Total Pageviews

Monday, August 26, 2019

The Comedy of Errors - William Shakespeare - Translation and Summary in Bangla - part 1 of 2

The Comedy of Errors - William Shakespeare - Translation and Summary in Bangla


The Comedy of Errors - Characters - Summary - Translation
প্রধান চরিত্রসমূহ
১। সলিনাসঃ ডিউক অভ ইফিসাস।
২। ইজিয়নঃ সাইরাকিউসের সওদাগর । যমজ-দের বাবা। অ্যাব্বিস (এমিলিয়া) এর স্বামী
৩। অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউসঃ এই ভাইটি তার অপর যমজ ভাইকে খুঁজছে। ইজিয়নের সন্তান।
৪। অ্যান্টিফোলাস অভ ইফিসাসঃ স্ত্রী কর্তৃক অপমানিত যমজ ভাই ।
৫। ড্রমিও অভ সাইরাকিউস এবং
৬। ড্রমিও অভ ইফিসাসঃ যমজ দু ভাই। অ্যান্টিফোলাস-দের পরিচারক।
৭। আড্রিয়ানাঃ অ্যান্টিফোলাস অভ ইফিসাস এর স্ত্রী।
৮। লুসিয়ানাঃ আড্রিয়ানার বোন।
৯। এমিলিয়াঃ ইজিয়নের স্ত্রী।
১০। অ্যাঞ্জেলোঃ সাইরাকিউজের একজন স্বর্ণকার।
১১। বালথাজারঃ সাইরাকিউজের একজন বনিক।
১২। দুইজন মার্চেন্ট
১৩। ডক্টর পিঞ্চঃ একজন স্কুল শিক্ষক ও জাদুকর।
১৪। ডিউক মেনাফনঃ ডিউক অভ ইফিসাসের চাচা।
১৫। লিউসঃ ডর্মিও অফ ইফিসাসের স্ত্রী।

বহুদিন আগের কথা । সাইরাকিউস এবং ইফিসাস নামক কাছাকাছি অবস্থিত দুটি রাজ্যের মধ্যে তখন ছিল প্রচণ্ড শত্রুতা। ইফিসাসে আইন জারী করা হয়েছে, সাইরাকিউসের কোন সওদাগরকে যদি শহরে দেখা যায় তবে তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। অবশ্য এক হাজার মার্ক জরিমানা দিতে পারলে মাফ পেয়ে যাবে সে  প্রাচীন ইফিসাস শহরে ডিউকের লোকজনদের হাতে ধরা পড়লেন এক বুড়ো সওদাগর। সওদাগরের নাম ইজিয়নসাইরাকিউস শহর থেকে এসেছেন। ইজিয়ন জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলেন । ফলে তাঁকে নিয়ে আসা হল ডিউকের সামনে, মৃত্যুদণ্ড মাথা পেতে নেয়ার জন্যে ডিউক এ ধরনের কঠোর শাস্তির পক্ষপাতী নন। তাই রায় ঘোষণার আগে ইজিয়নকে জিজ্ঞেস করলেন কেন তিনি ইফিসাসে এসেছেন।
- ছেলেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি, উত্তর দিলেন ইজিয়নসাত বছর আগে ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, আর ফেরেনি। কোন জায়গায় খুঁজতে বাকি রাখিনি । বাদ ছিল কেবল ইফিসাস।
- ও চলে গেল কেন? জানতে চাইলেন ডিউক ।
- যমজ ভাইকে খোজার জন্যেওরা পঁচিশ বছর ধরে কেউ কাউকে দেখেনি
- ব্যাপারটা রহস্যময় কৌতূহলী হলেন ডিউক ।
অনিচ্ছাসন্তেও এই অদ্ভুত গল্পটা বলতে শুরু করলেন ইজিয়ন
