Paradise lost - John Milton - Translation in Bengali - Book 1 - Part - 3 |
Previous Part Summary and Analysis - Bangla
Paradise lost - John Milton - Translation in Bengali - Book 1 - Part - 3
সোডম (Sodom) শহরের পথে-ঘাটেও ঠিক
একই অবস্থা বিরাজ করে।
গিবিয়া (Gibeah) শহরের রাজপথে
রাতের আঁধারে মাতালরা
এক রমণীকে
ধর্ষণ করতে এলে
পথের পাশের এক
বাড়ির দরজা খুলে
তাকে বাঁচানো হয়
এমন হযবরল অবস্থা
তখন চলতে ছিল
অঞ্চলের যত্রতত্র
এরপর যারা এসেছিল
তারা সবাই আয়োনিয়ান
দেবকুল (Ionian gods)
যারা ছিল জাভানের
(Javan) সন্তান, ওদের পুরাণ
মতে ইউরেনাস
আর গী হতেই
সব দেবকুল দত্যি
দানব আর পৃথিবীর
উদ্ভব।
ইউরেনাসের ভ্রাতা শনি
আর তার বড়
পুত্র হলো টাইটান
এরপর ওদের থেকে
শক্তিধারী রীয়ার (Rhea) পুত্র
জোভ (Jove) টাইটান আর
শনির নিকট হতে
পুরো স্বর্গের আধিপত্য
ছিনিয়ে নেয়,
এরা প্রথমে ক্রীট
(Crete) ও আইডা
(Ida) সবশেষে তারা রাজত্ব
করতে থাকে
তুষারে আবৃত ছায়াচ্ছন্ন
অলিম্পাস (Olympus) পর্বতের শীর্ষ
দেশে,
এই অলিম্পাস পর্বত
চূড়াই ছিল স্বর্গের
প্রধান স্থান
ডেলফির পাহাড় হতে
ধ্বনিত হতো এ্যাপোলোর
ভবিষ্যদ্বাণী
আর উত্তর গ্রীসের
ডোডনায় (Dodona) শোনা যেত
জিউসের ভবিষ্যদ্বাণী।।
পুরো দক্ষিণ গ্রীস
আদ্রিয়া (Adria) হতে হেসপেরিয়া
(Hesperian) আরো
দূরের দ্বীপগুলোতে
এই সব দেবতাদের
প্রভাব ক্রমেই প্রসারিত
হতে থাকে
শনি অড্রিয়াটিক সাগর
পেরিয়ে ক্রীটে প্রতিষ্ঠিত
করে নিজেকে।
এরপর দেবদূতরূপী অনেক
আত্মা এলো।
ওরা সবাই এলো
মুখ ভার করে
আর মাথা নিচু
করে,
হতাশার আঁধারে তাদের
মন নিমজ্জিত থাকলেও
ওরা
খেয়াল করে দেখতে
পেলো ওদের নেতার
মনে নেই কোন
হতাশা ভার
অমরত্মের এক অপার
মহিমায় উদ্বেলিত সদা
তারাহৃদয়
এটা দর্শন করে
অপার আনন্দে ভরে
উঠল ওদের মন
প্রাণ
ওরা লক্ষ করলো
ওদের নেতা পরাজয়
বরণ করলেও
তার চোখে-মুখে খেলা
করছে অপরাজেয় প্রাণশক্তির
প্রভা
গর্বের সাথে সে
তার পুরো শক্তিমত্তার
লাগাম টেনে ধরে,
আড়ম্বরপূর্ণ ভাষণ দ্বারা
সে তার শক্তির
প্রকাশ ঘটাল
এতে করে তার
শক্তির চেয়ে গর্বের
মত্ততাই বেশী প্রকাশিত
হলো,
তার এই গর্বিত
উক্তি তার অনুসারীদের
মন থেকে ভয়
দূর করে
