Total Pageviews

Friday, August 9, 2019

Rabindranath Tagore - Life and Works in Bangla - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Rabindranath Tagore - Life and Works in Bangla
Rabindranath Tagore

জীবন ও কর্ম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে প্রথম অইউরোপিয় ব্যাক্তি হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ইউরপিয়ানরা যাকে দ্যা বার্ড অফ বেঙ্গল নামেই চেনে।  কোলকাতায় ধনাঢ্য ব্রাহ্মন পরিবারে ১৮৬১ সালের ৭ই মে তাঁর জন্ম। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, দার্শনিক, নাট্যকার, ছোটো গল্পকার, গীতিকার সুরকার, চিত্রকর, প্রবন্ধকার ও ঔপন্যাসিক। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের তিনি নব রূপকার; ভাষাকে সংস্কৃতের বলয় মুক্ত করেন, সাহিত্যকে করেন জীবন ঘনিষ্ঠ। পাশ্চাত্যের কাছে প্রাচ্যকে নতুন করে তুলে ধরেন, পাশ্চাত্য প্রাচীন ভারতকে নতুন করে চেনে তারই কীর্তির কল্যাণে। পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারদা দেবীর তিনি চতুর্দশ সন্তান। শিশুকাল থেকেই তিনি ছিলেন সাহিত্যানুরাগী। বারো বছর বয়সেই তাঁর পাঠের পরিধি বিশাল হয়ে যায় : আত্মজীবনী, কবিতা, ইতিহাস, এমন কি কালীদাস পাঠও তার ঐ বয়সেই শেষ হয়। প্রধানত গৃহেই তার বিদ্যার্জন, সতেরো বছর বয়সে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য তাঁকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয় কিন্তু স্কুল-বিদ্যা অসমাপ্ত রেখেই তিনি দেশে ফিরে আসেন। ১০ বছর বয়স থেকেই তিনি প্রথম কবিতা লেখা শুরু করেন। মৈথিলা ভাষার কাব্য ভঙ্গিতে ১৮৭৭ সালে তিনি প্রথম কাব্যরচনা করেন, ১৮৮২ সালে তার গল্প সন্ধ্যা সঙ্গীত ও কবিতা নিঝরের স্বপ্নভঙ্গপ্রকাশিত হয়। ১৮৮৩ সালে তিনি মৃনালীনি দেবীকে বিয়ে করেন, তাঁদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে মাত্র তিনজন বেঁচেছিলেন। ১৮৯১ সালে তিনি পৈত্রিক জমিদারি তদারকির জন্য পূর্ববঙ্গে আসেন এবং অধিকাংশ সময় পদ্মা নদীতে তার বোটে করে শিলাইদহ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় দশ বছর কাটান। এ সময়ে পূর্ববঙ্গের দরিদ্র মানুষের জীবন গভীরভাবে লক্ষ করেন, এ সব দরিদ্র মানুষের জীবনই তার সাহিত্যের উপাদান হয়ে উঠে। ১৮৯১ থেকে ১৮৯৫ সাল তাঁর সৃজনশীলতার উকৃষ্ট সময়। এ সময় পর্বে তিনি গল্পগুচ্ছ ও সোনারতরী কাব্য ও চিত্রাঙ্গদা নাটক রচনা করেন। ১৯০১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে যান ও সেখানে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন, সেখানে উপনিষদীয় ভাবাদর্শে শিক্ষা প্রচার চেষ্টা করেন। এ সময়েই তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়। ১৮৯২ সালে মানসী ১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি ১৯১৪ সালে গীতিমাল্য প্রকাশিত হন। তাঁর গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ ইংরেজ কবি ডব্লিউ বি ইয়েটস ও আঁদ্রে জিদে প্রচুর প্রশংসা করেন। ১৯১৩ সালে তিনি নোবেল প্রাইজে সম্মানিত হয়। ১৯১৫ সালে তিনি নাইট খেতাব লাভ করেন, ব্রিটিশ সরকার তাঁকে এ সম্মানে ভূষিত করেন কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালা বাগের নির্মম হত্যার প্রতিবাদে তিনি এই নাইট খেতাব বর্জন করেন। রবীন্দ্রনাথ ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা। বিশ্বে তিনিই সম্ভবত একমাত্র কবি যিনি যুগোপৎ দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা। তিনি শেষ বয়সে চিত্রাঙ্কনও করেছিলেন, দুই হাজারেরও বেশি গান রচনা করেন ও তাতে সুরারোপ করেন। নাইটহুড প্রত্যাখ্যানের চিঠিটি ৩রা জন ১৯১৯ সালে স্টেটসম্যান' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। চিঠিতে তিনি তাঁর 'নাইট' পদবী বর্জনের বিষয়টি তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ডকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক চেতনা তার কবি প্রতিভার সমান্তরাল ছিল না যদিও, তথাপিও বর্তমান চিঠিটি তার উপনিবেশবাদ বিরোধের সাক্ষ্যবহ। অন্ধ স্বদেশ প্রেমের উগ্র প্রকাশকে কবি সুনজরে দেখতেন বলেই তিনি সূর্যসেনের নেতৃত্ব চট্টগ্রাম বিদ্রোহের পক্ষাবলম্বন করেননি বরং তার সমালোচনা করেছিলেন। আবার ঔপনিবেশবাদেরও তিনি উগ্রবিরোধী ছিলেন না, ভারত তীর্থকবিতা তার প্রমাণ।