পঁচিশ বছর আগে স্ত্রীকে নিয়ে ইপিডামাম শহরে গিয়েছিলেন ইজিয়নসেখানে যমজ সন্তানের জন্ম দেন তার স্ত্রী । দু ভাইয়ের চেহারায় এত মিল যে ওদের আলাদা করে চেনা বড় দুঃসাধ্য ছিল । সেই একই দিনে সরাইখানার মালিকের স্ত্রীরও যমজ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়বাচ্চা দুটোর বাবা ছিল গরীব, সন্তানদের খরচ জোগানর সামর্থ্য ছিল না তার । ফলে ইজিয়ন কিনে নেন যমজ বাচ্চা দুটোকে । ইচ্ছে ছিল বড় করে তুলবেন ওদের, তার বাচ্চাদের সঙ্গী হবে এরা ভবিষ্যতে - এপিডামামে কাজ সেরে পরিবার এবং ক্রয়কৃত যমজদের নিয়ে সাইরাকিউসের পথে রওনা দিলেন ইজিয়নপথে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ল তাঁদের জাহাজ । নাবিকরা বেগতিক দেখে সবাইকে ফেলে পালাল, ছোট নৌকায় চেপে । বাচার তাগিদে ইজিয়ন ছোট একটি মাস্তুলের শেষ প্রান্তে বাধলেন নিজেকে, সঙ্গে রাখলেন দু জোড়ার একটি করে যমজ শিশু। তার স্ত্রী-ও অন্য দুটি বাচ্চাকে নিয়ে নিজেকে বাধলেন মাস্তুলের সঙ্গে । খানিকক্ষণ বাদেই জাহাজটি আঘাত করল একটি পাথরখণ্ডকে । ফলে ভেঙে তলিয়ে যেতেও সময় লাগল না। ইজিয়ন এবং তার স্ত্রী শক্ত হাতে আকড়ে রইলেন মাস্তুল। নাকানি চোবানি, খেতে লাগলেন সাগরের পানিতে । কখন যেন দুজনই সরে গেলেন দুজনের কাছ থেকে। ইজিয়ন স্ত্রীকে সাহায্য করতে পারলেন না। তিনি তখন বাচ্চা দুটিকে বাচাতে ব্যস্ত।
স্ত্রী তখনও ইজিয়নের দৃষ্টিসীমার ভেতরেই আছেন! ইজিয়ন দেখতে পেলেন কজন জেলে উদ্ধার করল তাকে। কিছুক্ষণ বাদে একটি জাহাজ তুলে নিল ইজিয়ন এবং শিশু দুটিকে, পৌছে দিল সাইরাকিউসে হারানো স্ত্রী আর ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার জন্যে সব রকম চেষ্টা করলেন ইজিয়নকিন্তু কোন খোজই পাওয়া গেল না তাদের । শেষমেষ আশা ছেড়ে দিলেন তিনি। নিজেকে উৎসর্গ করলেন ছেলে এবং ক্রীত বাচ্চাটির দেখাশোনার কাজে । দু জোড়া যমজের মধ্যে আলাদা করে ছোট বড় বুঝে উঠতে পারলেন না ইজিয়নধরে নিলেন তার কাছে রয়েছে যমজ জোড়ার ছোট জোড়া  তিনি এদের নাম দিলেন অ্যান্টিফোলাস আর ড্রমিও। ছেলে দুটোর বয়স যখন আঠারো তখন অ্যান্টিফোলাস ঠিক করল ভাইকে খুঁজে বার করবে। তার সঙ্গে একমত হল বিশ্বস্ত সঙ্গী ড্রমিও । ভাইয়ের সন্ধান করবে সে-ও। বেরিয়ে পড়ল দুজনে ।  তারপর পেরিয়ে গেছে সাতটি বছর । ছেলের বিরহে কাতর হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ ইজিয়ন
- তাই ছেলেকে খুঁজতে এখানে এসে পড়েছি! গল্প শেষ করে বললেন ইজিয়ন বৃদ্ধ সওদাগরের জীবন কাহিনী আলোড়িত করল ডিউককে । তাকে হয়ত মাফই করে দিতেন ডিউক যদি না দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেন। যাহোক, একদিনের জন্যে বিচার স্থগিত রাখলেন ডিউকএক হাজার মার্ক জোগাড় করে জীবন বাঁচানর শেষ সুযোগ দিলেন ইজিয়নকে।
ইজিয়ন জানেন না তাঁর দু ছেলেই এ মুহূর্তে ইফিসাসে রয়েছে। কাকতালীয়ভাবে অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউস সেদিনই এসেছে ইফিসাসে, ব্যবসার কাজে । নিজের শহরের এক বৃদ্ধ সওদাগরের বিপদের কথা শুনেছে সে। ফলে নিজেকে এপিডামামের সওদাগর হিসেবে পরিচয় দিল ও । ঘুণাক্ষরেও জানতে পারল না বিপদগ্রস্ত বুড়ো মানুষটি আর কেউ নয়, তারই বাবা!
