as you like it - bangla translation and summary - william shakespeare |
Par - 1 Translation
Par - 2 Translation
As you like it - William Shakespeare -
Bangla Translation - part - 3 -
অ্যাজ ইউ লাইক ইট - বাংলা অনুবাদ
৩
ডিউকের কথা
শুনে রোজালিন্ড বলল সিলিয়াকে, “দেখো, আমার বাবা আর স্যার রোল্যাল্ড ডি”বয় উভয়ে পরস্পরের বন্ধু ছিলেন।”
সিলিয়া বলল, “বাবার মোটেও উচিত হয়নি স্যার রোল্যাল্ডের সাথে তার শক্রতার কথা বলা।”
“আগে যদি জানতাম ও
স্যার রোল্যাল্ড ডি’বয়ের ছেলে, তাহলে কখনই ওকে লড়তে দিতাম না
চার্লসের সাথে” - বলল রোজালিন্ড।
এরপর দু-বোন
ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে দাড়াল অরল্যান্ডোর সামনে। রোজালিন্ড তার গলা থেকে এক গাছা রত্নহার খুলে নিয়ে অরল্যান্ডোর
গলায় পরিরে দিয়ে বলল, “হে যুবক! তুমি সতিই
প্রকৃত বীর। রাজ্যহারা রাজকন্যার এ সামান্য উপহার তুমি গ্রহণ করলে আমি ধন্য হব। এ ছাড়া
আর কিছু দেবার থাকলে আমি তাও দিয়ে দিতাম তোমায়।”
চোখ নিচু করে
বিনীতভাবে জবাব দিল অরল্যান্ডো, “আপনি আমার আন্তরিক
ধন্যবাদ নেবেন রাজকন্যা। আমার যা কিছু গুণ আছে তা সবই ছড়িয়ে আছে মাটিতে। আর সামনে যা দাঁড়িয়ে আছে তা একটা প্রাণহীন কাঠামো
ছাড়া আর কিছু নয়।”
অরল্যান্ডোর
মার্জিত কথা আর বিনীত আচরণে মুগ্ধ হয়ে গেল রোজালিন্ড। সে অরল্যান্ডোর শুভ কামনা
করে সিলিয়ার সাথে অন্যদিকে চলে গেল। কিছুক্ষণ বাদে লাবো এসে অরল্যান্ডোকে বলল, “ওহে বীর যুবক! প্রাণে বাচতে চাইলে তুমি চলে যাও এখান থেকে। তুমি যতই বীর হও না
কেন, তুমি ডিউকের পরম শক্রর ছেলে। তারপর তুমি তার বেতনভূক্ত কুস্তিগীরকে হারিয়েছ- এসব
দেখে ডিউক বেজায় রেগে গেছেন তোমার উপর। তাই তোমায় বলছি, ভালো চাও তো এ জায়গা
ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাও।
“সে না হয় যাচ্ছি”, বলল অরল্যান্ডো। “দয়া করে বলবেন কি ওই দুজন যারা খানিক আগে এখান থেকে চলে গেল তাদের মধ্যে
কোনটি ডিউকের মেয়ে?”
লাবো বললেন, “ওই দুজনের মধ্যে ছোটোখাটো গড়নের যে মেয়েটি, সে আমাদের ডিউক ফ্রেডারিকের মেয়ে
সিলিয়া আর অন্যটি হল নির্বাসীত ডিউকের মেয়ে রোজালিন্ড। ছোটবেলা থেকে দু-জনে একসাথে
বড়ো হয়েছে। দু-বোন একে অন্যকে খুব ভালোবাসে। সবাই তার মেয়ে সিলিয়ার চাইতে ভাইঝি রোজালিন্ডকে
বেশি পসন্দ করে বলে ভাইঝির উপর চটে আছেন ডিউক।”
এবার লাবোকে
ধন্যবাদ জানিয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়াল অরল্যান্ডো। যেতে যেতে তার মনে পড়ে যায় বড়ো ভাই অলিভারের খারাপ
ব্যবহারের কথা। সে বলেছে আজ থেকে তার খাওয়া-দাওয়ার দায়িত্বভার সে নেবে না অর্থাৎ নিজের
ব্যবস্থা নিজেকেই করে নিতে হবে। এরই পাশাপাশি মনের পর্দায় বারবার ভেসে উঠতে লাগল
রোজালিন্ডের সুন্দর মুখখানি।
এদিকে আবার
ডিউকের প্রাসাদে অরল্যান্ডোকে নিয়ে বেজায় তর্কাতর্কি শুরু হয়েছে দু-বোনের মাঝে
। সিলিয়া বলল, “রূপে-গুণে তোর যোগ্য পাত্রের অভাব
নেই দেশে। আর তাদের সবাইকে ছেড়ে তুই কিনা ভালোবাসতে চাস অরল্যান্ডোকে?
