Brave New World - Aldous Huxley - Bangla Summary - Part 2 |
Brave New World Summary - Part 1
Brave New World - Aldous Huxley - Bangla Summary - Part 2
প্রথম পর্বের পর থেকে
এদিকে রিজার্ভেশনে থেকে লেনিনা একেবারে
বীতশ্রুদ্ধ হয়ে বেশি পরিমানে সোমা গ্রহন করে, ফলে সে প্রায় ১৮ ঘন্টা অজ্ঞান হয়ে
থাকে। বার্নার্ড সান্তা ফিতে উড়ে গিয়ে মুস্তাফা মন্ড এর সাথে দেখা করে জন ও
লিন্ডাকে ওয়ার্ল্ড স্টেট এ নিয়ে আসার জন্যে অনুমতি নেয়। জন এ সময় অজ্ঞান লেনিনার
ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঘরে প্রবেশ করে ও তাকে স্পর্শ করার ইচ্ছাটা পূরণ করে। জন,
লিন্ডা, বার্নার্ড ও লেনিনা বিমানে করে ওয়ার্ল্ড স্টেট এর দিকে যাত্রা করে।
মুস্তাফা মন্ড ভেবেছিল যে বার্নার্ড আসলেই তাকে আলফা কোওয়ার্কারদের সামনেই
নির্বাসন দেবে, কিন্তু বার্নার্ড ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিল সবার সামনে জনকে মুস্তাফা
মন্ডের সন্তান হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে। যেহেতু ওয়ার্ল্ড স্টেট এ পিতা হওয়ার
বিষয়টা খুবই লজ্জাজনক কাজ ছিল, এবং এটা উপস্থিত সবার সামনে মুস্তাফা মন্ডকে হাসির
পাত্র করে তোলে ফলে বার্নার্ডকে লন্ডনে মুক্ত অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে মুস্তাফা মন্ড
পদত্যাগ করলেন।
জন তার পূর্বের অদ্ভুত জীবনযাপনের জন্যে লন্ডনের
সমাজে বিখ্যাত হয়ে গেল। ওয়ার্ল্ড স্টেট এর কারখানা এবং স্কুল গুলোতে ঘুরে জন কিছুটা
বিরক্ত বোধ করল। লেনিনার প্রতি তার যৌন আকর্ষনটা রয়েই গেল কিন্তু সে তার স্বাভাবিক
যৌন চাহিদার চেয়ে বেশি কিছু যেন তার কাছ থেকে আশা করছিল যেটা তাকে ভয়ঙ্করভাবে
দিশেহারা করেছিল। এ ব্যাপারে লেনিনাও কিছুটা বিভ্রান্ত হয়, কারন সে বুঝতে পারছিল
না কেন জন তার সাথে স্বাভাবিক যৌণ আচড়ন করত না। এদিকে বার্নার্ড আদিম মানুষের
(স্যাভেজ) অভিভাবক হিসেবে অনেক বিখ্যাত হয়ে গেল। তার সামাজিক অবস্থানের উন্নতি
ঘটল। সে এই সুযোগে বিভিন্ন মানুষকে দাওয়াত দিত ও মেয়েদেরকে বিছানায় নিতে লাগল। তাদের
বেশিরভাগই বার্নার্ডকে ঘৃণা করত কিন্তু জনের সাথে দেখা করার জন্যে তারা তার এই সব
আচড়ন মেনে নিত। একদিন একদল অতিথি জনের সাথে দেখা করতে চাইলে সে তাতে অস্বীকৃতি
জানালো।
সে সময় হেমোহলোজ জনের কাছে যায়। জন ও হেমোহলোজ
ভালো বন্ধু হয়ে যায়। জন তাকে শেক্সপিয়রের রোমিও এন্ড জুলিয়েট থেকে কিছু অংশ পড়ে
শোনায় যেখানে ভালোবাসা, বিয়ে ও পিতামাতা সংক্রান্ত কথাবার্তা ছিল। যা শুনে হেমোহলোজ
তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করে। কারন এই বিষয় গুলো ওয়ার্ল্ড স্টেট এ হাস্যকর ও ঘৃণার বস্তু
ছিল।
জনের অদ্ভুত ব্যবহারে লেনিনার মন আচ্ছন্ন হয়ে
ওঠে। সে সোমা গ্রহন করে এবং জনের কাছে (বার্নার্ডের এপার্টমেন্টে) যায় এবং তাকে
প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে। উত্তরে সে তাকে আঘাত করে ও অভিশাপ দেয়। পরে তাকে
শেক্সপিয়রের বই থেকে কিছু কথা শুনিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে সে বাথরুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
সে সময় একটা ফোনকল আসে যার মাধ্যমে সে জানতে পারে তার মা ওয়ার্ল্ড স্টেট এ ফেরার
পর থেকে একেবারে স্থায়ীভাবে সোমা গ্রহন করছে এবং এখন তার মৃতপ্রায় অবস্থা। সে
হাসপাতালে গিয়ে দেখে নিচু জাতের(শ্রেণীর) কিছু বাচ্চারা তার মৃতপ্রায় মাকে দেখে
মৃত্যু সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করছিল। ভ্রুণ কালচারের মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড স্টেট এর সবাই
