব
শব্দাংশ
ব্যবহার
করে
গতি
আনা
হয়েছে,
অন্যটিতে
দীর্ঘ
শব্দাংশ
ব্যবহার
করে
একটা
অপার্থিব
ধীর,
গাম্ভীর্য
আনা
হয়েছে:
প্রিয়, তুমিই একাধিশ্বর
জীবন ও মরণের।
(এ হাইম
টু দি নেইম
অ্যান্ড অনার অব
দি এডমির্যাবল সেইন্ট
তেরেসা’—শ। লাইন:
১-২)
যদি স্যামুয়েল জনসনের
মতো একজন দক্ষ
ও অনুভূতিপ্রবণ (যদিও
সীমিত অর্থে) সমালোচক,
ম্যাটাফিজিকাল কবিতার ত্রুটির
দিকটা নিয়েই তাকে
সংজ্ঞায়িত করেন,
তাহলে বিপরীত পদ্ধতি
অনুসরণ করে আমরা
সফল হতে পারি
কিনা তা ভেবে
দেখা দরকার। অর্থাৎ
আমরা যদি এমন
ধরে নিই যে,
সপ্তদশ শতকের (বিপ্লবের
পূর্ব পর্যন্ত) কবিরা
ছিলেন তাঁদের পূর্ববর্তী
শতকের প্রত্যক্ষ ও
স্বাভাবিক ধারা অনুসারী
এবং তাদেরকে ‘ম্যাটাফিজিকাল’
বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত
না করে,
তাদের কবিতায় স্থায়ী
কোনো আবেদন ছিল
কিনা তা যদি
মূল্যায়ন করি,
তাহলে দেখব;
তাঁদের কবিতার কিছু
স্থায়ী আবেদন ছিল,
যা পরে অবমূল্যায়িত
হয়, অবশ্য
সে অবমূল্যায়নটি না
হওয়াটাই উচিত ছিল।
ঘটনাক্রমে, ড.
জনসন ম্যাটাফিজিকাল কবিদের
একটা ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্যেই
প্রাধান্য দিয়ে মন্তব্য
করেছেন, “তাঁদের
কাব্য প্রচেষ্টা ছিল
বিশ্লেষণাত্মক”; কিন্তু তিনি
এটা লক্ষ করেননি;
বিশ্লেষণের পর ম্যাটাফিজিকাল
কবিরা, সেই বিস্তৃত
বিশ্লেষণকে আবার একটি
নতুন ঐক্যে সংগঠিত
করে নতুন রূপ
দেন।
শেষ এলিযাবেথীয় ও
প্রথম জ্যাকবীয় কাব্য
নাট্যকাররা, তাঁদের কাব্য
নাট্যে যে নতুনত্ব
যোগ করেন,তা অনেক
ভালো গদ্যেও খুঁজে
পাওয়া ভার। আমরা
যদি অসাধারণ পণ্ডিত
মার্লোকে বাদ দিই,
তাহলে বলা যায়
এসব নাট্যকাররা প্রত্যক্ষ
বা পরোক্ষভাবে (ধরে
নেয়া যায়)
মতেঁইর প্রভাবে প্রভাবিত।
এমনকি, আমরা যদি
অত্যন্ত পণ্ডিত বেনজনসন
ও চ্যাপম্যানকে বাদ
দিই, যাঁরা
তাঁদের জ্ঞানকে চেতনায়
সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন দক্ষতায়:
যাদের চেতনা, প্রত্যক্ষভাবে
তাদের বিপুল পঠন
ও চিন্তায় সমৃদ্ধ
করেছিলেন। বিশেষ করে
চ্যাপম্যানের মধ্যে আমরা
এমন একটা বৈশিষ্ট্য
লক্ষ করি:
তিনি তাঁর চিন্তাকে
ইন্দ্রিয় চেতনার সাথে
সংযুক্ত করতে পারতেন
এবং চিন্তাকে অনুভূতিতে
প্রকাশ করতে পারতেন,
যার পরিশীলিত প্রকাশ
আমরা জন ডানের
মধ্যে দেখি:
এই একটিতেই সব
শৃঙ্খলা
শিষ্ঠতার, মনুষ্যত্বের;
ব্যক্তির সংযোগে বিশ্বের
সাথে
জীবনের মূল ধারায়,
এবং সব কিছুর
সাথে মিশতে
একাত্ম হতে বিরাটত্বে,
এবং চলতে একই
আবর্তে
বিচ্ছিন্ন হয়ে,
নিঃস্ব হতে নয়।
কোনো দ্বীপে বা
কোনো শূন্যতায় হারাতে
নয়
সারা বিশ্ব ভাবতে
একে হয়তো ।
যার এক ক্ষুদ্র
অংশ হয়তো সে;
কিন্তু তাকেই ভাববে
প্রয়োজন বড়ো যে।
('দি রিভেঞ্জ
অব বুসি ডি
এম্বয়িজ IV, জন ডান।
লাইন: ১৩৭-১৪৫)
এ লাইন কটিকে
যদি আধুনিক কটি
লাইনের সাথে তুলনা
করা যায়:
না, যখন অন্তর্দ্বন্দ্ব
শুরু হয় তার
মাঝে
তখনই মানুষ হয়ে
উঠে যোগ্য মানুষ।
ঈশ্বর নেমে আসে
তার শিরে,
শয়তান তাকায় দুপায়ের
ফাকে তার টানে
দু’দিকে—
রয়ে যায় সে,তারই মাঝে;
চেতনা জাগে এবং
বাড়ে।
আজীবন দীর্ঘায়িত আত্মদ্বন্দ্ব
জীবনব্যাপী তার!
