As you like it - William Shakespeare - Bangla Translation -part 4 |
As you like it - William Shakespeare -
Bangla Translation -part 4-
অ্যাজ ইউ লাইক ইট - শেক্সপিয়ার - বাংলা অনুবাদ
৪
বাড়ির
কাছাকাছি ফিরে এসেছে অরল্যান্ডো। এমন সময় তার দেখা হয়ে গেল পুরোনো চাকর অ্যাডামসের সাথে। তাকে দেখতে পেয়েই অ্যাডাম
বলে উঠল, “শোন ছোটো কর্তা! প্রাণ বাচাতে চাইলে আর বাড়িতে ঢুকো
না। খুনে চার্লসকে দিয়ে তোমায় মেরে ফেলার ব্যবস্থা করেছিল তোমার বড়ো ভাই অলিভার
স্বয়ং। তুমি কুস্তিতে চার্লসকে হারিয়ে দিয়েছ শুনে বেজায় রেগে আছে ও, মতলব করেছে আজ রাতেই তোমায় পুড়িয়ে মারবে। তাই ভালোয় ভালোয় বলছি, প্রাণ বাচাতে হলে তুমি আর এ বাড়িতে ঢুকো না।”
“বাড়িতে ঢুকব না তো কোথায় যাব? বলল অরল্যান্ডো, “তোমার কি ইচ্ছে আমি
ভিখিরির মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াই না কি চুরি-গুন্ডামি করে
শেয়াল-কুকুরের মতো বেঁচে থাকি? এর চেয়ে নিজে
নিজের বড়োভাইয়ের হাতে মারা যাওয়া অনেক ভালো।”
“আমি তা বলছি না ছোটো
কর্তা, বাধা দিয়ে বলল অ্যাডাম, তোমার বাবা জীবিত থাকাকালীন আমায় যে বেতন দিতেন তা থেকে পাঁচশো ক্রাউন
আমি আলাদা করে রেখে দিয়েছি। এখন ওই টাকাটা তুমি নিয়ে নাও। পরে যখন নিজের পায়ে দাড়াবে,
তখন শোধ করে দিলেই হবে। আর তোমার সামনেই তো আমায় কাজ থেকে ছাড়িয়ে
দিয়েছে অলিভার। এখন তুমি যেখানে নিয়ে বাবে সেখানেই যাব, যতদিন
পারি তোমার সেবা করব।”
অ্যাডামের কথা
শুনে দু-চোখ জলে ভরে এল অরল্যান্ডোর, “হায় অ্যাডাম! তুমি একটা পঁচা গাছকে বাঁচিয়ে তুলতে চাইছ। কিন্তু শেষ পর্যস্ত
কি আর তাতে ফুল ফুটবে?”
তোমার বাবা
স্যার রোল্যাল্ড ডি’বয় ছিলেন সংসারের সর্বময় কর্তা। আজ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। এই আশি বছর
বয়সেও আমি তোমাদের কাজ করে যাচ্ছি। তার কাছে খণী না থেকে শান্তিতে মরতে পারাটাই
আমার সৌভাগ্য। যাও অরল্যান্ডো! তুমি এগিয়ে যাও, তোমার পিছু পিছু আমিও আসছি?
ডিউকের রাজসভার
ভাড় টাচস্টোন লোকটি খুবই নিরীহ এবং বিশ্বাসী। সে খুবই স্নেহ করে রোজালিন্ড আর
সিলিয়াকে। তারা দুজনে ঠিক করেছে যাবার সময় টাচস্টোনকেও সাথে নিয়ে যাবে। হাজার
হোক দুজনেই যুবতি, একজন পুরুষ মানুষ সাথে
থাকলে ভরসা পাওয়া যাবে। টাচস্টোনকে তাদের পরিকল্পনার কথা বলতেই এক কথায় রাজি
হয়ে গেল সে। পরদিন গভীর রাতে রক্ষীদের নজর এড়িয়ে প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এল
রোজালিন্ড, সিলিয়া আর টাচস্টোন। হাটতে হাটতে এক সময়
তারা রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেল আর্ডেনের গভীর অরণ্যে। সকালবেলা ঘুম থেকে
উঠে ডিউক জানতে পারলেন গভীর রাতে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে চলে গেছে রোজালিন্ড আর সিলিয়া
- রাজসভার ভাড় টাচস্টোনও আছে তাদের সাথে। সিলিয়ার ব্যক্তিগত পরিচারিকা
হিসপেরিয়ার কাছ থেকে তিনি এও শুনতে পেলেন আগের রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে ওরা নাকি
অনেকক্ষণ ধরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে- অরল্যান্ডোর নামও মাঝে মাঝে শোনা গেছে
তাতে। ডিউকের সন্দেহ হল অরল্যান্ডোর
সাহায্যেই তারা পালিয়ে গেছে, আর তাকে শিক্ষা
দেবার জন্যই সাথে নিয়ে গেছে সিলিয়াকে। অরল্যান্ডোকে ধরতে তখনই তার বাড়িতে সেপাই
পাঠালেন ডিউক। সেখানে এসে সেপাইরা জানতে পারল কাউকে না বলে অরল্যান্ডো যে কোথাও
পালিয়ে গেছে তা কেউ জানে না। অরল্যান্ডোকে ধরতে না পেরে রেগে আগুন হয়ে উঠলেন
ডিউক। তিনি অরল্যান্ডোর বড়ো ভাই অলিভারকে ডেকে পাঠালেন রাজসভায়। অলিভার এসে জানাল
কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে গেছে অরল্যান্ডো। কিন্তু তার কথা বিশ্বাস হল না ডিউকের। তিনি ধরেই
নিলেন তার চিরশত্রু রোল্যান্ড ডি’বয়ের ছেলেরাই নতুন করে শত্রুতা শুরু করেছে তার সাথে। অলিভারকে চাপ দিলেই বেরিয়ে পড়বে অরল্যান্ডোর খবর।
সেই সাথে সহজ হয়ে পড়বে সিলিয়াকে উদ্ধার করা।
অলিভার কিছুতেই
ডিউককে বোঝাতে পারল না যে ছোটো ভাই হলেও তার সাথে কোনও সম্পর্ক নেই অরল্যান্ডোর।
ডিউক অলিভারের বাড়ি-ঘর, বিষয়-সম্পত্তি,
টাকা-কড়ি সব কিছু বাজেয়াপ্ত করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন তাকে। অনেক কান্না-কাটি করেও ডিউকের মন গলাতে পারল না
অলিভার। ডিউক স্পষ্ট করে
অলিভারকে বলে দিলেন, “ও সব কান্না-কাটি করে
কোনও লাভ হবে না। যদি তুমি অরল্যান্ডোকো ধরে আমার কাছে নিয়ে আসতে পার তাহলেই তুমি
ফিরে পাবে সবকিছু, নইলে এ রাজ্যে ফিরে এলে
তোমার গর্দান যাবে। আশা করি সে কথা মনে থাকবে।”
এভাবে সবকিছু হারিয়ে
রাজ্য থেকে চলে গেল অলিভার। পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ছোটো ভাইকে বঞ্চিত করার ফল যে
এভাবে হাতে হাতে পেতে হবে সেটা উপলব্ধি করতে পারল অলিভার।
বন্ধুসম
কয়েকজন অমাত্য এবং সভাসদদের নিয়ে আর্ডেনের ঘন বনে আশ্রয় নিয়েছেন নির্বাসিত ডিউক।
ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য তারা তীর-ধনুক দিয়ে হরিণ শিকার করেন আর গাছতলায় বসে সবাই পরমানন্দে
রান্না করা হরিণের মাংস খান। ডিউকের এক সহচর, নাম অ্যামিয়েনস,
গান গেয়ে ভুলিয়ে দেয় সবার দুঃখ-কষ্টকে। সে আপন মনে গান গেয়ে
ঘুড়ে বেড়ায় বনের মাঝে, গানের মাধ্যমে অনেক কথাই বলে সে।
সে বলে, “মানুষই মানুষের পরম শক্র। কিন্তু এই বনে এসে সবাই শত্রুতা
ভুলে যায়। যারা এই ছায়াশীতল বনে এসে আমার সাথে কয়েকটা দিন আনন্দে কাটাতে চাও
তারা সবাই বাধাবন্ধন ছিড়ে চলে এস এখানে।”
নির্বাসিত
ডিউকের অপর এক সহচর, নাম জ্যাকস, নিজে একজন দার্শনিক। চারপাশে যা কিছু তার চোখে পড়ে, তার মধোই চিন্তা-ভাবনার রসদ খুঁজে পান তিনি। ডিউক শুধু অ্যামিয়েনের গানই শোনেন না, জ্যাকসের মুখে বড়ো বড়ো দার্শনিকদের কথাও শুনতে ভালো লাগে
তার।
একদিন দুপুরে
ডিউক যখন গাছের ছায়ায় সঙ্গীদের সাথে খেতে বসেছেন, সে সময় একজন স্বাস্থ্যবান যুবক তলোয়ার হাতে হাজির হলেন সেখানে।
হাতের তলোয়ার
বাগিয়ে ধরে সেই যুবক বলল, “আমার সাথে একজন বুড়ো
মানুষ রয়েছে। ক্ষুধা-তৃত্তা আর পথশ্রমে সে খুব ক্লান্ত। হাটাচলার ক্ষমতা নেই তার।
ওদিকে এক গাছতলায় শুইয়ে রেখে এসেছি তাকে। আপনারা যদি ভালো মনে করে তার জন্য খাবার দেন তো ঠিক আছে, নইলে তার জন্য জোর করে খাবার কেড়ে নিতে বাধ্য হব আমি। আমার
ক্ষুধা পেলেও নিজের জন্য কিছু চাইছি না আমি। বুড়ো মানুষটি না খেয়ে আমার সামনে
ছটফট করবে তা আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারব না।”
শান্তভাবে ডিউক
বললেন, “শোন যুবক, বুড়ো
মানুষটির জন্য যত খুশি খাবার তুমি এখান থেকে নিয়ে যেতে পার। তাকে ভালোভাবে
খাওয়াবার পর তুমি এসে খেতে বসবে আমাদের সাথে। তুমি ফিরে না আসা পর্যস্ত আমরা কেউ
খাব না।”
ডিউক আর তার
সঙ্গীদের প্রচুর ধন্যবাদ জানিয়ে খাবার নিয়ে চলে গেল সেই যুবক। খানিক, বাদে সে ফিরে আসার পর তাকে পাশে বসিয়ে খেতে শুরু করলেন ডিউক।
খেতে খেতে তিনি যুবকটির পরিচয় জানতে চাইলেন। যুবকটি বলল যে স্যার রোনাল্ড ডি’বয়ের ছোটো ছেলে অরল্যান্ডো। ডিউক যখন শুনলেন যে ছেলেটি তার প্রিয় বন্ধু রোনাল্ড
ডি’বয়ের ছেলে, তিনি খুব খুশি হয়ে আশ্রয় দিলেন
তাকে। এটা ভালোই হল অরল্যান্ডোর পক্ষে। সে অ্যাডামকে সাথে নিয়ে পিতৃবন্ধু
নির্বাসিত ডিউকের আশ্রয়ে বাস করতে লাগল।
পরের পর্ব
পরের পর্ব
👍👍👍👍👍👍👍👍👍lick it
ReplyDeletebalo laglo ,,,
ReplyDelete