ওদিকে ইফিসাসে বাস করে অপর যমজ ভাইটি । তার নামও অ্যান্টিফোলাস। ইফিসাসের এক ধনী সওদাগর সে । তেইশ বছর ধরে বাস করছে এখানে । যদি জানত কতবড় বিপদের সম্মুখীন তার বাবা তবে অতি সহজেই সে জরিমানার টাকাটা দিয়ে দিত । কিন্তু বিধি বাম। বাবাকে চেনে না সে, চেনার কথাও নয় উদ্ধারকারী জেলেরা তাকে এবং ক্রীত শিশুটিকে বেচে দেয় ডিউক মেনাফনের কাছে। বিখ্যাত যোদ্ধা তিনি, ডিউক অভ ইফিসাসের চাচা । ডিউক মেনাফন বাচ্চা দুটিকে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন ভাতিজার দরবারে । অ্যান্টিফোলাসকে পছন্দ হয়ে যায় ডিউক অভ ইফিসাসের । তাকে দরবারে রেখে দেন তিনি । অ্যান্টিফোলাস সাহসী সৈনিক অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করেছে সে। যুদ্ধের সময় জীবন বাঁচিয়েছে ডিউকের । সন্তুষ্ট ডিউক তার বিয়ে দিয়েছেন ইফিসাসের এক ধনী মহিলার সঙ্গে । নাম তার অ্যাড্রিয়ানা।
অ্যান্টিফোলাস এখন অ্যাড্রিয়ানা এবং তার বোন লুসিয়ানার সঙ্গে বাস করে ফিনিক্স নামের এক সুদৃশ্য দালানে। অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউস সওদাগরি করে। তবে গৃহত্যাগের প্রধান কারণটার কথা ভোলেনি সে । ভাইকে খুজে চলেছে হন্যে হয়ে- ইফিসাসে পৌছে সার্বক্ষণিক সঙ্গী ড্রমিওকে এক ব্যাগ টাকা দিল ও । বলে দিল তার জন্যে একটি নির্দিষ্ট সরাইখানায় অপেক্ষা করতে । নিজে বেরিয়ে পড়ল শহরটা ঘুরে দেখার জন্যে । বেড়াতে বেরিয়ে অবাক হল সে । এখানকার সব্বাই চেনে তাকে, নাম ধরে ডাকছে । লোকে ঠিকই বলে দেখছি, মনে মনে বলল সে। ইফিসাস সত্যিই জাদু নগর!
এ সময় হঠাৎ সে দেখতে পেল ড্রমিও হেঁটে আসছে তার দিকে।
এখানে এলে কেন?, বিরক্ত হয়ে জানতে চাইল সে। টাকা কোথায়?