('বিশপ ব্লোগ্রামস
এ্যাপোলোজি’-রবার্ট ব্রাউনিং।
লাইন: ৬৯৩-৬৯৭)
সম্ভবত, দুই কবির
সঙ্গে তুলনা করা
শোভন হবে না,
যদিও তুলনার প্রাসঙ্গিকতা
আছে (যেহেতু
দুই কবিই সন্তানদের
মধ্যে ভালোবাসায় জীবনের
স্থায়িত্ব খোজেন): এই
লাইন কটিকে কবি
হার্বার্টের উদ্ধৃত গীতি
কবিতার সঙ্গে তুলনা
করা বা টেনিসনের
নিম্নে উদ্ধৃত কবিতার
সঙ্গে তুলনা করা
সঠিক হবে না
যদিও:
পরিমিত স্থির পায়ে
কেউ যদি হাঁটে,
তার স্ত্রী ও
সন্তানের মাঝে পরিপাটে,
কখনো যদি তার
ঠোটে হাসি ফোটে।
তার অস্তিত্বের অংশীদার
বিশ্বাসে, ভালোবাসায় এলিয়ে
পড়ে দেহে তার,
নারী এক গোলাপি
আভার।
দু’জনের
ভালোবাসায়, নিশ্চিন্তে যায়,
কিশোরী এক নিশ্চিন্ত
পায়,
যেতে যেতে স্নিগ্ধ
চোখে নীচে তাকায়।
তিনজনের এই মিলন
কুঞ্জে মধুর,
ক্ষণিকের ভোলামনে তোলে
নতুন সুর,
চলে আসছে ধারা
এই, সেই
অতীত সুদূর।
টু ভয়েসেজ’---লর্ড
টেনিসন। লাইন:
৪১২-৪২৩)
উপরে বর্ণিত ডান,
হার্বার্ট ও টেনিসন
এই তিন কবির
একই বিষয়ের প্রকাশভঙ্গি
শুধু মাত্রার সামান্যতা
নয়। বিষয়টি ডান,
লর্ড হার্বার্ট অব
চেরবারী, টেনিসন, ব্রাউনিং
সব কবির সময়
কালেই বিরাজমান ছিল;
কিন্তু পার্থক্যটা সেখানে
নয়, পার্থক্যটা
হচ্ছে, বুদ্ধিবৃত্তি প্রধান
কবি ও চিন্তা
প্রধান কবির মধ্যে।
টেনিসন আর ব্রাউনিং
চিন্তাশীল কবি;
কিন্তু তাঁরা তাঁদের
চিন্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গোলাপের
সুবাসের মতো অনুভব
করেননি। ডানের চিন্তা
ছিল অভিজ্ঞতার ফসল;
অভিজ্ঞতাই তাঁর চেতনাকে
সমৃদ্ধ করত। কবি
মন যখন কাব্য
রচনার জন্য সম্পূর্ণ
প্রস্তুত হয়;
কবি মনে তখন
আপাত সামঞ্জস্যহীন বহু
ভাবনা ক্রিয়াশীল থাকে:
সাধারণ মানুষের কাছে
তা অর্থহীন, গোলমেলে
ও খণ্ডিত মনে
হবে। কবি হয়তো
প্রেমে পড়েছেন, বা
দার্শনিক স্পিনোজার কোনো
রচনা পাঠ করেছেন
বা টাইপরাইটারের শব্দ
শুনেছেন বা কোনো
কিছু রান্নার সুঘ্রাণ
পেয়েছেন: আপাত সংযোগহীন
এ ভাবনাগুলোকে (প্রেম,
স্পিনোজা, টাইপ রাইটারের
শব্দ, রান্নার ঘ্রাণ)
কবি সুসংগঠিত করে
তার একটি সমন্বিত
রূপ দেন।
এ বিষয়টিকে আমরা
এভাবেও ব্যাখ্যা করতে
পারি: ষোড়শ শতকের
