The Rape of the lock - Alexander Pope - Canto 1 Bangla Translation |
The Rape of the lock
Alexander Pope
Canto 1 - Bangla Translation
দি রেপ অব দি লক - ১ম সর্গ বাংলা অনুবাদ
কত যে অলুক্ষণে ঘটনা ঘটে প্রেমের কারণে,
সামান্য বিষয় ধরে তৈরি হয় প্রচণ্ড সংঘাত
এ কাব্যগাথা মোর ভাবনার উৎস ক্যারিলের তরে,
বেলিন্দাও যদি এটা দেখে একটু সুনজরে
জানি এটা হালকা বিষয় কিন্তু কাব্য তো মহান
যদি সেই রমণী আর পুরুষটি করে উৎসাহ প্রদান।
বলো মোরে “মিউজ”, কেন করল হেনস্থা
অভিজাত সেই পুরুষ শাস্ত এক রমণীকে?
বলো “মিউজ” এ কেমন উদ্ভট ব্যাপার
রূপবান এই যুবাকে কেন করল অবহেলা এ যুবতী
নিরীহ এই পুরুষ কী করে জড়াল বিপাকে
কোমল হৃদয় তার কী করে ধরে এত ক্রোধের বারুদ?
ভীত কম্পিত সূর্য ফেলে তার শুভ্র আলোক,
পর্দার ফাক
দিয়ে
বেলিন্দার শুভ্র বিছানায়;
খুলতেই বেলিন্দা নয়ন, ম্লান হল দিনের আলোক।
এই ভোরে আড়মোড়া দিয়ে কুকুরেরা ঘুম হতে জাগে,
রাতজাগা প্রেমিকের ঘুম ভাঙে দুপুরবেলায়,
দরোজার ঘন্টি বাজাল বেলিন্দা তিন তিনবার
মেঝেতে বাজল বেলিন্দার জুতোর আওয়াজ,
সময় জানতে বেলিন্দা ঘড়ির চাবিতে দিল চাপ,
সময় জানাতে জাগল ঘড়িতে ধাতব আওয়াজ
বেলিন্দা ফের রাখল মাথা নরম বালিশে
সহচরী ‘সিলফ’ তাকে দিল কোমল নিদ্রার
বিলাস
নিদ্রা চোখে দিল স্বপ্নের মায়া এঁকে
জন্মদিনের উৎসবের রাতে কাছে এল এক সুপুরুষ যুবা
ওকে দেখে স্বপ্নের মাঝেও বেলিন্দার গাল হল লজ্জায় লাল
বেলিন্দার কানে কানে চুপি চুপি সে বলে যায়-
অনিত্য জগতে অমর হে রূপসী নারী, শুধু তোমার পাহারায়
রত আছে কত শত শত অলৌকিক জীবসত্তারা।
বেলিন্দা, তোমার যৌবন স্বপ্নে লাগে নতুন পরশ
অগণিত অলৌকিক জীবসত্তারা সেবা দেয়
আর দীক্ষা দান করে তোমায় ঋত্তিকের মতো।
চন্দ্রালোকে আধো আলো আধো ছায়ায় রূপসী পরীদল
যেন সবুজাভার মাঝে রুপালি আলোক নিয়ে দৃশ্যমান
কুমারী রমণীকুল পরিবৃত হয়ে দেবদূতগণ
অবির্ভূত হয় স্বর্গীয়
পুষ্প
মুকুটে
গুঁজে
শোনায় ঋত্তিকের
মতো
বাণী
তোমার
আত্মাকে
শোনো তুমি, আর বিশ্বাস করো যা বলছি আমি ।
বুঝে নাও তুমি, তোমার গুরুত্ব কতখানি
নিচতর ভাবনায় ডুবে তোমার দৃষ্টিকে কোরো না আবদ্ধ
কত যে সত্য আছে লুকায়িত জ্ঞানী আর দার্শনিকদের মাঝে
সে সবই শুধু কুমারী আর শিশুদের মাঝে প্রকাশে।
তবুও তাতে সন্দেহ করে জ্ঞানীজন আর বিশ্বাসীগণ
অবোধ আর শিশুরা করে সে সবে বিশ্বাস।
এইটুকু জেনো তোমার চারপাশ ঘিরে আছে পরীদল
আকাশের নিচে ঘুরে ফেরে হালকা হাওয়ায় তারা
অলৌকিক সত্তারা উড়ে হালকা হাওয়ায়
উড়ে নাটমন্দিরে আর তোমার আসনের পরে।
আর ঘুরেফিরে ওড়ে তোমার বাগিচার সীমানায়।
ভেবে দেখো কত না অনুচর তোমার পাশে আর আকাশে বাতাসে
