The Merchant of Venice - William Shakespeare - Summary in Bangla |
The Merchant of Venice - William Shakespeare - Summary in Bangla - Part 1 of 2
চরিত্রসমূহ পরিচিতঃ
অ্যান্টোনিওঃ ভেনিসের একজন সওদাগর ।
ব্যাসানিওঃ অ্যান্টোনিও এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ।
শাইলকঃ ভেনিসের একজন সুদখোর ইহুদি ।
পোর্শিয়াঃ বেলমন্টের একজন ধনী মহিলা ।
জেসিকাঃ শাইলকের মেয়ে ।
লরেঞ্জোঃ ব্যাসানিও এবং অ্যান্টোনিও এর বন্ধু
এবং শাইলকের মেয়ে জেসিকার প্রেমিক ।
গ্রাশিয়ানোঃ বেলমন্টে ব্যাসানিওর বন্ধু । পোর্শিয়ার
সহচরী নেরিসা বিয়ে করেন।
নেরিসাঃ পোর্শিয়ার সহচরী।
স্যালারিনোঃ ব্যাসানিও, লরেঞ্জো এবং অ্যান্টোনিওর
বন্ধু ।
সোলানিওঃ ভেনিসের একজন ভদ্রলোক। স্যালারিনোর
সাথে সবসময় অবস্থান করত।
লউন্সেলট গব্বোঃ ব্যাসানিওর কর্মচারী।
প্রিন্স অভ মরোক্কোঃ কালো গাত্রবর্ণের একজন রাজপুত্র,
যে পোর্শিয়াকে বিয়ে করতে চায়।
প্রিন্স অভ অ্যারাগনঃ সম্ভ্রান্ত বংশের সন্তান।
সেও পোর্শিয়াকে বিয়ে করতে চায়।
ডিউক অভ ভেনিসঃ ভেনিসের শাসনকর্তা এবং এন্টোনিওর
বিচারকার্যের সময়, যিনি পরিচালক ছিলেন।
বৃদ্ধ গব্বোঃ লন্সেলট গব্বোর পিতা।
টুবালঃ ভেনিসীর একজন ইহুদী এবং শাইলকের বন্ধু।
ড. বেলারিওঃ একজন ধনী আইনজীবী ও পোর্শিয়ার আত্মীয়।
বালথাজারঃ পোর্শিয়ার কর্মচারী। পোর্শিয়া তার
ছদ্মবেশ নিয়ে উকিল হিসেবে কোর্টে যায়।
কোন এক সময়ে ইতালির ভেনিসে অ্যান্টোনিও নামে
এক ব্যবসায়ী ছিলেন। দয়ালু এবং উদার লোক হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। লোকের বিপদে আপদে সব
সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত। বন্ধু হিসেবেও সে ছিল বিশ্বস্ত। অ্যান্টোনিওর সবচেয়ে
কাছের বন্ধুর নাম ব্যাসানিও। সুদর্শন যুবকটি উচ্চবংশীয়। তার আবার খরচের হাতটাও বড়।
অ্যান্টোনিওর ওপর অগাধ আস্থা তার। বিশ্বাস রয়েছে, দেনার দায়মুক্ত হতে তাকে সব সময়ই
সাহায্য করবে সওদাগর বন্ধুটি।
ভেনিসে অ্যান্টোনিওর একমাত্র শত্রু হচ্ছে শাইলক।
ইহুদি, সুদের ব্যবসা করে। চড়া সুদে খ্রীষ্টান বণিকদের ধার দেয় সে । ধূর্ত, লোভী এবং
নির্দয় লোক হিসেবে চেনে তাকে লোকে ।
ব্যাসানিও একদিন বন্ধুর কাছে বিশেষ একটি অনুরোধ
নিয়ে এল। ‘বেলমন্টে এক মহিলা আছে,’ বলল সে । ‘পোর্শিয়া নাম। তাকে
বিয়ে করতে চাই আমি । সে যেমনি সুন্দরী তেমনি বড়লোক কিন্তু ভালবাসার কথা তাকে জানাতে