কিসের টাকা?আকাশ থেকে পড়ল যেন ড্রমিও।
আমার সঙ্গে মাত্র ছপেন্স রয়েছে। জলদি চলুন, বেগম সাহেবা অপেক্ষা করছেন। খাবারও ঠাণ্ডা হয়ে এল প্রায়
আমরা এখানে নতুন। টাকাগুলো কোন আক্কেলে মানুষের কাছে রেখে এলে? এক হাজার মার্ক কোথায়? জিজ্ঞেস করল অ্যান্টিফোলাস।
ঢোক গিলল ড্রমিও । তার মনিব আজ বড্ড উল্টো- পাল্টা বকছেন।
মার্কগুলো আছে আমার মাথায়আপনি আর বেগম সাহেবা রোজ যেখানে ঘা বসান। তবে তাতেও তো এক হাজার দাগ পড়ার কথা নয়!
অ্যান্টিফোলাস বুঝতে পারল না সে আসলে কথা বলছে তার ভাইয়ের সঙ্গী ড্রমিওর সঙ্গে ।
চলুন, হুজুর, বাড়িতে বেগম সাহেবা বসে রয়েছেন, চাপাচাপি শুরু করল ড্রমিও। রেগে আগুন হয়ে গেল অ্যান্টিফোলাস। কিসের বেগম সাহেবা? গর্দভ কোথাকার! চেঁচিয়ে উঠল সে। কষে দু ঘা বসিয়ে দিল ড্রমিওকে ।
বেচারা ড্রমিও বুঝতে পারল না আজ কোন ভূত সওয়ার পেয়েছে মনিবের কাধে । লম্বা দিল সে । অ্যান্টিফোলাস অফ সাইরাকিউস তখুনি রওনা হল সরাইখানার উদ্দেশ্যেটাকাগুলোর খবর নেয়া দরকার ।
ওদিকে স্বামীর জন্যে অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে পড়েছে অ্যাড্রিয়ানা। সে আবার খুব সন্দেহপ্রবণ মহিলা । তার ধারণা তাকে লুকিয়ে অন্য মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা করে অ্যান্টিফোলাস। তার বোন অর্থাৎ লুসিয়ানা অবশ্য এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে।
স্বামীকে তো তোয়াজ করতেই হবে, সেটাই স্বাভাবিক, বোনকে বোঝায় সে । তোমার একগুয়েমির কারণেই ও অন্য মেয়েমানুষের পাল্লায় পড়বে। ধৈর্য ধরতে শেখো। খেতে আসতে দেরি হচ্ছে, তাতে কি? নিশ্চয়ই কাজ পড়ে গেছে। আমরা বরং খেতে বসে যাই । সময় হলে ও আপনিই আসবে
তোর বিয়ে হয়নি। কাজেই তুই বুঝবিও না কেমন লাগে। আমাকে নাকি ভালবাসে! কই, তার কোন প্রমাণ তো দেখি না। বাড়িতে থাকে না ওকে কখনোই কাছে পাই না আমি
এমন করলে পাবেও না ঠিক সে মুহূর্তে ঘরে ঢুকল ড্রমিও অভ ইফিসাস।
সাহেব এলেন না? প্রশ্ন করল অ্যাড্রিয়ানা
বেগম সাহেবা, হুজুর পাগল হয়ে গেছেন। তাঁকে বাড়ি আসার কথা বলতেই বলেন কিনা, টাকা কোথায়?আমি বললাম খাবেন চলুন। আবার জিজ্ঞেস করলেন, টাকা কোথায়? জানালাম খাবার ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। তেড়ে উঠলেন তিনি, টাকা কোথায়? বলে। তারপর বললেন, তার নাকি বউ, বাড়ি-ঘর কিছুই নেই। আমাকে খুব করে মারলেন
যাও, এক্ষুণি নিয়ে এসো তাকে, ক্রুদ্ধ অ্যাড্রিয়ানা নির্দেশ দিল।
প্রতিবাদ জানাল ড্রমিওগেলে আবার মারবেন!