তোমার দুই সেবিকা আর সখের চেয়ারখানা
অনেক তুচ্ছ এসব অলৌকিক বিষয়ের কাছে।
ঠিক যেন তোমারই মতো কিংবা আদ্যিকালের রূপসীদের মতো
সেইসব রূপসীর শরীরে একদা সঞ্চিত রূপরাশির
ক্রমে বদল ঘটে আরেক কোমল রূপে
ক্রমে এই মর্ত্যের জড়রূপ হতে অলৌকিক রূপ নিল তারা
এমন ভেবো না নারীর বিশ্বাস যখন চলে যায়
তার সাথে দূর হয়ে যায় সকল গর্ব আর অহঙ্কার
তবুও সে ফেলে যায় কিছুটা গর্ব আর রূপের বাহার।
তাস না খেলেও দেখে তারা তাসের খেলা।
জীবিতকালেও রথের উপরে
ঝিলিক
দেয়
তার
উল্লাস
মরণের পরেও সে তাসের খেলায় রাখে বাজি ।
রূপসী নারী তার সকল অহঙ্কার নিয়ে যখন ছেড়ে যায় পৃথিবীর মায়া
আত্মা তার ফিরে যায় ঠিক আগের জায়গায়
খাণ্ডার রমণীকুল হয় আগুনের পরী,
পরিচিত হয় সে হিংস্র বাঘিনী নামে।
আর সরলা রমণীকুল হয় জলের ধারা
শত পরীদল সাথে মিশে করে অমৃতসুধা পান।
মুক রমণীরা যক্ষিনীর রূপ ধরে ডুব দেয় পাতালপুরে
ঘোরে সদা তারা এ পৃথিবীতে ঘটাতে দুর্যোগ।
রঙ্গপ্রিয় রমণীরা হয়ে যায় পরী,
আকাশপথে তারা করে বিচরণ কত না মায়ায়।
এটা রেখো মনে, যাদের থাকে সতীত্ব হারানোর ভয়
তারা সদা এর তরে মানবকে করে অবহেলা,
তাদের চারপাশ ঘিরে থাকে ভৌতিক ছায়া
অমর সে ভৌতিক জীবেরা নিজের ইচ্ছেমতো
তাদের মাঝে ঘটায় লৈঙ্গিক পরিবর্তন
মোহনীয় নৃত্য উৎসব কিংবা মুখোশ পরা নাচের নেশায়
যখন রূপসীর সতীত্ব যায় যায়
অবিশ্বাসী বন্ধুর উচ্ছল প্রেমাবেগে,
দিবালোকে চোখের ইশারা আর আঁধারে চুপে চুপে
উন্মত্ত যখন আবেগ আর কামনা ভীষণ আকুল
ধীরলয়ে যখন বাজে সংগীত, জ্বলে ওঠে নৃত্যের শিখা
তখন চারপাশ ঘিরে থাকা অলৌকিক জীবেরা সব জেনে ফেলে
সম্মান কথাটি তো শুধু সাধারণ মানুষের তরে
অলৌকিক জীবেরাই তখন রুপসীর প্রহরায়।
কিছু রূপসী প্রকাশ করে না তাদের রুপাস্তর
তারা জানে এর ফলে তারা হয়ে যাবে অলৌকিক পরী
এটা জেনে বড়োই গর্বিত হয় তারা, বাড়ে অহঙ্কার,
আর এরই তরে তারা করে প্রত্যাখ্যান, ভালোবাসায় দেয় অবহেলা,
শূন্য মাথায় তাদের ভর করে স্বেচ্ছাচারিতা
ভাবে তারা বড়ো বড়ো ডিউক আর ধনীদের কথা
যাদের সাথে সদলে চলে সদা শত অনুচর
কত না উপাধি দ্বারা ভূষিত সেইসব জন
কত না বিনয় আর সম্মানের সম্ভাষণ শোনে তারা
এতেই মজে যায় রূপসী রমণীর মন,
আর রূপসী রঙ্গপ্রিয়ার দৃষ্টি থাকে সেইদিকে
আর তাদের কোমল গালে ফোটে রক্তিমাভা
কোমল হৃদয়ে তাদের ঠাই নেয় রাজকুমার
ভুবনমোহিনী সেই রমণীর যখন ঘটে পদস্থলন
তার সহচরী পেত্নীরা তাকে দেখায় পথের দিশা,
অতীতের রঙ্গ তামাশা সব ছুড়ে ফেলে
কোমলমতি সে রমণী এদেরই বৃত্তে ঘুরে ফেরে।
প্রেমিকের রসালাপে মুগ্ধ হয় না রমণী হৃদয়
যদি সে হৃদয় বাঁধা
পড়ে
থাকে
পেত্নীর
জটাজালে!