সাহস পাই না। আমার মত গরীবকে সে বিয়ে করবে কেন? অনেক যোগ্য লোক তার পিছে ঘুরঘুর করছে।’
‘অ্যান্টোনিও, এই লোকগুলোর
পাশে অন্তত দাড়াতে তো হবে। জানি সেক্ষেত্রে আমার প্রস্তাবে রাজি হবে ও। আমাকে সাহায্য
করতে হবে, ভাই । তিন হাজার ডুকাট দিতে হবে।’
‘আমার সব টাকা এখন ব্যবসায়
খাটছে, জাহাজগুলোতে,’ জবাব দিল অ্যান্টোনিও। ‘তবু শহরে যাও তুমি।
গিয়ে দেখো, কেউ ধার দেয় কিনা। আমার নামে টাকাটা লিখে রাখতে বলবে। আমিও দেখছি কি করা
যায়। বুঝতে পারছি বেলমন্টে যাওয়ার জন্যে এক পায়ে খাড়া তুমি।’
ব্যাসানিও ধার চাইল গিয়ে শাইলকের কাছে। ব্যাসানিও
যখন বলল তিন হাজার ডুকাট দিলে তিন মাসের ভেতর শোধ করা হবে তখন আইগুই করতে লাগল শাইলক
। তারপর কি ভেবে বলল, ‘অ্যান্টোনিও ভাল লোক’
‘তাতে কারও সন্দেহ আছে?’ রেগে জিজ্ঞেস করল ব্যাসানিও।
‘না, না তা বলছি না।
আসলে বলতে চাইছি ওর ওপর ভরসা রাখা যায়,’ দ্বিধান্বিত শাইলক
বলল। তারপর যোগ করল, ‘অ্যান্টোনিওর টাকা আছে, কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু
সবই ব্যবসায় ঢেলে দিয়েছে। ত্রিপোলি, ইণ্ডিস, মেক্সিকো, ইংল্যাগ্ড সবখানে চলে গেছে তার
জাহাজগুলো। জাহাজের কোন বিশ্বাস নেই। ডুবে যেতে পারে। বোম্বেটেদের খপ্পরে পড়াও অসম্ভব
নয়। তবে এটাও ঠিক, অ্যান্টোনিওকে টাকা ধার দেয়াটা নিরাপদ। বেশ,’ বলল শাইলক । ‘তবে তাকে একটা চুক্তিপত্র
সই করতে বলুন, টাকা আমি দেব।’
বন্ধুর সঙ্গে এল অ্যান্টোনিও । তাকে দেখামাত্রই
ঘৃণায় গা রিরি করে উঠল শাইলকের । এই খ্রীষ্টান বণিক নানাভাবে অপমান করেছে তাকে। সে
সুদ খায় বলে জনসমক্ষে তাকে ‘কুকুর’ বলেছে, গায়ে থুথু দিয়েছে।
বিপদগ্রস্ত মানুষকে বিনা সুদে ধার দেয় অ্যান্টোনিও। ফলে সুদের হার পড়ে গেছে ভেনিসে,
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাইলক। তাছাড়া অ্যান্টোনিও খ্রীষ্টান । ইহুদিরা তার দু’চোখের বিষ। কথাগুলো
মনে পড়তে প্রতিশোধস্পৃহায় জ্বলে উঠল শাইলক। অ্যান্টোনিওকে ফাঁদে ফেলার বুদ্ধি আটল সে।
‘অ্যান্টোনিও,’ বলল শাইলক, ‘আমাকে অনেক গালমন্দ
করেছ তুমি । আমার মক্কেলদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছ। সবই মুখ বুজে সহ্য করেছি। ধৈর্য
হচ্ছে ইহুদিদের অলংকার । এখন তুমি এসেছ আমার কাছে ধার চাইতে । কুকুর কি ধার দিতে পারে?
কুকুরের কাছে তিন হাজার ডুকাট (Ducat) থাকা কি সম্ভব?’