“তাহলে শুনবি কেন
ভালোবাসতে চাই অরল্যান্ডোকে? বলল রোজালিন্ড,
“কারণ আমার বাবা ছিলেন অরল্যান্ডোর বাবার বন্ধু, তিনি পসন্দ করতেন তাকে, তাই আমারও ইচ্ছে হয়েছে অরল্যান্ডোকে
ভালোবাসার। এর পরেও আর কিছু বলতে চাস?”
“চাই বইকি”,বলল সিলিয়া, “তোর মত অনুযায়ী আমারও তাহলে ঘৃণা করা উচিত অরল্যান্ডোকে। কারণ সে আমার বাবার
শক্রর ছেলে। তবুও তাকে ঘৃণা করছি না বা শত্রর ছেলে বলে ভাবছি না।”
ঠাট্টার সুরে
বলল রোজালিন্ড, “তুমি ঠিকই বলেছো, রাজকুমারী সিলিয়া, আমি যদি অরল্যান্ডোকে পসন্দ করি তাহলে
তুমি তাতে বাধাও দেবে না বা প্রতিদ্বন্দিতাও করবে না।”
রোজালিন্ডের
কথার জবাবে কিছু বলতে যাচ্ছিল সিলিয়া কিন্তু তার আগেই সেখানে এসে হাজির হলেন ডিউক।
তিনি ভাইজির দিকে তাকিয়ে সামান্য গলা চড়িয়ে বললেন, “দেখো রোজালিন্ড, আমি ভেবে দেখলাম
তোমাকে আর এখানে থাকতে দেওয়া উচিত নয়। দশদিন সময় দিলাম তোমায়। এর মধ্যে
প্রাসাদ ছেড়ে দিয়ে যেখানে খুশি চলে যাবে। আমার আদেশ লঙ্ঘন করলে তোমার মৃত্যু নিশ্চিত। সে কথা যেন মনে থাকে।”
ডিউকের চোখের
দিকে তাকিয়ে রোজালিন্ড বলল, “দেখুন কাকা, আপনি আমাকে প্রাণের ভয় দেখাবেন না। আমি শুধু জানতে চাইছি,
এমন কী অন্যায় আমি করেছি যার দরুন আপনি এত বড়ো শাস্তি দিচ্ছেন?”
“তার কারণ শুধু একটাই”, বললেন ডিউক, “আমার চোখে তুমি বিশ্বাসঘাতিনী।”
“কী বললেন, আমি বিশ্বাসঘাতিনী!” শিরদাড়া সোজা করে
নিঃসংকোচে বলল রোজালিন্ড, “আমি কি জানতে পারি কেন আপনি আমায় এমন বদনাম দিচ্ছেন?”
“তুমি তোমার বাবার মেয়ে এটাই একমাত্র এবং যথেষ্ট
কারণ”, কর্কশ স্বরে বললেন ডিউক।
মাথা উঁচু করে
সটান জবাব দিল রোজালিল্ড, “বিশ্বাসঘাতিনী আমি নই, বরঞ্চ আপনি নিজেই বিশ্বাসঘাতক। আপনি অন্যায়ভাবে আমার বাবার
রাজ্য দখল করে নির্বাসিত করেছেন তাকে। তখনও আমি বাবার মেয়েই ছিলাম। আমার বাবা
মোটেও বিশ্বাসঘাতক ছিলেন না আর তার মেয়ে হয়ে আমি বিশ্বাসঘাতিনী - আপনার এ যুক্তি
মোটেও ধোপে টেকে না।”
সিলিয়া কিছু
বলতে যাচ্ছিল তার বাবাকে এমন সময় ডিউক রোজালিন্ডকে দেখিয়ে তাকে বললেন, “শোন সিলিয়া, শুধু তোমাকে সঙ্গ দেবার
জন্যই আমি এতদিন ধরে ওকে এখানে রেখেছি। নইলে কবেই ওর বাবার সাথে ওকেও দূর দূর করে
তাড়িয়ে দিতাম।”
সিলিয়া বলল, “দেখুন বাবা, আমি ওকে এখানে রেখে দেবার জন্য
মিনতি করছি না। আপনার ইচ্ছে হয়েছিল বলে আপনি ওর বাবাকে তাড়িয়ে ওকে এখানে রেখে
দিয়েছেন। আজ এতদিন পরে আপনার ইচ্ছে হয়েছে বলে ওকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। ও আপনার
বড়ো ভাইয়ের মেয়ে, সম্পর্কে সে আমার বোন। খুব ছোটো থেকেই
আমরা এক সাথে বড়ো হয়েছি, খাওয়া-দাওয়া, খেলা-ধুলা, শোয়া-বসা, সবই
একসাথে করেছি। এমন কি একই রকম জামা-কাপড় পরেছি দুজনে। তাই বলছি ও বিশ্বাসঘাতিনী হলে আমিও তাই।”
