দি রেপ অব দি লক এবং নিয়তি
কাব্যের নায়িকা বেলিন্দার
বিরোধীপক্ষ হিসেবে আমরা প্রত্যক্ষ করি ব্যারনকে।
এখানে ব্যারনের শক্তির কাছে পরাজিত বেলিন্দা সমস্ত অলৌকিক জীব দ্বারা সুরক্ষিত থেকেও যেন সাধারণ একজন রমণীর মতোই অবলা অসহায় ব্যারনের কাঁচির সামনে।
কাব্যে দেখা যায়, বেলিন্দার রূপের
মাঝে তার সকল শক্তি নিহিত। এ ছাড়া অলৌকিক অদৃশ্য শক্তিরা সর্বদা তাকে পাহারা দেয়। সাত পরতের আবরণে তৈরি তার পরিধেয় বন্ত্র। সর্বদা সুরক্ষিত সে সকল বিপদ থেকে ।
কিন্তু এতসব সতর্কতার পূর্বাভাস শেষাবধি কোনো কাজেই আসে না। অসহায় নারীর যেন
এটাই নিয়তি, পুরুষের হাতে তার
সকল অহঙ্কার, বীরত্ব আর রূপের পতন ঘটে যায় নিমিষেই। সকল শক্তিতে বলীয়ান হয়েও তা রোধ করার সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
শেষে শোক প্রকাশ আর হা হুতাশ করা ছাড়া আর কোনো পথই খোলা থাকে না। নারী যেন সমাজের চোখে ক্ষমতাহীন এক অসহায় শক্তি।
ব্যারন কর্তৃক বেলিন্দার
বেণী কর্তন করাটাকে পোপ প্রাকৃতিক একটা অশুভ শক্তির ক্ষণিক তাণ্ডব হিসেবে প্রকাশ করতে প্রয়াসী হয়েছেন। এখানে
রমণীকে তার ইচ্ছেশক্তির
উর্ধ্বে উঠতে দেয়া হয়নি।
ক্লারিসার বক্তৃতায় এ ঘটনাকে
নিয়তির খেলা বলে চালানো
হয়েছে। নশ্বর মানব যখন কোনো অঘটন ঘটাতে চায় তখন নিয়তির নির্দেশে অশুভ শক্তি এসে ভর করে তার ওপরে।
অ্যারিয়েলও যেন তার শক্তি হারিয়ে ফেলে। অলৌকিক এক শক্তিবলে নিয়তির অমোঘ নির্দেশে ব্যারন বলেছে, যতদিন রমণীকুল
কোমল বালিশে মাথা রাখবে, যখন অদৃশ্য
পরীদল তার সেবা করবে, তত দিন তার কাঁচি চিরজাগরূক থাকবে। এখানে অসহায় রমণীর সরলতা
আর কোমলতাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
নিয়তি যেন তাদের গড়েছে শুধু ব্যর্থ হয়ে হাহাকার করা আর অশ্রুপাত করার জন্য। নিয়তির নির্দেশেই যেন বেলিন্দার
দুর্দশা ঘটার পর পালাতে থাকে তার
চারপাশে ঘিরে থাকা অশরীরী সব প্রহরী। ক্লারিসা সান্ত্বনার ছলে যেন বেলিন্দাকে নিয়তির সেই
অমোঘ নির্দেশেরই কথা শোনায়।
No comments:
Post a Comment