‘আমি তোমার কাছে ধার
চাইতে এসেছি! তুমি আমার শত্রু । কখনোই তোমাকে বন্ধু ভাবতে পারব না। আশ মিটিয়ে আমার
সঙ্গে ব্যবসা করে নাও তুমি । সুদের হার যত ইচ্ছে চড়াও, আমি শোধ কলর দেব,’ একটানা কথাগুলো বলল
অ্যান্টোনিও । রেগে গেছে সে ।
‘এত রাগছ কেন?’ শান্তস্বরে জিজ্ঞেস
করল শাইলক! ‘আমি তোমার সঙ্গে সব মিটমাট করে ফেলতে চাই! সব অপমান ভুলে
যেতে চাই। সেজন্যেই তোমাকে টাকা ধার দেব আমি, এবং বিনা সুদে।’
ব্যাপারটা সন্দেহজনক। কিন্তু খুব একটা খেয়াল
করল না অ্যান্টোনিও। শাইলক তখন মহা ফুর্তিতে বলে চলেছে, ‘একটা মজা করি এসো। চুক্তি
হবে আমাদের। একটি নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ধার শোধ করতে না পারলে শরীর থেকে এক পাউওণ্ড
মাংস হারাবে তুমি । ইচ্ছেমত যে কোন অঙ্গ থেকে মাংসটুকু কেটে নেব আমি।’
‘আমি তাতেই রাজি,’ বলল অ্যান্টোনিও, ‘চুক্তি সই করব, এবং
এটাও স্বীকার করব তোমার মনে দয়ামায়া আছে।’
কিন্তু বেঁকে বসল ব্যাসানিও। ‘আমি তোমাক এমন চুক্তি
করতে দেবো না’ বলল সে। ‘কোন কারণে তোমার জাহাজগুলো
যদি ঠিকমত ফেরত না আসে, তখন? শাইলক তো তোমাকে ছাড়বে না। এক পাউওণ্ড মাংস কেটে নেবে।
তোমার হৃৎপিণ্ড কেটে ফেলবে ও । কারও কিছু করার থাকবে না। না, বন্ধু, আমার জন্যে এতবড়
ঝুঁকি তুমি নিয়ো না।’
বৃথাই অনুরোধ করল ব্যাসানিও । হেসে বন্ধুর ভীতি
দূর করতে চাইল অ্যান্টোনিও।
‘মিছেই ভয় পাচ্ছ তুমি।
ধার শোধ করতে অতদিন লাগবে না। ইশ্বরের ইচ্ছায় হয়তো জাহাজগুলো তার অনেক আগেই পৌছে যাবে,’বলল অ্যান্টোনিও। সানন্দে
চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করল সে ।
পোর্শিয়ার বাবা মৃত্যুর আগে অদ্ভুত এক পরিকল্পনা
করে গেছেন। মেয়েকে তিনটে কৌটো দিয়েছেন তিনি। প্রথমটি সোনা, দ্বিতীয়টি রূপা এবং তৃতীয়টি
সীসার তৈরি।
একটি কৌটোর ভেতর আছে পোর্শিয়ার ছবি। যে পাণি
প্রার্থী প্রথমে আন্দাজ করতে পারবে, কোন কৌটোয় ছবিটি রয়েছে সেই পাবে পোর্শিয়াকে। তবে
আরও একটি শর্ত রয়েছে। সব পাণি প্রার্থীকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, তাদের অনুমানে ভুল
হলে জীবনে তারা আর বিয়ে করবে না।
ব্যাপারটি কঠিন নিঃসন্দেহে। অনেকেই শর্ত শুনে
কেটে পড়েছে, পোর্শিয়ার ধারে কাছেও ঘেষেনি। এবার অনেকেই এসেছেন বেলমন্টে । প্রত্যেকেই
ধনী এবং সুবিখ্যাত। তাদের মধ্যে মরক্কোর রাজকুমার, স্কটল্যাণ্ডের লর্ড, স্পেনের রাজকুমার
সকলেই আছেন। তবে এদের কাউকেই পছন্দ নয় পোর্শিয়ার। এবং এঁরা কেউ সঠিক অনুমানও করতে পারেননি
। প্রথমে চেষ্টা করলেন মরক্কোর রাজকুমার ।
“রূপা আর সীসা সন্তা
জিনিস,” ভাবলেন তিনি। “পোর্শিয়ার ছবি ও দুটোতে
থাকতেই পারে না। আমি সোনার কৌটো খুলব।”