নাট্যকারদের উত্তরসূরি সপ্তদশ
শতকের কবিদের চেতনাগত
এমন একটি কৌশল
ছিল যে,
তাঁরা যে কোনো
রকম অভিজ্ঞতাকে আত্মস্থ
করে নিতে পারতেন।
সে অভিজ্ঞতাগুলো ছিল,
সাধারণ কৃত্রিম, জটিল,
বা অদ্ভুতভাবে কাল্পনিক।
তাদের পূর্বসূরিদেরও ছিল;
দান্তে, গুইডো, ক্যাভেলেন্টে,
গুইনি সেলী বা
সিনোর চেয়ে কম
বা বেশি ছিল
না। সপ্তদশ শতকে,
চেতনা-বহুমুখিতা (dissociation of sensibility) স্থায়িত্ব পায়,
তখন থেকেই এর
যাত্রা অব্যাহত; আর
এই চেতনা-বহুমুখিতা
সপ্তদশ শতকের প্রভাবশালী
দু’জন
কবি; মিল্টন
ও ড্রাইডেনের প্রভাবে
আরো প্রভাবিত হয়।
এঁরা সকলেই চেতনা
বহুমুখিতাকে এমন দক্ষতায়
ব্যবহার করেছিলেন যে,
তাঁদের ব্যক্তিত্ব ও
চেতনা বহুমুখিতা পরস্পরকে
আড়াল করেছিল। ভাষার
প্রভূত উন্নতি সাধিত
হয়েছিল; কলিন্স, গ্রে,
জনসন এমনকি গোল্ডস্মীথের
অনেক কবিতার ভাষা
অনেকাংশেই ডান,
মার্ভেল ও কিংয়ের
চেয়ে আমাদের দাবি
অনেক বেশি পূরণ
করে। কিন্তু ভাষা
যত বেশি পরিশীলিত
হতে থাকে অনুভূতি
তত বেশি অপরিশোধিত
হয়ে পড়ে। যে
অনুভূতি, যে চেতনা
‘এলিজি রিটেন ইন
এ কান্ট্রি চার্চইয়ার্ডে’, প্রকাশিত
(টেনিসন, ব্রাউনিংয়ের কথা
না বলাই ভালো)
তা মার্ভেলের ‘কয়
মিসট্রেস’ এর তুলনায়
অনেক অপরিশোধিত।
মিল্টন ও ড্রাইডেনের
প্রভাবটি আসে প্রথম
প্রভাবের পর এবং
তা ক্রিয়াশীল হয়
খুব ধীরে। অষ্টাদশ
শতকে ‘সেন্টিমেন্টাল যুগের
সূচনা হয় এবং
তা চলতে থাকে।
কবিরা অষ্টাদশ শতকের
অতিযৌক্তিক ও অতিবর্ণনাত্মক
কাব্য বিরোধী হয়ে
উঠেন, তারা ভাবাক্রান্ত
হয়ে পড়েন, কল্পনা
প্রধান হয়ে পড়েন।
তথাপিও, শেলীর ‘ট্রায়াম্প অব লাইফ’ কাব্যের দু’একটি স্তবকে
ও কীটসের ‘হাইপেরীয়নে’
চেতনার ঐক্য সাধন
প্রচেষ্টা লক্ষ্যণীয়। কিন্তু
কীটস ও শেলীর
অকাল মৃত্যু হলো
আর টেনিসন,
ব্রাউনিং অতীত রোমন্থন
করেই গেলেন শুধু।
এটুকু সংক্ষিপ্ত তাত্ত্বিক
আলোচনার -- যুক্তি
প্রতিষ্ঠিত করার জন্য
যথেষ্ট দীর্ঘ নয়--পর
আমরা সম্ভবত প্রশ্ন
তুলতে পারি,
‘ম্যাটাফিজিকাল’
কবিদের ভাগ্যে কী
ঘটত যদি তাঁদের
কাব্যধারা অব্যাহত থাকত,
যেমন অব্যাহতভাবে তাদের
পূর্ববর্তী যুগের কাব্যধারা
তারা উত্তরাধিকার সূত্রে
লাভ করে?