ছিল দেখতে খুব সুন্দর। ফলে দীর্ঘদিন স্যাভেজ রিজার্ভেশনে থাকা লিন্ডার চেহারা হয়ে
গিয়েছিল তাদের তুলনায় কুৎসিত। তাই এই সকল বাচ্চাদের কাছে এই বিষয়টা অদ্ভুত লাগে।
তারা কৌতূহলবশত জানতে চায় সে এতোটা কুৎসিত কেনো যা জনকে মারাত্বক ক্ষিপ্ত করে তোলে।
লিন্ডার মৃত্যুর পরে জন ডেলটা শ্রেণীর ক্লোনের
সাথে দেখা করে। এসময় হাসপাতাল থেকে তারা তাদের জন্যে বরাদ্দ করা সোমা গ্রহন করছিল।
সে তাদেরকে বিদ্রোহ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করে। সে তাদের সোমা জানালা দিয়ে ছুড়ে
মারে ও দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করে। বার্নার্ড আর হেমোহলোজ এই ঘটনা শুনে জনের
সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে গিয়ে হেমোহলোজ তার সাথে যোগ দেয় কিন্তু
বার্নার্ড কিছুটা পিছু হটে থাকে কারন সে জানত এই ঘটনার পরিণতি কি হতে পারে। পরে
পুলিশ এসে সোমার বাষ্প ছেড়ে এই দাঙ্গা শান্ত করে ও বার্নার্ড, হেমোহলোজ আর জনকে
গ্রেফতার করে মুস্তাফা মন্ডের অফিসে নিয়ে আসে যে পদত্যাগের পর ওয়ার্ল্ড স্টেট এ
একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করছিল। মুস্তাফা মন্ড বার্নার্ড ও হেমোহলোজকে ফকল্যান্ড দ্বীপে
নির্বাসনের নির্দেশ দেয় কারনে সেখানে সমাজচ্যূতদের পাঠানো হত। এসময় জন ও মুস্তাফা
মন্ড এর মাঝে বর্তমান সামাজিক কাঠামোটি কেনো প্রতিষ্ঠিত রাখা দরকার সে ব্যাপারে বিশাল
বিতর্ক হয়। জন ইতিহাস, ধর্ম ও বিজ্ঞানের প্রয়োজনিয়তা তুলে ধরে। মুস্তাফা মন্ড দাবি করে
বর্তমান সামাজিক গঠন মানুষের আনন্দকে সর্বোচ্চ সীমায় পৌছিয়ে দিয়েছে। ইতিহাস, ধর্ম
ও বিজ্ঞান মানুষের নাঝে আবেগ সৃষ্টি করে যা সমাজকে অস্থিতিশীল করে তোলে যার ফলে
সমাজের শান্তি নষ্ট হয়। সমাজকে স্থিতিশীল করার জন্যেই তাদের অন্তরকে পরিবর্তন করা
হয় এবং ঐ জিনিসগুলোকে উপেক্ষা করতে শেখানো হয় যা সমাজকে অস্থিতিশীল করবে। জন তার
কথার বিরোধীতা করতেই থাকে। এক পর্যায়ে মন্ড তাকে বলে তুমি তো দূঃখ-কষ্ট ভোগ করার
অধিকার দাবি করছো? এরপর মন্ড মানব জাতীর ইতিহাস থেকে বিভিন্ন ধরনের দূঃখ ও কষ্টের
এক বিশাল তালিকা তুলে ধরে, ঈশ্বরের বিরোধীতা করে তার নাস্তিক্যবাদী চিন্তাধারা
তুলে ধরে। উত্তরে জন বালে আমি এই সব গুলোই (দূঃখ ও কষ্ট) দাবী করছি।
মুস্তাফা মন্ড তাকে নিয়ে আরো পরীক্ষা নিরিক্ষা
করতে চায়। সে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে শহরের বাহিরে একটি দ্বীপের বাতিঘরে আশ্রয়
নেয়। সেখানে সে একটি বাগান ও তীর ধনুক তৈরী করে। লিন্ডার মৃত্যুর জন্যে জনের
নিজেকেই দোষী মনে হয়। বিবেকের দংশনে সে একটি চাবুক তৈরী করে নিজেকেই আঘাত করতে
থাকে। কিছু ডেলটা শ্রেণীর মানুষ এই ঘটনা দেখতে পায় এবং তিন দিনের মাঝেই পত্রিকার
সংবাদ দাতারা তার সাক্ষাতকার নিতে হাজির হয়। সে তাদেরকে ভয় পাইয়ে দেয়ার সব রকম
চেষ্টা করে। যাই হোক, কেউ একজন জনের আত্ম-নিগ্রহের এই ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র ধারন করে। পরের দিন শতশত হেলিকপ্টার
সেখানে আসে শুধু মাত্র জনের এই আত্ম-নিগ্রহের ঘটনা অবলোকন করার জন্যে। লেনিনা ও
হেনরি ফস্টার সেখানে আসে। সে লেনিনাকে তার চাবুক দিয়ে আঘাত করে। জনতার ভীর তার
প্রতি অর্গি-পর্গি (Orgy-porgy) বলে চেঁচাতে থাকে। জন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরের
দিন জ্ঞান ফিরলে সে সোমা গ্রহন করে ও কামূক নৃত্যের সাথে সে স্তুতি গান গায়। সে
অপরাধ ও আত্ম-ঘৃণায় নিমগ্ন হয়ে যায়। সন্ধ্যায় বাতিঘরের একটি খিলানে তার মৃতদেহ
ঝুলে থাকতে দেখা যায়।
- - শেষ - -
মারুফ মাহমুদ, ঢাকা কলেজ
No comments:
Post a Comment