যে ভাবা সেই কাজ। রাজকুমার সোনার কৌটো খুললেন
এবং ঠকলেন। কৌটোর ভেতরে রয়েছে একটি মড়ার খুলির ছবি। তাছাড়া একটি কথাও লেখা রয়েছেঃ “চকচক করলেই সোনা হয়
না।” ভগ্ন হৃদয়ে রাজকুমার
বেলমন্ট ত্যাগ করলেন।
তারপর কৌটো খুললেন স্পেনের রাজকুমার । তার ধারণা
হল পোর্শিয়ার ছবি রূপার কৌটোয় রয়েছে। ওটাই খুললেন তিনি । ভেতরে পেলেন এক ভাড়ের মাথার
ছবি । তিনিও বেলমন্ট ত্যাগ করলেন। হাফ ছেড়ে বাচল পোর্শিয়া। কারণ পাণি প্রার্থীদের মধ্যে
একমাত্র ব্যাসানিওকেই পছন্দ তার। তবে পছন্দ হলে কি হবে, ব্যাসানিওকে ঠিক কৌটো খুলতে
তো হবে । নইলে মনের আশা পূরণের কোন সম্ভাবনাই নেই।
‘কদিন ভেবে নিয়ে তারপর
কৌটো বাছাই কোরো,’ ব্যাসানিওকে উপদেশ দিল পোর্শিয়া। ‘কারণ ভুল যদি করে বসো
তবে তোমাকে চিরতরে হারাব আমি। তোমাকে আসল কৌটোটা চিনিয়ে দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হত।
কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। আমি প্রতিশ্রুতি ভাঙতে পারব না।’
‘আমি এখনই বাছব,’ বলল ব্যাসানিও। ‘নইলে যত অপেক্ষা করব
ততই মানসিক কষ্ট সইতে হবে।’
‘মানসিক কষ্ট?’ প্রশ্ন করল পোর্শিয়া।
‘হ্যা। সর্বক্ষণ ভয় পাই,
ভুল কৌটো বেছে হয়ত পাব না তোমাকে।’
‘বেশ,’ বলল পোর্শিয়া, ‘এখনই বেছে নাও।’তারপর কাজের লোকদের
বলল, ‘সবাইকে পিছিয়ে দাড়াতে
বলো। এখন ব্যাসানিওর পালা । তোমরা বাজনা বাজাও।’
ব্যাসানিও খানিকক্ষণ পর্যবেক্ষণ করল কৌটোগুলোকে।
সোনা আর রূপার কৌটো সরিয়ে রেখে সীসারটা বেছে নিল সে। ওটা খুলতেই: বেরিয়ে পড়ল পোর্শিয়ার
ছবি। জিতে গেছে ব্যাসানিও, পোর্শিয়াও।
হবু দম্পতির আনন্দ ধরে না। মনে মনে আসন্ন বিয়ের
প্রস্তুতি নিতে শুরু করল ওরা
ব্যাসানিওর সঙ্গে বেলমন্টে এসেছে তার এক বন্ধু,
গ্র্যাশিয়ানো। পোর্শিয়ার সহচরী নেরিসাকে মনে ধরে গেছে তার। প্রেম নিবেদনও করেছে। মেয়েটি
জানিয়েছে তার প্রস্তাব গ্রহণ করবে সে, যদি ব্যাসানিও আর পোর্শিয়ার বিয়ে হয়। এখন আর
কোন বাধা রইল না। বিয়েতে সানন্দে মত দিল নেরিসা। সিদ্ধান্ত হল, একই সময় দুটি বিয়ে অনুষ্ঠিত
হবে।
ওদিকে ভানিসে শাইলকের মেয়ে জেসিকা বাড়ি
ছেড়ে পালিয়েছে।
সে ভালবাসে লরেঞ্জো নামে এক যুবককে, তাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু বাধা দিয়েছে শাইলক।
লরেঞ্জোকে অপছন্দ তার । কারণ, লরেঞ্জো খ্রীষ্টান এবং অ্যান্টোনিওর বন্ধু । একরাতে টাকাপয়সা
আর গয়নাগাটি নিয়ে বাড়ি ছাড়ল জেসিকা। পালিয়ে গেল লরেঞ্জোর সঙ্গে। ভেনিস ত্যাগ করল ওরা,
বিয়ে করার মানসে। মহাখাপ্পা হল শাইলক । মেয়ের চেয়েও তার বেশি কষ্ট হচ্ছে টাকা আর গয়নার
জন্যে । ‘যাবি তো যা,’ ভাবল সে, ‘আমাকে পথে বসিয়ে গেলি