নিশ্চয়ই তাদেরকে ‘ম্যাটাফিজিকাল’ বলে চিহ্নিত
করা হতো না।
কবির আগ্রহের এলাকার
কোনো সীমা নেই;
কবি যত বুদ্ধিদীপ্ত
হন ততই মঙ্গল;
কবির আগ্রহ তার
বুদ্ধিমত্তার উপরই নির্ভর
করবে, তার বুদ্ধি
যত বেশি হবে,
তার আগ্রহও তত
বাড়বে: আমাদের শর্ত
একটাই, কবি তার
আগ্রহের বিষয়কে নিয়ে
শুধু ধ্যানস্থই থাকবে
না, তাকে
কবিতায় রূপান্তরিত করবে।
একটা দার্শনিক তত্ত্ব
কোন কবিতায় প্রতিষ্ঠিত
হতে পারে,
এর সত্যাসত্য কবির
প্রধান বিবেচ্য না
হলেও, তার মূল
সত্য প্রমাণিত হয়েই
যায়। ম্যাটাফিজিকাল কবিদেরও
অন্যান্য কবিদের মতো
অনেক ত্রুটি আছে।
কিন্তু তাঁদের স্বাতন্ত্র
এখানেই যে,
তাঁরা মনের অবস্থা
বৈচিত্র্যের যথোপযুক্ত শাব্দিক
রূপ দেবার চেষ্টা
করেছেন। তার অর্থ
দাঁড়ায়; ‘ম্যাটাফিজিকাল’ কবিরা
অনেক পরিণত ও
অনেক উন্নত তাদের
পরবর্তী কবিদের তুলনায়,
যদিও পরবর্তী কবিদের
সাহিত্য-যোগ্যতা যে
কম ছিল,
তা নয়।
কবিদের যে দর্শনে
বা অন্য কোনো
বিষয়ে আগ্রহী হতেই
হবে এমন কোনো
বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা
শুধু এ কথাটাকেই
জোর দিয়ে বলতে
পারি, আমাদের যুগের
কবিদের অবশ্যই ‘জটিল’
হতে হবে। আমাদের
বর্তমান সভ্যতায় অনেক
বৈচিত্র্য ও জটিলতা
আছে এবং এই
বৈচিত্র্য ও জটিলতা
আমাদের পরিশীলিত সূক্ষ্ম
অনুভূতিকেও প্রভাবিত করে।
ফলে, কবিকে
অবশ্যই তীক্ষ অনুভূতিসম্পন্ন
হতে হবে,
আরো বেশি জ্ঞানসম্পন্ন
হতে হবে,
আরো বেশি পরোক্ষ
হতে হবে এবং
প্রয়োজনে ভাষাকে নিজ
অর্থে প্রয়োগ করার
দক্ষতা থাকতে হবে।
(এ বিষয়ে একটা
চূড়ান্ত মত হচ্ছে;
এম, জাঁ
ইপস্টেইনের প্রবন্ধ ‘পয়েজি
ডি’ এয়োজের্ডি
হুই’ প্রত্যেকের
যে প্রবন্ধটির মূল
বক্তব্যের সঙ্গে অবহিত
থাকতে হবে তার
কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।)
জাঁ ইপস্টেইন যা
বলেন তার অর্থ
দাঁড়ায়, অনেকটা ম্যাটাফিজিকাল’
কবিদের ‘conceit’-এর মতো,
তাদের দুর্বোধ্য শব্দ
ব্যবহার ও গুচ্ছশব্দ
ব্যবহারের মতো।
জুলস লাফোর্গ, ট্রিস্টান
কোরবীয়ার তাঁদের অনেক
কবিতায় ম্যাটাফিজিকাল কবিদের
অনেক নিকটবর্তী, অনেক
আধুনিক ইংরেজ কবির
চেয়েও তারা ম্যাটাফিজিকাল
কবিদের নিকটবর্তী ছিলেন।
তাঁদের তুলনায় অনেক
ক্লাসিকালপন্থি কবিদেরও; ভাবকে
চেতনায় রূপায়িত করার
এবং কোনো পর্যবেক্ষণকে
চেতনায় ধারণ করার
ক্ষমতা ছিল।
সপ্তদশ শতকে ফরাসি
সাহিত্যের গুরু—রেসিন—এবং
উনবিংশ শতকের গুরু—
বদলেয়ার দু’জনে ছিলেন
একে অপরের সাথে
তুলনীয় অন্য কারো
সাথে তাদের তুলনা
চলত না। শব্দ
চয়ন, মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণে,
মনের গভীরতম অনুভব
বিশ্লেষণেও তারা ছিলেন
শ্রেষ্ঠতম। কিন্তু আমাদের
দুর্ভাগ্য যে আমাদের
ভাষার দু’জন শব্দ
শিল্পী, মিল্টন ও
ড্রাইডেন তাঁদের চমৎকার