রমণীয় অঙ্গের প্রতিটি অংশ হতে ফুটে ওঠে ছলনার লীলা
কত না বিচিত্র হৃদয় তাদের, যেন কোনো খেলনার দোকান।
যেথা পরচুলার সাথে পরচুলা আর তরবারি কোষের সাথে তরবারি কোষের নেই বিরোধিতা
প্রেমিক অন্য প্রেমিককে করে তাড়া, এক ঘোড়ার গাড়ি অন্য গাড়িকে।
অসহায় নিপীড়িত নশ্বর মানবেরা একে বলে অস্থিরতা
ওহ, সত্য বিষয়ে অন্ধ সবাই, সবই অলৌকিক জীবের লীলা।
আমিও এদেরই মতো তোমার পাহারায় নিয়োজিত
মোর নাম আ্যারিয়েল, বড়োই সচেতন প্রহরী আমি।
সম্প্রতি আমি ভ্রমেছি আকাশপথের বুনো হাওয়ায় হাওয়ায়
স্বচ্ছ দর্পণরূপী ঘূর্ণায়মান তারাদের সাথে সাথে
দেখলাম, আহা, যেন ভয়াল কিছু আসছে এগিয়ে
দেখলাম সবই দিন শেষে সমুদে সূর্য অস্ত যাওয়া অবধি।
ওগো মহীয়সী কুমারী নারী, সাবধান, সতর্ক করছি তোমায়
তোমার সহচরী দলও জানাতে পারে এই সতর্কবাণী
অতএব, নারী, সতর্ক হও, সাবধান থেকো পুরুষের থেকে।
বলতেই কম্পিত হলো সারমেয়, বেলিন্দা তখন ঘুমে
জাগাল সে তার কর্ত্রীকে
জিহ্বার
ঘষায়।
বেলিন্দা, শোনো, এটা যদি সত্য হয়
নয়ন মেলে প্রথমেই দেখে সে প্রণয়লিপিকা;
হৃদয়ে জাগে অন্তহীন হাহাকার, সম্মোহিত হয়ে সমাপ্ত হলো পত্রপাঠ
আর তাতে তোমার সকল স্বপ্ন আর ভাবনার হলো অবসান।
আর খুলে গেল সকল সাজসজ্জার বাক্সপেটরা
যার প্রতিটি রুপালি পাতে সাজানো কত না রহস্যমায়া।
প্রথমেই শ্বেতবসনা দেবীর(নারীর) প্রার্থনা সারা হলো
প্রসাধনী মেখে খোলা মাথায়।
দর্পণে দেখা দিল এক অলৌকিক প্রতিবিম্ব
সে দর্পণে নয়ন মেলে নীরবে মগ্ন সে
বসে আছে তার পাশের বেদীতে যাজক রমণী
শুরু হলো গার্ভীর্য ভরা কত না আচার।
খুলে গেল অজস্র সম্পদের ভাণ্ডার
জড়ো হল সেথা সারা জগতের উপহার।
প্রতিটি উপহার হতে খুঁজে নেয় একটি একটি করে সযতনে
দেবীকে সাজাতে মনোহর উপহারে।
এই পেটরাতে আছে ভারতীয় মণিমুক্তারাজি
এই পেটরা হতে বেরোয় আরবীয় সুগন্ধির সৌরভ
এই তো এখানে কচ্ছপ আর হস্তি একসাথে
মিশেছে তার শ্বেতশুভ্র
চিরুনিতে
।
এইখানে সাজানো রয়েছে উজ্জ্বল টিপগুলো
পাফ, পাউডার বাইবেল আর প্রণয়লিপি।
মনোহর রূপসী সজ্জিত এখন সকল সাজে
ক্ষণে ক্ষণে চমকায় বেলিন্দার মোহনীয় দ্যুতি
বিলোল হাসিতে ফোটে কত না বিস্ময়
মুখমওণ্ডলে ফুটে ওঠে অপরূপ এক জ্যোতি
নীরবে সে দেখে আয়নায় লাজনম্র পবিত্র
আভা
বিজলির ছটা সদা চঞ্চল দুচোখের দৃষ্টিতে।
সহচরী পরীদল ঘিরে আছে বেলিন্দাকে
এরা কেউ মাথায় কেউবা আবার কেশগুচ্ছের সিথিমূলে
কেউবা তার আঁচল করে পরিপাটি কেউবা গাউন করে পাট
No comments:
Post a Comment