Translation in Bangla
বিয়ে ও কৌমার্যব্রত (১ম প্রকাশ - ১৬১২ সাল)
যার স্ত্রী ও সন্তান আছে সে নিয়তির হাতে জিম্মি, কারণ তারা ভালো হোক আর খারাপ, যেকোনো বৃহৎ কাজের পথেই বড় ধরনের বাধা। বস্তুত জনগণের কল্যান রয়েছে এমন বৃহৎ কাজগুলো সাধারণত অবিবাহিত কিংবা নিঃসন্তান ব্যক্তির দ্বারাই সম্পন্ন হয়; এঁরা প্রাণের টানে এবং মহৎ উদ্দেশ্যে জনতার সাথে যুক্ত হয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। আর যাদের সন্তানসন্ততি রয়েছে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাদের সতর্ক হওয়ার বিশেষ কারণ রয়েছে, কারণ তারা ভালো করেই জানেন যে, পরবর্তীতে ভবিষ্যতের হাতেই তাদের প্রিয় মূল্যবান সম্পদ ছেড়ে যেতে হবে। কেউ কেউ, যাঁরা একাকী জীবন যাপন করেন, নিজেদের সাথে সাথেই তাদের ভাবনাচিন্তার কবর রচনা করেন, আর তাই ভবিষ্যৎকে নেহাত অপ্রাসঙ্গিক মনে করেন। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ আছেন যারা স্ত্রী-সন্তানদের খরচের প্রকরণ হিসেবে বিবেচনা করেন। শুধু তাই নয়, কিছু নির্বোধ লোভী, ধনী আছেন যারা সন্তান না থাকায় গর্ববোধ করেন, কারণ সেক্ষেত্রে তাঁরা নিজেদের অধিক ধনবান মনে করতে পারেন। এঁরা হয়ত কাউকে বলতে শুনে থাকবেন, অমুক খুব ধনী, প্রত্যুত্তরে কেউ হয়ত বলে থাকবে, তাতে কী, ছেলেমেয়ে অনেক, খরচখরচাও তাই বেশি। ভাবখানা যেন এমন, এতে করে সম্পদ কমে যেতে পারে। কিন্তু বিয়ে না করার অতি সাধারণ কারণ হল মুক্ত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা, বিশেষ করে যারা আত্মসুখ অনুসন্ধানী ও বাতিকগ্রস্ত মেজাজমর্জির মানুষ; যেকোনো বন্ধনের ব্যাপারে তাঁরা এতটাই স্পর্শকাতর যে কোমরবন্ধ, মোজাবন্ধনীকেও শৃঙ্খল মনে করেন।
অবিবাহিত ব্যক্তিরা বন্ধু, মনিব ও ভৃত্য হিসেবে সেরা হতে পারে কিন্তু নাগরিক হিসেবে তারা খুব একটা উৎকৃষ্ট নন; কারণ তাঁরা ভারমুক্ত হওয়ার ফলে প্রায়ই পলায়নপর মানসিকতার হয়ে থাকেন এবং সমগ্র পলাতকই এই শ্রেণীভুক্ত। একাকী জীবন ধর্মযাজকের জন্য ভালো, না হলে পরকল্যাণের চেয়ে আত্মকল্যাণ হত প্রথমে। বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের বেলায় বিয়ে করা না করাতে কোনো কিছু যায় আসে না। যদি তারা দুর্নীতিপরায়ণ ও সহজেই প্রভাবিত হন তাহলে স্ত্রী না থাকলেও ভূত্যের মাধ্যমে পাঁচ গুণ বেশি অন্যায় সাধিত হতে পারে। সৈন্যদের বেলায় দেখেছি, সেনাধ্যক্ষরা তাদের প্রাক-লড়াই ভাষণে স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিদের কথা স্মরণ করিয়ে তাদের কর্তব্য-কাজে অনুপ্রাণিত করেন এবং আমার ধারণা, তুর্কি সৈন্যদের মনে বিয়ে সম্পর্কে বিতৃষ্ণা সৃষ্টির ফলে সাধারণ সৈন্যরা আরো বেশি করে নিষ্ঠুর হয়ে উঠত। বস্তুত স্ত্রী ও সন্তানসন্ততিরা মানুষকে অধিক মানবিক হতে শেখায়।
অবিবাহিত মানুষ, যদিও তারা মাঝেমধ্যে পরোপকারী হয়ে ওঠেন, কারণ তাঁদের সম্পদ অঢেল, ফুরায় না, কিন্তু তারা বেশিমাত্রায় নিষ্ঠুর ও কঠিনহৃদয়। (উৎপথগামীদের বিচারকার্য পরিচালনাকারী বিচার) করা নিষ্ঠুর, কারণ তাদের হৃদয়ের কোমলতা প্রকাশের তেমন কোনো অবকাশ হয়নি। গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ সার্বক্ষণিক ঐতিহ্য ও প্রথা অনুশীলনের মাধ্যমে প্রেমময় স্বামীতে পরিণত হন; এ কথা ইউলিসিসের বেলায় বলা হয়ে থাকে। তিনি অমরত্ব ছেড়ে তাঁর বৃদ্ধা স্ত্রীকে বেছে নিয়েছিলেন। সতীসাদ্ধী নারীরা সব সময় গর্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব অনুভব করে সতীত্বকে মহান গুণ মনে করে। স্ত্রী যদি স্বামীকে বুদ্ধিমান মনে করে তাহলে তার সতিত্ব ও আনুগত্য উভয়ের মাঝে বন্ধন তৈরি করতে পারে; কিন্তু তার স্বামী হিংসাপরায়ণ হলে সে কখনোই তার প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত হতে পারে না। পুরুষের জন্য স্ত্রী যৌবনে প্রেমিকা, মাঝবয়সে সঙ্গিনী ও বার্ধক্যে সেবিকা। বিয়ে করার পক্ষে এটা একটা শক্তিশালী যুক্তি। আবার বিয়ে করার সঠিক সময় কোনটি, এ প্রসঙ্গে যিনি (Thalesof Miletus – Philosopher and Mathematician of Old Greece - c. 624 - 546 B.C) বলেছিলেন—যৌবন (শুরু হওয়া মাত্র) বিয়ে করার জন্য প্রকৃষ্ট সময় নয়, আবার বেশি বয়স হয়ে গেলেও বিয়ে করা উচিত নয়—তিনি ছিলেন বিখ্যাত জ্ঞানী ব্যক্তিদের একজন।
এটা প্রায়ই দেখা যায় যে, খারাপ স্বামীদের স্ত্রীরা খুবই ভালো হয়ে থাকে। কারণ যা-ই হোক না কেন, যখন তারা সদয় আচরণ করে, স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের উচ্চ প্রশংসা করে থাকে; কিংবা নিজেরা ধৈর্য ধরে থাকার কারণে গর্ব অনুভব করে। কিন্তু বন্ধু-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শত নিষেধ সত্ত্বেও নিজ পছন্দে যদি কেউ খারাপ বর বেছে নিয়ে থাকে, তখন দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরতে দেখা যায় না, কারণ স্ত্রীটি তখন নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলে।।
Thanks
ReplyDeleteHelpful
ReplyDeleteThanks
ReplyDeleteThank you sir, so fluent translation
ReplyDelete