ওদের মনে আবার
ফিরিয়ে আনলো হারানো
সাহস।
এরপর নেতা ভরাট
কণ্ঠে উচ্চস্বরে ঘোষণা
দিল
যুদ্ধের দামামা বাজানোর
সাথে সাথে পতাকা
উঠবে ঊর্ধ্বে,
আজাজিল (Azazel) নামক শয়তান
হবে তার সেনাপতি
আর পতাকাবাহক
ঘোষণা প্রচারিত হতে
না হতেই উর্ধ্বে
পতাকা তুলে ধরল
আজাজিল,
স্বর্ণ আর মণিমুক্তাখচিত
নানা ধরণের অস্ত্রশস্ত্র
আর
সেই পতাকা উর্ধ্বে
উত্থিত হয়ে ঝলমল
করতে লাগল নক্ষত্রের
মতো
তার সাথে ধাতব
যুদ্ধের দুন্দুভিতে বেজে
উঠল রণবাদ্য
শয়তান সেনাদল বিকট
চিৎকারে করতে থাকল
জয়ধ্বনি,
যে শব্দ আদিম
অন্ধকারে আবৃত নরকেও
প্রতিধ্বনি তুলল
সাথে
সাথে হাজারো রকম
বিচিত্র পতাকা উড়তে
থাকল আকাশে
হাজারো বর্শা, ঢাল,
শিরস্ত্রাণ-চারপাশে সঞ্চালিত
হতে থাকল।
এমনি করে যুদ্ধের
সাজে সজ্জিত হলো
শয়তান দল,
তাদের চোখে মুখে
তখন ছিল রাগের
বদলে বীরত্ব প্রকাশের
দীপ্তি
আর প্রাণপণ সংগ্রাম
দ্বারা জয়ী হওয়ার
কঠিন প্রতিজ্ঞা
পুরো ভীতি,
সংশয় আর নানাবিধ
দুর্ভাবনাকে মন হতে
চিরতরে দূরে ঠেলে
দেয়ার জন্য ছিল
তারা সংকল্পবদ্ধ
দৃঢ়তা সহকারে একই
সংকল্পে ঐক্যবদ্ধ হয়ে
সে বিশাল
শয়তান বাহিনী বর্শা,
ঢাল, শাণিত
অস্ত্রসহ প্রাচীনকালের
যোদ্ধার বেশে সজ্জিত
হয়ে সেই আগুনে
পোড়া মাটিতে দাঁড়িয়ে
ওদের প্রধান নেতার
নিকট হতে আদেশের
অপেক্ষায় প্রতীক্ষা করতে
থাকল
ওদের প্রধান নেতা
তার অভিজ্ঞ আর
সন্ধানী চোখ দ্বারা
সুশৃংখল শয়তান বাহিনীকে
পর্যবেক্ষণ করতে লাগল
দেখল এ বাহিনীর
প্রতিটি সেনার মুখ
দেখতে দেবতাদের মতোই
অগণিত তারা,
এটা দেখে গর্বে
ফুলে উঠল তার
বক্ষদেশ
শক্তিমত্তায়
ভরপুর এক গৌরবভারে
উজ্জ্বল হলো তার
মুখমণ্ডল
পৃথিবীতে আসার পরে
কোন মানুষ এমন
সুশৃংখলভাব দেখেনি কখনো
এমনি করে দক্ষিণ
এশিয়ার ফ্লেগ্রার (Phlegra) দত্যিরা
যুদ্ধ করে দেবতাদের
সাথে
থিবস আর ইলিয়ামে
(Thebes and Ilium) হয়েছিল
যে ভয়াল যুদ্ধ,
সেখানে দেবকুল দু’পক্ষেই যোগ
দিয়ে সহায়তা করেছিল
এভাবেই উথার
(Uther) পুত্র
(রাজা আর্থারও)
ইংরেজ নাইটদের দ্বারা
ইতালীর ক্যালাব্রিয়া, অ্যাসপ্রাস,
দামেস্ক আর মরক্কোতে
যুদ্ধ করেছিল,
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী শার্লেমেনও
সারাসিনদের ফনট্রাবিয়াতে তার