কালপঞ্জি
১৮৬১ - জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ৭ই মে জন্ম।
১৮৬৬ -- সহোদর ভাইয়ের সঙ্গে বর্ণ শিক্ষা শুরু।
১৮৬৮ স্কুলে ভর্তি হন।
১৮৬৯ কাব্য চর্চা শুরু।
১৮৭০ একই সঙ্গে ছবি আঁকা, কবিতা লেখা, কুস্তি ও জিমন্যাস্টিকস চর্চা শুরু করেন।
১৮৭১ বেঙ্গল একাডেমিতে ভর্তি হন।
১৮৭৩ উপনয়ন পালন করেন ও উপবিত ধারণ করেন।
১৮৭৪ - ম্যাকবেথের কাব্যরূপ দেন। বেনামে অভিলাষ কাব্য প্রকাশ করেন।
১৮৭৫ তাঁর মাতার মৃত্যু হয়। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ত্যাগ করেন।
১৮৭৮ - ইংরেজি শেখার জন্য এলাহাবাদ যান। উচ্চ শিক্ষার্থে ইংল্যান্ড যান।
১৮৭৯ - লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তি হন।
১৮৮০ ভারতে ফিরে আসেন।
১৮৮১ - প্রথম উপন্যাস বৌঠাকুরানীর হাট রচনা শুরু করেন।
১৮৮২ প্রথম গীতিনাট্য কাল মৃগয়া জোড়াসাঁকোতে মঞ্চস্থ হয়।
১৮৮৩ প্রথম কাব্য নাট্য প্রকৃতির প্রতিশোধরচিত হয়।
১৮৮৫ - প্রথম সঙ্গীত সঙ্কলন প্রকাশিত হয়।
১৮৮৬ - প্রথমা কন্যার জন্ম হয়।
১৮৮৭ মানসীকাব্য ও গীতি নাট্য মায়ার খেলারচনা শুরু।
১৮৮৮ - প্রথম সমালোচনা গ্রন্থ সমালোচনা প্রকাশিত হয়।
১৮৮৯ - প্রথম পাঁচ অঙ্কের নাটক রাজা ও রানিবিসর্জনরচনা সমাপ্ত হয়।
১৮৯১ পোস্টমাস্টার ও অন্যান্য ছয়টি গল্প প্রকাশিত।
১৮৯২ - সোনারতরী রচনা শুরু।
১৮৯৩ কাব্য নাট্য বিদায় অভিশাপ রচনা সমাপ্ত।
১৮৯৪ - বাংলা বর্ণমালা একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত।
১৮৯৭ প্রথম হাস্যরসাত্মক রচনা বৈকুণ্ঠের কথা রচনা সমাপ্ত।
১৮৯৮ -- ভারতী পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন।
১৯০০ - গল্পগুচ্ছ' প্রকাশিত হয়।
১৯০১ বঙ্গদর্শন পত্রিকার সম্পাদনা শুরু।
১৯০৪ সিস্টার নিবেদিতা ও জগদীশ চন্দ্র বসুর সঙ্গে বুদ্ধ গয়া দর্শন।
১৯০৫ - পিতার মৃত্যু হয়।
১৯০৮ নাটক প্রায়শ্চিত্ত রচনা সমাপ্ত ।।
১৯১০ কিশোরী এক বিধবা প্রতিমা দেবীর সঙ্গে তাঁর পুত্রের বিয়ে দেন। গীতাঞ্জলীরচিত।
১৯১১ - জনগণ মন অধিনায়ক ...' রচিত।
১৯১২ - ইংরেজি গীতাঞ্জলীপ্রকাশিত।
১৯১৩ নোবেল প্রাইজ অর্জন।
১৯১৪ - সুইডিশ একাডেমির পক্ষে নবেল প্রাইজ সনদ গ্রহণ।
১৯১৫ - রাজা জর্জের কাছ থেকে নাইট উপাধি গ্রহণ।
১৯১৬ কানাডা ভ্রমণের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান।
১৯১৭ - ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতি পদে এনি বেসান্তকে সমর্থন।
১৯১৮ রাষ্ট্রভাষা হিসেবে হিন্দিকে সমর্থন।
১৯১৯ - জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইটখেতাব বর্জন।
১৯২২ - নাটক মুক্ত ধারা' রচনা সমাপ্ত।
১৯২৩ -- কাজী নজরুলকে তাঁর গীতি নাট্যবসন্তউৎসর্গ
১৯২৪শান্তি নিকেতনে বিশ্বভারতীয় উদ্বোধন।
১৯২৫ - মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ।
১৯২৬ - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দানের জন্য আমন্ত্রিত।
১৯২৭তিন পুরুষ উপন্যাস রচনা শুরু।
১৯২৮শেষের কবিতা  উপন্যাস রচনা শুরু।
১৯২৯চিত্রাঙ্কন শুরু করেন।
১৯৩১লন্ডনে বার্নার্ড সঙ্গে সাক্ষাৎ।
১৯৩৫বানারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি কবিকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৩৬ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৩৮ - হায়দ্রাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯৩৯পুরীর মহারাজা কবিকেপরমগুরুউপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৪০শান্তি নিকেতনে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৪১ত্রিপুরার মহারাজা কবিকেভারত ভাস্করউপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৪১ - ৭ই আগস্ট, কবি মৃত্যুবরণ করেন।




No comments:

Post a Comment