শব্দ চয়ন সত্ত্বেও
মনোবিশ্লেষণে ছিলেন, লক্ষ্যণীয়ভাবে
উদাসীন। আমাদের সাহিত্য
যদি শুধু মিল্টন
ও ড্রাইডেনের মতো
কবি সৃষ্টি করে
যেত, তাহলে
আমাদের সাহিত্য করুণভাবে
অসমাপ্ত থেকে যেত।
যারা মিল্টন ও
ড্রাইডেনের শব্দ ব্যবহারের
কৃত্রিমতায় আপত্তি তোলেন
তাঁদের পরামর্শ “হৃদ
অনুভবকে গুরুত্ব দিয়ে
লেখা উচিত।” মিল্টন
ও ড্রাইডেন তেমন
গভীর করে হৃদয়ানুভব
প্রকাশ করেননি। ডান
ও রেসিন মনের
গভীরে পৌছেছিলেন। সমগ্র
স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক প্রক্রিয়া,
ও পরিপাকতন্ত্রকে গভীর করে
অনুভব করতে পেরেছিলেন।
তাহলে উপসংহারে আমরা
কি বলতে পারি
না যে,
ডান, ক্র্যাশো,
ভন, হার্বার্ট
এবং লর্ড হার্বার্ট,
মার্ভেল, কিং এবং
কাউলে এসব কবিদের
কবি কর্মের ত্রুটি
সংশোধন সেই ধারাবাহিকতার
আলোকেই করতে হবে,
যেমন ধারাবাহিকতার ফসল
তারা, কোনোক্রমেই তাঁদেরকে
ঐতিহাসিক প্রবীণ্যের কারণে
অধিক প্রশ্রয় বা
প্রেমাধিক্যে জড়ানো যাবে
না। ‘ম্যাটাফিজিকাল’
‘বুদ্ধিদীপ্ত’ ‘স্থির’ ‘দুর্বোধ্য
নানা অভিধায় তাদেরকে
অভিহিত করা হয়েছে।
এই অভিধাগুলো অনেক
গম্ভীর কবির ক্ষেত্রেই
প্রয়োগ করা হয়েছে।
তারপরও, আমরা ড:
জনসনের মন্তব্যটিও বাতিল
করতে পারি না
কারণ তাঁর সাথে
দ্বিমত পোষণ করা
জটিল ব্যাপার। অতএব,
তার মতকে সম্পূর্ণ
না বুঝে,
তার রুচিবোধ, সমালোচনার
মানদণ্ডকে সম্পূর্ণ না
জেনে কোনো মন্তব্য
করা কঠিন। কাউলের
উপর রচিত ড:
জনসনের বহুলালোচিত প্রবন্ধ
অভিনিবেশে পাঠ করলে
আমরা দেখব,
‘wit’ বলতে আমরা যা
আধুনিককালে বুঝি তারও
চেয়ে গভীর,
গম্ভীর কিছু বুঝিয়েছেন
তিনি। ম্যাটাফিজিকাল কবিদের
কাব্য-রীতির সমালোচনা,
জনসন যেভাবে করেন
তা পড়বার সময়
আমাদের মনে রাখতে
হবে; জনসন
অত্যন্ত কঠিন কাব্য
শৃঙ্খলানুসারী ছিলেন, সে
শৃঙ্খলার অলোকে তিনি
ম্যাটাফিজিকাল কবিদের মধ্যে
কাউলে ও ক্লীভল্যান্ডকেই
প্রধান দোষী সাব্যস্ত
করেন। প্রফেসর গ্রীয়ারসনের
সঙ্কলনটি আরো সফল
হতো, যদি
তিনি ড:
জনসনের ম্যাটাফিজিকাল কবিদের
শ্রেণি বিন্যস্ত করার
ত্রুটিটি সংশোধন করে
দিতেন (এরকম কোনো
সূক্ষ্ম বিচারপূর্ণ পুস্তক
তখনো প্রকাশিত হয়নি)
এবং ম্যাটাফিজিকাল কবিকুলের
প্রত্যেক কবির মধ্যে
রচনারীতির যে সূক্ষ্ম
ব্যবধান আছে তা
বিশ্লেষণ করতেন; ডান
থেকে শুরু করে
অরেলিয়ান টাউনশ্যান্ড পর্যন্ত,
প্রত্যেক কবিকে আলাদাভাবে
তুলে ধরতেন। কিন্তু
প্রফেসর গ্রীয়ারসন তার
অতি উৎকৃষ্ট সঙ্কলনটিতে
অরেলিয়ান টাউনসেন্ডের ‘ডায়ালগ
বিটুইন এ পিলগ্রীম
অ্যান্ড টাইম’
কবিতাটির মতো আরো
কিছু উল্লেখযোগ্য কবিতা
বাদ দিয়েছেন।
টিকাসমূহঃ
#
কবিতাগুলোঃ
Metaphysical Lyrics and Poems of Seventeenth century: Donne to Butler
(1921), Selected and edited with an essay by J.C. Grierson.