কি জন্যে?’ লরেঞ্জো অ্যান্টোনিওর বন্ধু । সেহেতু তার খ্রীষ্টান শত্রুর
প্রতি বিদ্বেষ আরও বাড়ল শাইলকের অ্যান্টোনিওকে দেখে নেবে সে ।
জেসিকা আর লরেঞ্জো ভেনিস ত্যাগের সময় স্যালারিনোর
মুখোমুখি পড়ে গেল। স্যালারিনো অ্যান্টোনিওর বন্ধু। সে একটি চিঠি নিয়ে বেলমন্ট চলেছে।
অ্যান্টোনিও ব্যাসানিওকে চিঠিটি লিখেছে। স্যালারিনো দুজনকে তার সঙ্গে যেতে রাজি করাল।
পোর্শিয়ার বাড়িতে পৌঁছেই স্যালারিনো চিঠিটি তুলে দিল ব্যাসানিওর হাতে।
পোর্শিয়া লক্ষ্য করল চিঠিটি পড়ে ফ্যাকাসে হয়ে
গেছে ব্যাসানিওর মুখ । কারণ জিজ্ঞেস করলে ব্যাসানিও বলল, ‘চরম দুঃসংবাদ আছে। তোমার
কাছে সত্য গোপন করিনি কখনও। জানোই তো আমি গরীব মানুষ। নিজের বলতে কিছুই নেই আমার ।
অ্যান্টোনিওর কাছ থেকে তিন হাজার ডুকাট ধার করেছি আমি । আমার জন্যে টাকাটা এক ইহুদির
কাছ থেকে ধার করেছিল ও। ওর কারণেই এখানে আসতে পেরেছি, তোমার ভালবাসা পেয়েছি।’ চুপ করে শুনল পোর্শিয়া।
সব শুনেও ব্যাসানিওর প্রতি দুর্বলতা এতটুকু কমল না তার।
বলে চলল ব্যাসানিও, ‘অ্যান্টোনিও লিখেছে,
ওর সবগুলো জাহাজ সমুদ্রে হারিয়ে গেছে। পাওনাদাররা টাকার জন্যে চাপাচাপি শুরু করেছে।
তাছাড়া ইহুদি লোকটার সঙ্গে ওর চুক্তিটা তো আছেই । অ্যান্টোনিও মৃত্যুর আগে আমাকে একবার
দেখতে চায়। আমাকে যেতেই হবে।’
শাইলকের সঙ্গে অ্যান্টোনিওর চুক্তিটির পুঙ্খানুপুঙ্খ
বিবরণ শুনল পোর্শিয়া ।
“মাত্র তিন হাজার ডুকাট
ধার নিয়েছে!” বলে উঠল সে। ‘আমাদের বিয়ে হয়ে গেলে
আমার সমস্ত সম্পত্তি তুমি পাচ্ছ। তখন তিন হাজার ডুকাট কেন তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা
তুমি শোধ করতে পারবে। তোমার বন্ধুকে নিয়ে চলে আসতে পারবে আমার এখানে। এত ঘাবড়াচ্ছ কেন?
কিন্তু ব্যাসানিও একবিন্দু স্বস্তি পাচ্ছে না।
সে পোর্শিয়াকে জানাল, টাকা দিয়ে শাইলককে খুশি করা যাবে না।
‘লোকটা কিছুই শুনছে না।
সে চুক্তি মোতাবেক অ্যান্টোনিওর এক পাউন্ড মাংস চায় । ডিউক অভ ভেনি সহ অন্যান্য মান্যগণ্য
লোকেরা অনেক বুঝিয়েছে তাকে, কাজ হয়নি। সে বলেছে, চুক্তি যেহেতু বৈধ সেহেতু ন্যায় বিচার
করতেই হবে।’
পোর্শিয়া বুঝদার মেয়ে। সে ব্যাসানিওকে নিয়ে চলে
গেল গির্জায়, বিয়ে হল তাদের। ওদিকে, গ্র্যাশিয়ানোও বিয়ে করল নেরিসাকে।
ব্যাসানিও এখন বিপুল টাকার মালিক। সে গ্রাশিয়ানোকে
নিয়ে তখুনি ছুটল ভেনিসের পথে । মনে ক্ষীণ আশা, বন্ধুর প্রাণটা হয়ত টাকার জোরে রক্ষা
করতে পারবে।
ব্যাসানিও ভেনিসে পৌছোনর আগেই শুরু হয়ে গেছে
বিচার। ডিউকের অনুরোধ গায়ে মাখেনি শাইলক। ‘আমি ন্যায্য বিচার চাই।
অ্যান্টোনিওকে ঘৃণা করি আমি, কাজেই প্রতিশোধ নেব,’ বলল সে ।
No comments:
Post a Comment