Literature of Jane Austen Bangla discussion |
Literature of Jane Austen Bangla discussion
জেন অস্টেনের সাহিত্যকর্ম
জেন অস্টেন ৪১ বছর বয়সে ১৮১৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু মাত্র ৬টি সাহিত্যকর্ম (উপন্যাস) দিয়ে তিনি এখনো বেচে রয়েছেন সাহিত্যপ্রেমিকের হৃদয়ে। জেন অস্টেনের
জীবনী ঘাটলে করলে দেখা
যায়
তিনি
কৈশোর বয়স থেকে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত সাহিত্য সাধনায় ব্যাপৃত ছিলেন। তাঁর সব উপন্যাসই বেনামে প্রকাশিত হয়, পরিবারের বাইরের খুব কম মানুষই তাঁর সাহিত্যিক প্রতিভা সম্বন্ধে অবগত ছিলেন। এই বিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষ আজ তাকে চিনতে পারছে।
পিতার মৃত্যুর পর তিনি নিজেদের বাড়ির চিলেকোঠার একটি ঘর গুছিয়ে নিয়েছিলেন। ঐ ঘরে বসেই তিনি তাঁর যাবতীয় লেখালেখি করতেন। একটি মজার তথ্য হলো যে যখনই তার ঘরে তাঁর কোনো আত্মীয় বা বহিরাগত প্রবেশ করত, তার পূর্বে দরজায় করাঘাতের শব্দ হতেই তিনি তাঁর পাণ্ডুলিপিগুলো সরিয়ে ফেলতেন। কৈশোরে পরিবারের সদস্যদের
আনন্দ
দেওয়ার
জন্য
জেন
অস্টেন কবিতা, গল্প এবং হাস্যরসাত্মক গদ্য রচনা প্রণয়ন করতেন। তাঁর প্রথমদিককার একটি উপন্যাসের নাম হলো, “লাভ অ্যান্ড ফ্রেন্ডশিপ”, ১৭৯৫ সালে তিনি আরেকটি উপন্যাস লেখার কাজে হাত দেন যার নামকরণ করেছিলেন, “First Impressions”, পরবর্তীকালে জেন ঐ উপন্যাসটির অনেক পরিমার্জন করেন এবং উপন্যাসটি “প্রাইড অ্যান্ডি প্রিজুডিস” নামে প্রকাশ পায়। তাঁর সেরা ছয়টি গ্রন্থের নাম ও প্রকাশকাল নিম্নরূপ:
সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি (১৮১১)
প্রাইড অ্যান্ড প্রিজুডিস ও (১৮১৩),
ম্যানসফিল্ড পার্ক (১৮১৪)
এমা (১৮১৫)
পারসুয়েশন (১৮১৭/১৮)
নর্থাঙ্গার অ্যাবে (১৮১৭/১৮)।
মৃত্যুর আগে
তিনি
Sanditon নামক আর একটি
বই
রচনায়
হাত দিয়েছিলেন। এই উপন্যাসগুলোর মধ্যে “প্রাইড
অ্যান্ড
প্রিজুডিস”
সর্বাধিক জনপ্রিয়। এখন পর্যন্ত বইটির দুই কোটি
কপির
বেশি
বিক্রয়
হয়েছে
এবং পৃথিবীর অনেকগুলো ভাষায় বইটির অনুবাদ প্রকাশ পেয়েছে। বইটির কাহিনিকে ভিত্তি করে একাধিক নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। “প্রাইড অ্যান্ড
প্রিজুডিস”
উপন্যাসের
প্রধান
বিষয়বস্তু
বিবাহ, দ্বন্দ্ব-কলহ, বিচ্ছেদ, পুনর্মিলন, ভালোবাসা,
অবৈধ প্রেম ও এর অশুভ পরিণতি ইত্যাদি। একই সাথে লেখিকা দেখাতে চেয়েছেন যে অতিরিক্ত অহঙ্কারী হওয়া অথবা কারো সম্বন্ধে পর্যাপ্ত খোজখবর না নিয়ে তার চরিত্র সম্পর্কে মনগড়া সুধারণা অথবা কুধারনা করা অনুচিত। লেখিকার জীবদ্দশায় ইংল্যান্ডের
সামাজিক
ও
রাজনৈতিক
জীবনে ব্যাপক বিবর্তন চলছিল। শিল্পবিপ্লবের ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ডের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ক্রমশ শিল্পনির্ভর হয়ে পড়ছিল। সেই সময়ে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঘটেছিল :
১৭৭৫ - আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু।
১৭৮৩ - ব্রিটেন কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদান।
১৭৮৮ - ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ক্রীতদাস-ব্যবসায় বিলুপ্তির জন্য বিল উত্থাপন।
১৭৮৯ - ফরাসি বিপ্লবের সূচনা।
১৭৯২ - প্রথম নারী-অধিকার সংক্রান্ত রচনা Vindication
of
the Rights of Women প্রকাশিত।
১৭৯৩ - ব্রিটেন, হল্যান্ড এবং স্পেনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের যুদ্ধ ঘোষণা।
১৭৯৮ - অ্যাডমিরাল নেলসনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ নৌবাহিনী ফরাসি নৌবহরকে পরাস্ত করে।
১৮০১ - ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ড একত্রীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কার্যকরীকরণ।
১৮০৩ – ট্রাফালগারের যুদ্ধে নেলসন বাহিনীর কাছে ফ্রান্স ও স্পেনের যৌথ নৌবাহিনীর পরাজয়।
১৮১৪ – বাষ্পচালিত রেলইঞ্জিন চালু।
১৮১৫ - ওয়াটারলুর
যুদ্ধে
নেপোলিয়নের
পরাজয়।
বিস্ময়কর হলেও সত্য যে এসব ঘটনার কোনো প্রভাব অথবা স্পষ্ট উল্লেখ জেন অস্টেনের রচনায় নেই। তাঁর উপন্যাসে ইংলিশ সমাজ জীবনের যে চিত্র তিনি এঁকেছেন তার কথা ভাবলে ইউরোপে যে তখন এত বড়ো আলোড়ন চলছিল সেটা আঁচ করা একেবারেই অসম্ভব। জেন অস্টেনের জগৎ স্বল্প পরিসর। “প্রাইড অ্যান্ড প্রিজুডিস” এর কাহিনি গড়ে উঠেছে কয়েকটি পরিবার নিয়ে। এই ক্ষুদ্র জগৎকে তিনি কিছুটা নির্মোহ দৃষ্টিতেই দেখেছেন। রোমান্টিক যুগের লেখিকা হওয়া সত্ত্বেও ভাবাতিশয্য তার মধ্যে নেই। জনৈক সমালোচক এ প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন তা নিম্নে উদ্ধৃত করলাম:
"Jane Austen's
world is confined to a small section of
society comprising country gentry and lesser aristocracy in England, at the opening
of the nineteenth century.
She portrays truthfully and intelligently the limited world which she knew best. She
also studied the people
in this world with careful observation. Often satirising their behaviour and
attitudes."
প্রকতপক্ষেই
জেন
অস্টেন
চরিত্র
চিত্রণের
ক্ষেত্রে
দক্ষতার
পরিচয় দিয়েছেন। মানুষের যেসব ত্রুটি লেখিকাকে পীড়া দিত, সেগুলোকে নিজের আঁকা কতিপয় চরিত্রের মাধ্যমে তিনি ব্যঙ্গ করেছেন। তিনি কখনই জোনাথন সুইফটের মতো কাউকে তীব্র আক্রমণ করেননি। মৃদু বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতা এবং বক্রোক্তির দক্ষ ব্যবহারে তিনি তাঁর কার্য সিদ্ধি করেছেন। জনৈক সমালোচকের ভাষায়:
"She possessed a
bright wit and a gift for keen but gentle
satire. Imposture and insanity are ready targets in her inexorable irony. Her humour is
brilliant but tempered with
charity. Although
her irony is merciless, it is never vicious.”