না গেলে আমি মারব! হুমকি দিল অ্যাড্রিয়ানা ড্রমিও বেচারা আর কি করে, মনিবকে খুঁজতে গেল বাধ্য হয়ে
মুখ কুঁচকালে তোমাকে খুব কুৎসিত দেখায়, বোনকে তিরস্কার করল লুসিয়ানা ।
আমার স্বামী বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়া সারে, আর আমি বাড়িতে বলসে থাকি হা করে। আমাকে কুৎসিত দেখায়, সেজন্যে তো ও-ই দায়ীআমি লোকের বিরক্তি উৎপাদন করে থাকলেও ও দায়ীও আমাকে সামান্য খেয়াল করলেই সব ঠিক হয়ে যেত । জানি, ও অন্য কোন মেয়ের পিছনে ঘুরছে
অ্যাড্রিয়ানা বেরিয়ে পড়ল বাড়ি ছেড়েসারা ইফিসাস চষে বেড়াল হন্যে হয়ে, স্বামীর খোজে। অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউস ইতোমধ্যে নিজের ড্রমিওকে পেয়ে গেছে।
আমার সঙ্গে মশকরা করছিলে কেন? রেগেমেগে জানতে চাইল সে
ড্রমিও জবাব দেয়ার আগেই ওখানে হাজির হয়ে গেল অ্যাড্রিয়ানা। স্বামীকে (!) খুব করে বকতে লাগল সে, ড্রমিওর সঙ্গে বাড়িতে আসেনি বলে।
নানাভাবে প্রতিবাদ করতে চাইল অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউস । কিন্তু অ্যাড্রিয়ানা তার কথা শুনলে তো? বেচারা অ্যান্টিফোলাস জানাল মাত্র দু ঘন্টা আগে ইফিসাসে এসেছে সে, অ্যাড্রিয়ানাকে ও জীবনেও দেখেনি কিন্তু তার সব কথাই পানিতে গেল। মাথা গুলিয়ে গেছে অ্যান্টিফোলাসের । অপরিচিত এক মহিলা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে তাকে।
স্বপ্নের মধ্যে বিয়ে করেছি নাকি? স্বপ্ন দেখছি না তো?
তার পরিচারক ড্রমিওর অবস্থাও তদ্রুপ ।
সত্যিই এটা ভুতুড়ে শহর। মনে হয় ডাকিনী যোগিনীদের সঙ্গে কথা বলছি আমরা । এদের কথা না শুনলে মেরে সারা শরীরে কালশিটে ফেলে দেবে। তারচেয়ে বাবা এদের সঙ্গে যাওয়াই ভাল বলল অ্যান্টিফোলাস।
অ্যাড্রিয়ানার সঙ্গে বাড়িতে ঢুকে পড়ল। লুসিয়ানাকে এখানে দেখল সে এবং প্রথম দর্শনেই প্রেমে পড়ে গেল ।
সে যখন খাওয়া দাওয়া করছে তখন অ্যাড্রিয়ানার সত্যিকার স্বামী বাড়ি এল। গেটে ধাক্কা দিল সে। অ্যাড্রিয়ানা কাজের লোকদের আগেই বলে রেখেছে কাউকে যেন ঢুকতে না দেয়া হয়স্বামীর সঙ্গে একান্তে খাবে সে । কেউ যেন বিরক্ত না করে। কাজেই কাজের লোকরা গেট খুলতে অস্বীকার করল। বৃথাই নিজেকে বাড়ির মালিক দাবি করে হস্বিতন্বি করল অ্যান্টিফোলাস।
কাজের লোকরা জানাল তাদের মালিক বেগম সাহেবার সঙ্গে খেতে বসেছেন। মাথায় রক্ত চড়ে গেল অ্যান্টিফোলাসের । তাকে কিনা বাইরে দাড় করিয়ে রেখে অন্য লোকের সঙ্গে ডিনার করে তার স্ত্রী! রেগেমেগে ওখান থেকে চলে গেল সে।

অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউসের বিস্ময়ের ঘোর কাটতে চাইছে না। তার ধারণা অ্যাড্রিয়ানা আর লুসিয়ানা দুজনই পাগল। সে চিন্তায় পড়ে গেল কিভাবে বেরোবে এ বাড়ি ছেড়ে
দুই মহিলারই স্থির সিদ্ধান্ত, সে এ বাড়ির লোক। তাকে চোখের আড়াল করা চলবে না। তার ওপর কথা হচ্ছে অ্যান্টিফোলাস লুসিয়ানার প্রেমে পড়েছে। সুন্দরী, বুদ্ধিমতী মেয়েটি মন কেড়ে নিয়েছে তার। অন্যদিকে অ্যাড্রিয়ানাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে চলেছে সে ।
বউয়ের সঙ্গে কেউ এমন ব্যবহার করে? লুসিয়ানা অনবরত উপদেশ দিচ্ছে তাকে, ওর সঙ্গে মিষ্টি করে কথা বলবে, আর অন্য মেয়েমানুষের পিছনে ঘুরঘুর করবে না। তাদের সঙ্গে কথা যদি বলতেই হয় তো সাবধানে বলবে । জানোই তো তোমার বউ একটু হিংসুটে । ওর মেজাজটা সামান্য খিটখিটে যদিও কিন্তু তোমাকে ও অসম্ভব ভালবাসে
তুমি যেভাবে শেখাবে সেভাবেই কথা বলব, গদগদ হয়ে বলল অ্যান্টিফোলাস অভ সাইরাকিউস । তোমার বোন আমার বউ নয়আমি বরং তোমাকেই বিয়ে করব
পাগল নাকি? প্রায় বিষম খেল লুসিয়ানা। তোমার প্রেমে পড়ে পাগল হয়ে গেছি।
এসব কথা বউকে শোনাওগে যাও। আমি তোমার বোনের মত।
তুমি আমার জান, আমার ধন, আমার স্বর্গ । তোমার স্বামী নেই, আমারও বউ নেই । হাতটা দাও।
দাড়াও, দেখাচ্ছি মজা, বোনকে ডাকতে ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল লুসিয়ানা।
এমন সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল ওরা দুজন। বেরিয়ে  এল বাড়ির বাইরে, ছায়ার মত নিঃশব্দে।
শোনো, বলল অ্যান্টিফোলাস, এখুনি পালাতে হবে এ শহর ছেড়েএখানকার সব্বাই পাগল। এখানে আর এক মুহূর্তও থাকতে চাই না আমি । বন্দরে গিয়ে খবর নাও, আজ রাতে কোন জাহাজ ছাড়ছে কিনা। জলদি যাও। আমি তোমার জন্যে বাজারে অপেক্ষা করছি। ওখানে চলে এসো।
বাজারে এক স্বর্ণকারের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল অ্যান্টিফোলাসের। লোকটির নাম অ্যাঞ্জেলো। বলা নেই কওয়া নেই সে একটি সোনার নেকলেস ধরিয়ে দিল অ্যান্টিফোলাসের হাতে। অ্যান্টিফোলাস তো হতভম্ব।
এটা চেয়েছে কে? অবাক হয়ে জানতে চাইল সে। বুঝে উঠতে পারছে না এই অপরিচিত লোকটি কি চায় হেসে উঠল অ্যাঞ্জেলো।
এটা একবার নয় অন্তত বিশবার চেয়েছেন আপনি, নিন, আমার ধারণা আপনার স্ত্রীর হাতে এটা দিলে বাড়িতে আর অশান্তি থাকবে না। আজ রাতে মজুরী নিতে আসব আমি।
ওটা বরং এখনই নিয়ে রাখুন,বলল অ্যান্টিফোলাস। নইলে নেকলেস আর টাকা দুটোই হারাবেন চিরতরে।
আপনি মজার মানুষ! হেসে বলল অ্যাঞ্জেলো । চলে গেল ওখান থেকে ।

অদ্ভুত লোক, ভাবল অ্যান্টিফোলাস।
                                        পরের পর্ব 

2 comments: