Emily Dickinson - Life and works in Bangla |
Emily Dickinson -
Life and works in Bangla
এমিলি ডিকিনসন - জীবন ও কর্ম
আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের আমহার্স্ট নামক একটি ছোটো শহরে ১৮৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর এমিলি ডিকিনসন জনুগ্রহণ করেন। তাঁর আইনজীবী পিতা এডওয়ার্ড ডিকিনসন ছিলেন একজন নামকরা কংগ্রেস সদস্য এবং আমহার্স্ট কলেজের কোষাধ্যক্ষ ও ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য। তাঁর পিতা কর্তব্যকর্মে ছিলেন খুবই সচেতন, আমহার্স্ট শহরের একজন প্রধান ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তিনি তাঁর কাজকর্মে কখনোই ভাবাবেগকে প্রশ্রয় দিতেন না। এমিলির প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় নিজ গৃহে। প্রায় এক বছরকাল তিনি নিজ গৃহেই শিক্ষা গ্রহণ করেন। মাউন্ট হলিয়ক ফিমেল সেকেন্ডারি বিদ্যালয়টি তাদের বাড়ি থেকে ছিল প্রায় দশ মাইল দূরে। এমিলি মাউন্ট হলিয়ক ফিমেল সেকেন্ডারিতে ভর্তি হলেন, কিন্তু বিদ্যালয়ের কঠোর নিয়মানুবর্তিতা তার সহ্য হলো না, তিনি বাধ্য হয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করলেন। এমিলি ছিলেন খোলামেলা মনের মানুষ। বিদ্যালয়ের এতো এতো নিয়মকানুনের সাথে তিনি নিজেকে মানাতে পারেননি। আমহার্স্টে ফিরে এলেন ডিকিনসন। জানা যায় যে, তিনি তাঁর পিতার শিক্ষানবিশী বেন নিউটন নামের এক যুবার প্রেমে পড়েন। সে যুবকটি এমিলিদের গৃহেই থাকত।
বেন নিউটনের প্রতি এমিলি আকৃষ্ট হন যে কারণে তা হলো, যুবকটি শিল্প সাহিত্যের অনুরাগী ছিল। এমিলির বাবা যুবকটির বিয়ের প্রস্তাব মেনে নেননি, কারণ বেন নিউটন ছিলেন খুবই দরিদ্র। এর পাঁচ বছর পরেই বেন নিউটন ক্ষয় রোগে মারা যান। ১৮৫৪ সালে এমিলি নিউ ইয়র্কে গেলেন তাঁর পিতার সাথে সাক্ষাৎ করতে। ফিলাডেলফিয়াতে এমিলির সাথে চার্লস ওয়ার্ডসওয়ার্থ নামক এক যুবকের সাথে সাক্ষাৎ হয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী এমিলি তার প্রেমে পড়েন এবং বিয়ে করেন।
এমিলির মাঝে শিল্প সাহিত্যের স্পৃহা জাগ্রত হয় ছেলেবেলা থেকেই। তার পিতার ছাত্র বেন নিউটন এটিকে আরো অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর করে দেয়। পরবর্তীতে চার্লস ওয়ার্ডওয়ার্থকে বিয়ে করলেও বেনের স্মৃতিকে মন থেকে মুছে ফেলতে পারেননি এমিলি। সর্বদা একটা বেদনা বোধ ভেতরে ভেতরে কাজ করেছে তার মধ্যে। প্রচুর কবিতা লিখেছেন তিনি। প্রকৃতির ছোটোখাটো বিষয়
আর সাধারণ ঘটনাকে অবলম্বন করে। তাঁর কবিতাগুলোতে মধুর এক গীতিধর্মিতা সর্বদা খেলা
করে। সাধারণ চোখে দেখা একটি বিষয়কেও তিনি অসাধারণত্ব দান করেছেন।
১৮৬২ সালে এমিলি ডিকিনসনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সময়, এ সময় কম করে
হলেও তার ৩৬২টি কবিতা লেখা হয়। ১৮৬১ থেকে ১৮৬৪ সালের মধ্যে এমিলি প্রায় সাতশত
পঞ্চাশটি কবিতা রচনা করেন। এমিলির কবিতাগুলোতে তার একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তাচেতনার
স্ফুরণ ঘটেছে। ছোটো ছোটো কবিতাগুলোতে তার নিজস্ব জগতের ছায়াপাত ঘটেছে। সাধারণ
একটি বিষয়কে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিমার দ্বারা অসাধারণত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
সবচেয়ে অবাক ব্যাপার এই যে, এবং যেটি আজও আমাদের ভাবায় তা হলো, এমিলি তার জীবনকালে
তার কোনো কবিতা প্রকাশ করেননি। ১৯২০ সালের পূর্বে তিনি অজ্ঞাত ছিলেন বলা যায়। ১৯২৪ সালে মার্থা বিয়ামচি এমিলির কবিতাগুলো
থেকে বেশ কিছু কবিতা বাছাই করে একটি নির্বাচিত কবিতার সংকলন প্রকাশ করেন। ১৯৪৫
সালে এমিলির প্রতিবেশী মিসেস মার্বেল টড ও তার কন্যা মিলিসেন্ট টড ‘বোল্ট অব মেলোডি’ নামে ছয়শত আটষট্টিটি কবিতা নিয়ে একটি সংকলন
প্রকাশ করেন। জানা যায়, এমিলির জীবিত অবস্থায় কী করে যেন হঠাৎ করে
সাতটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর ছোটো ছোটো গীতিধর্মী কবিতাগুলো বিশ শতকের
কবিতার প্রবহমান ধারায় যেন হাজারো নক্ষত্রের মতোই দীপ্যমান।১৮৮৬ সালে তিনি
আমহার্স্টেই মৃত্যুবরন করেন।
No comments:
Post a Comment