“প্রাইড
অ্যান্ড
প্রিজুডিস”
সহ
জেন
অস্টেনের
সকল
উপন্যাসেই নৈতিকতা প্রচারের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এই প্রসঙ্গে Inari
Hossain
তার
A Handbook of English Literature গ্রন্থে যা লিখেছেন তা প্রতিধানযোগ্য হওয়ায় নিচে উল্লেখ করা হলো:
"It is a part of
her moral and ironical attitude to reject sentimentality
and softenss and to extol good sense and principles.
Good health and manners are preferable to good
books and wealth. Marriage should be based on esteem understanding and similar
attitudes rather than on a
grand passion. Passions, on the whole, should be kept firmly under control while vanity and
self-pity are vices to be
purged”.
“প্রাইড
অ্যান্ড
প্রিজুডিস”
উপন্যাসে
লেখিকা
লেডি
ক্যাথেরিন
ডি বার্গকে ব্যঙ্গ করেছেন কারণ ঐ মহিলা সর্বদাই নিজের বংশমর্যাদা ও অর্থের বড়াই করেন। যদিও তিনি নিজের মেয়ের গুণ ও শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ, প্রকৃতপক্ষে তার মেয়ে অসুস্থ ও অন্তর্মুখী স্বভাবের। কলিন্স সাহেবের ধ্যান-জ্ঞানই হলো লেডি ক্যাথেরিন ডি বার্গকে সর্বদা তোষামোদ করা এবং বাগাড়ম্বর পূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা। তাই জেন অস্টেন তাকে নিয়ে পরিহাস করেছেন। তিনি আরো দেখিয়েছেন যে নাক উঁচু স্বভাবের ক্যারোলিন বিংলে ও মিসেস হার্স্ট নিজেদের যতটা বড়ো মনে করে প্রকৃতপক্ষে তারা তেমন নয়। মানুষের ধারণা যে কত দ্রুত গড়ে উঠে আবার সহসাই তা পরিবর্তন হয়—এই ব্যাপার নিয়েও লেখিকা পরোক্ষভাবে ব্যঙ্গ করেছেন। মেরিটনের অধিকাংশ মানুষ একসময় উইকহ্যামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল । সে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে, সে সুদর্শন এবং মিষ্টভাষী ফলে বিবাহযোগ্য কন্যাদের অভিভাবকদের কাছে সে পরমারাধ্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়। ডার্সি একটু অহঙ্কারী ও আত্মকেন্দ্রিক হওয়ায় উইকহ্যাম তার সম্বন্ধে যত গল্প করে সবাই সেগুলো সত্য বলে ধরে নেয়। কিন্তু যখন প্রকাশ হয়ে যায় উইকহ্যামের ব্যাপক ধার-দেনা রয়েছে এবং সে লিডিয়াকে নিয়ে পালিয়েছে, তৎক্ষণাৎ সে সকলের চক্ষুশূল হয়ে যায়। জেন অস্টেনের ভাষায়, “Everybody declared that he was the wickedest young
man in the world
and everybody began to find out, that he was the wickedest young man in the world, and
everybody began to
find out, that they had already distrusted the appearance of his goodness.”
কাজেই আমরা
দেখলাম
জেন
অস্টেন
মানুষের
কপটতা,
দম্ভ
এবং নির্বুদ্ধিতাকে ব্যঙ্গ করেছেন। তিনি আমাদের দেখাতে চেয়েছেন মানুষ
নিজেদের সম্বন্ধে যা ভাবে এবং তাদের প্রকৃত চেহারার মধ্যে বিস্তর
ফারাক রয়েছে। সমাজের প্রত্যেকটা মানুষই যেন একটা ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে রয়েছে। আর তিনি তাঁর নাটকে মানুষের প্রকৃত চেহারা অংকন করার চেষ্টা করেছেন।
No comments:
Post a Comment