ডিউক বললেন, “তুমি ভূলে যেও না সিলিয়া যে তুমি ডিউক ফ্রেডারিকের একমাত্র সন্তান। তবে ও
তোমার চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমতী, বিনয়ী এবং
কষ্টসহিষ্ণু। স্বাভাবিকভাবেই সবাই ওর গুণগান করবে, কেউ
ফিরেও তাকাবে না তোমার দিকে। ওই আপদকে এখান থেকে দূর করে দিতে পারলেই ওর সমস্ত
গুণের অধিকারিণী হবে তুমি। তখন সবাই তোমার প্রশংসা করবে, ভালোবাসবে।”
সিলিয়া বলল, “বাবা, তাহলে আপনিও আমায় আদেশ দিন এখান থেকে চলে
যাবার। কারণ ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না।”
চাপা রাগের
সাথে ডিউক বললেন, “তুমি একটা মূর্খ
সিলিয়া। কাণ্ডজ্ঞান লোপ পেয়েছে তোমার। আর রোজালিন্ড! তোমায় আবারও বলছি দশ দিনের
মধ্যে এ প্রাসাদ ছেড়ে দেবে তুমি। মনে রেখ, এর
অন্যথা হলে আমি তোমায় প্রাণদণ্ড দিতে বাধ্য হব” বলেই জোরে জোরে পা ফেলে সেখান থেকে চলে গেলেন ডিউক।
বোনকে
সান্ত্বনা দিয়ে সিলিয়া বলল, “তুমি দুঃখ করো না
রোজালিন্ড। দেখবে বাবার মত অচিরেই পরিবর্তন হবে। আর আমায় ছেড়ে তুমি কোথায় যাবে?”
“তুমি যা চাইছ তা মোটেও
সম্ভব নয় সিলিয়া”, বলল রোজালিন্ড, “কারণ এত সব কথা শোনার পর এ
প্রাসাদে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই আমার”
সিলিয়া বলল, “বেশ, তাই যদি হয় তাহলে আমিও যাব তোমার সাথে। এসো এক কাজ করা যাক- শুনেছি তোমার বাবা রয়েছেন
আর্ডেনের জঙ্গলে । চল, আমরা সেখানে গিয়ে তার
খোঁজ করি।”
“তুমি কি ভুলে গেলে সিলিয়া আমরা উভয়েই অবিবাহিতা
যুবতি!” বলল রোজালিন্ড, “তুমি কি জান না
আর্ডেনের বনে হিংস্র জন্তু ছাড়াও অনেক চোর-ডাকাত রয়েছে। আমাদের মতো যুবতী মেয়ে
চোখে পড়লে তারা কি আমাদের ছেড়ে দেবে?”
সিলিয়া বলল, “দেখ! আমরা যদি গায়ে ছাই-রং মেখে ছেঁড়া কাপড়-চোপড় পরে যাই, তাহলে চোখে পড়লেও চোর-ডাকাতেরা আমাদের ধরবে না। ওদের চোখে
ধুলো দেবার এটাই একমাত্র রাস্তা।”
একটু ভেবে
রোজালিন্ড বলল, “আমি তো বেশ লম্বা-চওড়া। আমি যদি
পুরুষের বেশে কোমরে তলোয়ার এঁটে বনে যাই তাহলে বেশ হয়, তাই না!
হেসে সিলিয়া
বলল, “তোমার যখন এতই শখ, তাহলে পুরুষ মানুষই সাজো। কিন্তু আমাদের নাম কী হবে? রোজালিন্ড বলল, “আমার নাম হবে গ্যানিমিড আর তোমার
অ্যালিয়েনা।”
উৎসাহের সাথে
সিলিয়া বলল, “বেশ ভালোই হবে। তাহলে আর দেরি কেন? এসো, এখন থেকেই বনে যাবার জোগাড়-যন্ত্র
শুরু করা যাক। তার আগে গয়না-গাঁটিগুলির একটা ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা পালিয়ে
যাবার পর কেউ যেন সেগুলি হাতিয়ে নিতে না পারে সে ব্যবস্থা করে যেতে হবে। কোনও
নিরাপদ জায়গায় লুকিয়ে রাখতে হবে গয়না-গাটিগুলি।”
Next Part
No comments:
Post a Comment