#
স্যার
জন
ক্লিফর্ড
গ্রীয়ারসন
(১৮৬৬-১৯৬০)। এবার্ডেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি
সাহিত্যের
প্রথম
অধ্যাপক
(১৮৯৪-১৯১৫)
#
অরেলিয়ান
টাউনসেণ্ড
: (১৫৮৩-১৬৪৮)
রাজা
প্রথম
চার্লসের
প্রিয়পাত্র
ও
রাজানুসারী
ছিলেন
#
লর্ড
হার্বার্ট
অব
চেরবারী
(১৫৮২-১৬৪৮)
কবি,
ঐতিহাসিক
ও
ধর্মতাত্ত্বিক
কবি
জর্জ
হার্বার্টের বড়ো
ভাই
#
জর্জ
এডওয়ার্ড
বেইটম্যান
সেইন্টসবারী
(১৮৪৫-১৯৩৩)
সমালোচক
ও
সাংবাদিক
#
অক্সফোর্ড
বুক
অব
ইংলিম
ভার্স
: আর্থার
কুইলার
কোচ
(১৮৬৩-১৯৪৪)
সম্পাদিত
ইংরেজি
কাব্য
সঙ্কলন
#
বিশপ
কিং
: হেনরী
কিং
(১৫৯২-১৬৬৯)
চিকেস্টারের
বিশপ,
কবি
ডানের
বন্ধু
#
চ্যাপম্যান
: জর্জ
চ্যাপম্যান
(১৫৫৯-১৬৩৪)
কবি,
নাট্যকার
ও
অনুবাদক
#
ম্যাথিউ
প্রায়র
(১৬৬৪-১৭২১)
কবি
# wit:
মার্ভেলের রচনারীতির দিকে
লক্ষ রেখে,
আমরা বলতে পারি
‘wit’ বলতে শুধু পাণ্ডিত্যকে
বুঝায় না;
যদিও ‘wit’ পাণ্ডিত্যে পূর্ণ
থাকে কখনো কখনো,
যেমন দেখা যায়
মিল্টনের অনেক কবিতায়।
wit’ বলতে নৈরাশ্যবাদকে (cynicism') বুঝায় না,
যদিও কোমল মনের
মানুষরা অনেক সময়
তাই বুঝে। ‘wit'-কে
অনেক সময় পাণ্ডিত্যের
সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা
হয়; কারণ
শিক্ষিত ও পণ্ডিত
মানুষই নতুন অভিজ্ঞতা
সৃষ্টি করতে পারে।
আবার ‘wit’-কে নৈরাশ্যবাদের
সঙ্গেও মিলিয়ে ফেলা
হয় কারণ
‘wit’-এর লক্ষ্য হচ্ছে
নিরন্তর সব অভিজ্ঞতাকে
খুঁটিয়ে দেখা। ‘wit’ কবির
সব অভিজ্ঞতা প্রকাশকেই
সম্ভব সব উপায়ে
বিশ্লেষণ করে দেখে,
মার্ভেলের মতো কবিদের
মধ্যেই তার সর্বোচ্চ
রূপ দেখা যায়। (এলিয়টের প্রবন্ধ
Andrew Marvel (192i) দ্রষ্টব্য।)
No comments:
Post a Comment