সেনাপতিকে পরাজিত করে।
পৃথিবীর মানবের এসব
সামরিক শক্তির চাইতেও
অধিক শক্তিধর ছিল
দেবদূতরূপী শয়তান বাহিনী
অসাধারণ সামরিক শক্তিধারী
সেই সব শয়তান
যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে
ওদের নেতার নিকট
হতে চূড়ান্ত আদেশ
প্রাপ্তির প্রতীক্ষায় রইল
আকার আর গর্বিত
ভঙ্গিমার দিক হতে
ওদের নেতা ছিল
সর্বশ্রেষ্ঠ,
উঁচু প্রাসাদ চূড়ার
মতোই সে দণ্ডায়মান
ছিল ওদের মাঝে।
স্বর্গচ্যুত দেবদূত হলেও
তারা তাদের দেহের
দেবসুলভ জ্যোতি হারায়নি,
তখন পর্যন্ত একেবারে
উঠে যায়নি তাদের
গৌরব।
কুয়াশাটাকা দিগন্তে উঠা
সূর্য আর গ্রহণ
লাগা চাদের মতোই
ছিল তারা।
স্তিমিত উজ্জ্বল, স্তিমিত
হলেও তার দীপ্তি
ছিল স্বর্গচ্যুত সব
দেবতা হতে উজ্জ্বলতর
যদিও তার মুখমণ্ডলে
ছিল বজ্রাঘাতের এক
গভীর ক্ষতচিহ্ন
আর তার বিষন্ন
মুখমণ্ডলে ছিল উদ্বিগ্নতার
ছায়া,
তবুও তার ভ্রু
দুটোতে ছিল দেখার
মতো এক সাহসিকতার
বিভা,
প্রতিশোধ গ্রহণের এক
দুর্বার বাসনায় গর্বিত
ছিল সে,
তার দু’চোখে কঠিন
সংকল্পের এক নিদারুণ
নিষ্ঠুরতা প্রকাশ পেলেও
তার পক্ষের অনুচরদের
এমন পতনজনিত বেদনায়
সমবেদনা জাগছিল তার
মনে
শুধু মাত্র তারই
অপরাধ হেতু;
বিদ্রোহের কারণে এতগুলো
আত্মা স্বর্গ হতে
চিরকালের জন্য পতিত
হয়েছে নরকের মাঝে
আকাশ হতে ঝরা
রৌদ্রের তাপে পাতা
ঝরা পাইন গাছগুলো
পর্বতের উপরে অরণ্যের
মাঝে পত্র শূন্য
শাখা নিয়ে দাঁড়িয়ে
থাকে
তেমনি গৌরব হারা
হয়েও তার অনুচরেরা
বিশ্বস্ততা সহকারে দাড়ানো
ছিল সামনে
শেষে সে ঐসব
অনুচরদের কিছু বলার
চেষ্টা করল,
অনুচর দল তা
বুঝতে পেরে নীরবে
দাঁড়িয়ে রইল মাথা
নিচু,
তিনবার চেষ্টা করল
সে, কিন্তু
অশ্রু আর কান্নায়
রুদ্ধ হল কণ্ঠ
তার,
শেষে এক গভীর
দীর্ঘশ্বাস সহকারে গলা
হতে স্বর বেরুল
তার
অনুচরদের উদ্দেশ্য করে
বলল সে,
হে মোর আত্মাসকল
একমাত্র মহান শক্তিধর
ঈশ্বর ছাড়া কারো
তুলনা চলে না
তোমাদের
যে যুদ্ধের ভয়ানক
পরিণামে তোমরা এমনতরো
অবর্ণনীয়
ঘৃণ্য এক দুরবস্থার
মাঝে পতিত হয়েছে,
সেটা গৌরবের নয়,
কেউ কি তার
মনের পুরো শক্তি
আর জ্ঞানের গভীরতা
দ্বারা।
বুঝতে সমর্থ হতে
পেরেছিল যে,
স্বর্গের সমস্ত দেবকুল।
আমাদের প্রতি আক্রমণের
কারণে এমন বিপন্ন
হবে?
স্বর্গচ্যুত এই সব
দেবদূতেরা পুনর্বার তাদের
আদি বাসভূমি
স্বর্গলোক নিজেদের শক্তি
খাটিয়ে আর উদ্ধার
করতে পারবে না
এমন কথা তখন
কি আর কেউ
বিশ্বাস করবে?
কে বলবে আমি
বিপদ পার হতে
না পেরে সব
আশা হারিয়েছি?
আজ সে তার
পুরো রাজশক্তি নিয়ে
স্বর্গের সিংহাসনে রাজত্ব
করছে
তার শক্তি সম্পর্কে
আমাদের অজ্ঞতার দিকটিই
আমাদের বিদ্রোহে প্রলুব্ধ
করে ডেকে আনে
ভয়াল পতন
এখন আমরা আমাদের
শক্তি আর তার
শক্তি কতোটা তা
বুঝতে পেরেছি
এবার শুধু আমাদের
একসাথে মিলিত হয়ে
কাজ করে যেতে
হবে
এবার সামরিক শক্তি,
শঠতা, প্রতারণা সব
প্রয়োগ করে
সেই সর্ব শক্তিমান
ঈশ্বরকে পরাজিত করতে
হবে,
তাকে এটাই বোঝাতে
হবে, যারা
শুধুমাত্র গায়ের জোরে
শত্রুদের পরাজিত করে
তারা অর্ধেক শক্তিকে
জয় করে
তারা হতে পারে
না কখনোই পুরো
জয়ী
স্বর্গ, পৃথিবী আর
নরক ছাড়াও মহাশূন্যে
আরো জগতের সৃষ্টি
হতে পারে
আর সেখানে নতুন
মানব গোষ্ঠি স্থাপনের
ইচ্ছে ছিল ঈশ্বরের,
আমরা বসতি গড়বো
তেমনি কোন এক
জগতে, কারণ
আমাদের মতো স্বর্গচ্যুত
দেবদূতেরা কখনোই চিরকাল
নরকের অন্ধকার গভীর
গহ্বরে আটকে থাকতে
পারে না,
অনেক ভেবেচিন্তে এ
ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে
হবে মোদের
নানা অশান্তি আর
হতাশায় আমাদের মন
ডুবে থাকলেও
পরাজয় কিংবা বশ্যতা
মেনে নেয়ার বিষয়টি
ভাবতেই পারি না
মোরা
অতএব, ঘোষিত কিংবা
অঘোষিত যুদ্ধই সমাধান
দিতে পারে এটার
অধিনায়কের ভাষণ সমাপ্ত
হতে না হতেই
বিশাল দেহধারী
সেই সব শয়তানদের
কটিদেশে আবদ্ধ কোষ
হতে অসংখ্য ধারালো
তরবারি মুক্ত হয়ে
উর্ধ্বে উথিত হলো
সে সব তরবারির
অলোকছটায় আলোকিত হলো
নরকের গহ্বর
বজ্রমুষ্ঠিতে চেপে ধরা
কবজি ঢালের সাথে
ঘর্ষণ লাগার প্রকট
শব্দে
স্বর্গলোকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য
যুদ্ধ প্রস্তুতির দিকটি
স্পষ্ট হয়ে উঠল
কিছুটা দূরের পাহাড়
শিখর হতে উদ্গীরিত
হচ্ছিল ধূম আর
অগ্নিশিখা
উজ্জ্বল সব পাথর
দ্বারা মণ্ডিত ছিল
সেই পর্বত গাত্র।
এতে বোঝা যাচ্ছিল
সে পর্বতকন্দরে আছে
বহু জ্বলন্ত ধাতু
যুদ্ধাভিযানকারী রাজার সেনাদল
হতে সর্বাগ্রে আগুয়ান
বাহিনী
যেমন সবার আগে
গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে শিবির
আর পরিখা খনন
করে
তেমনি বিদ্রোহী সেই
শয়তান দল হতে
একদল শয়তান
পাখা মেলে উড়ে
গেল সেই পর্বত
শিখরে, নেতৃত্ব দিল
ম্যামন (Mammon)
ম্যামনের
শীররটা ছিল কুঁজো
আর চোখের দৃষ্টি
সর্বদা নিম্নমুখী
সে যতোদিন স্বর্গে
অবস্থান করেছিল ততোকাল
সে শুধুমাত্র
তার নিম্নমুখী চোখের
দৃষ্টি দ্বারা রাজপথের
শোভা দেখতো, কিন্তু
স্বর্গলোকের আরো উপরের
স্তরের কোন স্বর্গীয়
রূপরাশি দেখতে পেতো
না
এই ম্যামন দ্বারা
প্ররোচিত হয়ে মানবকুল
অপবিত্র হাত দ্বারা
ধনরত্নের লোভে পৃথিবীর
গভীরতর অংশ খুড়ে
নিয়ে আসে স্বর্ণরাজি
এমনি উদ্দেশ্য নিয়েই
তারা ধূমায়িত পর্বত
শিখর জুড়ে
পৃথিবীর গভীরতর নিম্নাংশে
চলে যায়,
আর বেরিয়ে আসে
সে পথেই
তবে নরকে আছে
যে ঐশ্বর্য আর
মাটির তলায় আছে
যে সম্পদ
তার কারণে যেন
কেউ পৃথিবীর প্রশংসায়
না মাতে
কারণ যারা পৃথিবীর
মানবকুলের সম্পদ আর
কৃতিত্ব নিয়ে গর্ব
করে
যারা বেবিলনের শূন্যোদ্যান
আর মিশরের পিরামিড
নিয়ে গর্ব করে
তাদের এটা মনে
রাখা উচিত যে,
মানুষ এক যুগে
হাজারো হাতে
অবিরাম শ্রম দ্বারা
যে গৌরবময় কীর্তি
আর শিল্পকলা গড়ে
বিদ্রোহী আত্মা আর
দেবদূতেরা একদিন তা
বিলীন করে ফেলে
সম্মুখের ঐ প্রান্তরের
অসংখ্য ছিদ্র দ্বারা
পৃথিবীর গর্ভ হতে
বের হচ্ছে অগ্নিশিখা
একটু দূরেই মাটির
তলা হতে যেথায়
বেরুচ্ছে ঐকতানের সুরলহরী
সেথায় আছে অনেক
মূর্তি আর কারুকার্যখচিত
এক স্বর্ণ মন্দির
কারুময় সে মন্দিরের
ছাদ নির্মিত হয়েছে
স্বর্ণের কারুকাজে
মিশর, প্রাচীন কায়রো
কিংবা বেবিলনে রচিত
হয়নি এমন মোহনীয়
মন্দির
এর তুলনা মেলে
না অতীত দিনের
কোন মন্দিরের সাথে,
আকাশে মাথা তুলে
দাঁড়িয়ে আছে এর
স্তম্ভের উঁচু চূড়াগুলো।
মন্দিরের স্বর্ণ নির্মিত
ছাদে নক্ষত্রের মতো
জ্বলে বহু বাতি,
যেন আকাশ হতে
ঝরে পড়ছে অসংখ্য
আলোক শিখা
কতো না হাজার
দর্শক প্রশংসায় মাতে
এ মন্দির দর্শন
করে
এ মন্দিরের সে
স্থপতি সেই গড়ে
তোলে স্বর্গীয় সব
প্রাসাদরাজি
লোকশ্রুতি এই যে,
এ মন্দিরের স্থপতির
নাম নাকি মালসাইবার
(Mulciber),
প্রাচীন গ্রীসেও শোনা
যেতো নাম তার,
বহুল পরিচিত ছিল
সে
তারপরও এই খ্যাতিমান
স্থপতি স্বর্গ হতে
বিতাড়িত হন
ক্ষুব্ধ জোভ স্বর্গের
কিনারায় স্থাপিত এক
দুর্গের সুউচ্চ
চূড়া হতে এই
স্থপতিকে নরকলোকে ছুঁড়ে
দেন
সেটা ছিল গ্রীষ্মের
কোন একটি সময়
সকাল বেলায় স্বর্গ
থেকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার
পরে
সূর্যাস্তের সময় ঈজিয়ান
দ্বীপের (Aegean isle) অন্তর্গত লেমনস
(Lemnos) দ্বীপে
পতিত হয় সে
কিন্তু যারাই এসব
কথা বলে বেড়ায়
তারা ভুল কথা
বলে
আসলে সে স্থপতি
দেবদূতদের সাথেই চিৎ
হয়ে পড়ে যায়
নরক প্রদেশে।
একদা যে স্থপতি
স্বর্গে তৈরি করতে
মনোহর সব সৌধরাজি
নরকে এই সব
তৈরি করার কাজেই
সে পতিত হয়
নরকলোকে
ইতোমধ্যে প্রধান নেতার
আদেশে শয়তানের
রাজধানী প্যাণ্ডিমনিয়ামে (Pandemonium) তার অনুচরেরা
এক সভা আহবান
করল,
একেবারে শিঙা বাজিয়ে
বাজিয়ে ঘোষণা দিল
তার।
প্রত্যেক সেনাবাহিনী হতে
একজন যোগ্য প্রতিনিধি
ডাকল তারা,
আর এতে করেই
হাজার হাজার প্রতিনিধি
জমা হলো সভাস্থলে।
সভামণ্ডপের বিশাল বিশাল
গেটগুলোও ছিল লোকে
লোকারণ্য।
বিশাল হল ঘরটিতে
ছিল না কারো
বিন্দুমাত্র ঠাই নেয়ার
জায়গা,
হলের শুধু মেঝেতেই
নয়, শূন্যেও
বহু দেবদূত ঝুলছিল
তাদের পাখার উপরে
ভর করে।
বসন্ত দিনের মৌমাছিরা
যেমন ভিড় জমায়
ভোর বেলাকার
শিশিরে ভেজা পুষ্পে,
আর গুঞ্জন তোলে
সে সভাতেও প্রতিনিধির সবাই
ভিড় করে।
কলগুঞ্জনে মুখর করে
তুলেছিল সেই সভামণ্ডপ।
ওরা সংখ্যায় ছিল
অগণিত আর অকল্পনীয়
ভিড় করে বসেছিল
ঘন হয়ে।
সে এক অবাক
দৃশ্য, আকারে তারা
পৃথিবীর মানুষদের থেকে
ছিল বিশাল
আকারের
ওরা পিরামিড আকৃতির।
ওদের নিরবয়ব দেহগুলো
ক্ষুদ্র করে নিয়ে
হল ঘরে ঘেঁষাঘেঁষি
করে বসেছিল
ঐসব বিদেহী আত্মা
ইচ্ছে মাফিক শরীর
ছোট কিংবা বড়
করতে পারে।
হাজার অপদেবতা সোনালী সিটে বসেছিল,
ঘন ও পরিপূর্ণ। কিছুক্ষন নিরবতার পর
তলব পড়ে শুনানো হল, তারপর সেই বিশাল পরামর্শ সভা শুরু হল।
Excellent
ReplyDelete