Poetics - Aristotle - Chapter - 16 - Different Kinds of Recognition - Bangla Translation and Explanation |
Poetics - Aristotle - Chapter - 16
Different Kinds of Recognition
Bangla Translation and Explanation
ষোড়শ
পরিচ্ছেদ - বিভিন্ন ধরনের পূর্ব পরিচয় জ্ঞান
পূর্ব পরিচয় জ্ঞান বা পরিচয় আবিষ্কার বলতে আমি কি বুঝি, তা ইতিপূর্বেই ব্যাখ্যা করেছি[১১ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য]। বিভিন্ন ধরনের পরিচয় লাভের মধ্যে
প্রথমেই
যেটির
কথা
উল্লেখ
করতে
হয়,
সেটিই
হচ্ছে
সবচেয়ে
কম
শৈল্পিক;
অথচ
উদ্ভাবনী
ক্ষমতার
দৈন্যবশতঃ কবিরা প্রায় সর্বদা এটিই কাজে লাগিয়ে থাকেন। এ হচ্ছে চোখে পড়ে এমন চিহ্ন বা নিদর্শনের সাহায্যে পরিচয় লাভ। এই চিহ্নসমূহের
কতকগুলো
জন্মসূত্রে প্রাপ্ত, যেমন মাটি থেকে গজানো ব্যাক্তিদের অঙ্গের বর্শাফলক চিহ্ন১ অথবা
তারকা
চিহ্ন২ যেমনটি কার্সিনাস৩ তাঁর থায়েস্টিস নাটকে
ব্যবহার করেছেন। কতকগুলো
চিহ্ন
আবার
জন্মের
পরে
পাওয়া। শেষোক্ত এই চিহ্নগুলো শরীরে অঙ্কিত ক্ষতচিহ্ন হতে পারে, কণ্ঠহারের মত শরীর-সংলগ্ন কোন বাহ্যবস্তু হতে পারে, অথবা,
একটি
ভিন্ন
ধরনের
দৃষ্টান্তই দেয়া যাক, টাইরো৪ নাটকে
উল্লিখিত
সেই সিন্দুকটির মত বস্তু হতে পারে, যার সাহায্যে সেখানে পরিচয় লাভ হয়েছে। এদেরও আবার অপেক্ষাকৃত ভাল ও মন্দ দু’রকম প্রয়োগই সম্ভব। অডিসিয়াসেরও[৮ম পরিচ্ছেদের টিকা দ্রষ্টব্য] শরীরের ক্ষতচিহ্ন এর উদাহরণ। এই ক্ষতচিহ্নের সাহায্যে অডিসিয়াসের পরিচয় আবিষ্কার ব্যাপারটি তার ধাত্রীর ক্ষেত্রে ঘটেছে একভাবে, শূকরপালকদের ক্ষেত্রে ঘটেছে অন্যভাবে৫। চিহ্নকেই প্রমাণের উপায় হিসেবে গ্রহণ করে যে পরিচয় লাভ হয় তা কিন্তু শৈল্পিক দিক থেকে অনেকটাই হেয়; বস্তুতঃ
এ
ধরনের
যাবতীয়
পরিচয় লাভ সম্পর্কেই এ কথা সত্য। যে ধরনের পরিচয় লাভ ভাগ্যের আকষ্মিক মোড় পরিবর্তনের ফলে ঘটে, তাই উৎকৃষ্টতর পরিচয় লাভ বলে বিবেচিত হয়, যেমন ঘটেছে অডিসি মহাকাব্যে স্নানের দৃশ্যে৬। এরপর
আসে
সেই
ধরনের
পরিচয় লাভের কথা, যা কবি নিজের খেয়াল-খুশিমত উদ্ভাবন করেন; আর ঐ কারণেই তা অশৈল্পিক বলে বিবেচিত হয়। টোরিসে ইফিজেনিয়া[বিস্তারিত জানতে ১১ তম অধ্যায়ের শেষ টিকা দ্রষ্টব্য] নাটকে অরেস্টিস
কর্তৃক
আত্মপরিচয়
দানের
ব্যাপারটা
এই ধরনের
পরিচয় লাভের দৃষ্টান্ত।
এখানে
ইফিজেনিয়া
নিজের
পরিচয়
প্রকাশ
করেছে একটি
পত্রের
মাধ্যমে;
আর
অরেস্টিসকে
দিয়ে
কবি
যা
বলিয়ে
নিয়েছেন,
তা
তার নিজেরই
প্রয়োজনে,
কাহিনীর
প্রয়োজনে
নয়৬-১। সুতরাং
এখানে
যে
ক্রুটি
দেখা
যাচ্ছে
তা প্রথমে
উল্লেখিত
ক্রুটিরই
সগোত্রীয়; কারণ
অরেস্টিস
ইচ্ছা
করলে
কিছু
নিদর্শন
নিয়েও হাজির
হতে
পারত। সফোক্লিসের [৩য় পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য]
টেরেউস৭ নামক নাটকে
মাকুর
শব্দ
অনুরূপ
আর একটি দৃষ্টান্ত তৃতীয়
আর
এক
ধরনের
পূর্ব পরিচয় লাভ স্মৃতির
উপরে
নির্ভরশীল। কোন
কিছু
দর্শন
বা শ্রবণের
ফলে
মানুষের
মনে
তৎসম্পর্কিত
চেতনা
বা
উপলব্ধি
জাগলেই,
এ
ধরনের পরিচয় লাভ হয় বলা চলে। ডিকেইজেনেসের৮ সাইপ্রিয়ানস৯ নাটকে
নায়ক চিত্রদর্শন করেই ডুকরে কেঁদে
ওঠে,
আবার অ্যালকিনুসের কাহিনীতে আমরা বীণা বাদকদের বীণাবাদনের শব্দ শুনে অতীত স্বরণ করে অডিসিয়াসকে কাঁদতে দেখি। এই ভাবেই তাদের দুজনেরই পরিচয় লাভ ঘটে। চতুর্থ প্রকারের পরিচয় জ্ঞান হচ্ছে যুক্তিবিচারের মাধ্যমে পরিচয় লাভ, যেমনটি হয়েছে কোয়িফোরী১০ নাটকে:
“আমারই মত কেউ এসেছে; অরেস্টিস ছাড়া কেউ তো আমার মত নয় : সুতরাং অরেস্টিস্ই এসেছে”। আর একটি উদাহরণ হল তার্কিক পণ্ডিত পোলিইডাস১১ ‘ইফিজেনিয়া’ নাটকে
যেভাবে
পরিচয় লাভ হয়েছে
বলে
নির্দেশ
করেছেন। কারণ
এখন
এটা
খুবই
সম্ভব
যে
অরেস্টিস মনে মনে এরূপ
চিন্তা করে থাকবে:
আমার ভগিনীকে
এই
বেদীমূলে
হত্যা
করা
হয়েছিল,
আমাকেও
তার
মতই
মৃত্যু
বরণ
করতে হবে।
তারপর
আসে
থিওডেক্টাসের১২
টাইডিউস
নাটকের
সেই
দৃষ্টান্ত,
যেখানে নায়ক
বলে
: ‘আমি
এসেছিলাম
পুত্রকে
খুঁজে
বের
করতে;
এসে
আমায়
নিজের প্রাণটাকে
দিতে
হল’। অথবা যেমন,
ফিনেইডি১৩ নাটকে
দেখতে
পাই,
একটি
বিশেষ স্থান
দেখেই
স্ত্রীলোক গুলো
ধরে
নিয়েছিল
যে
তাদের
এ
স্থানেই
মরতে
হবে।
কারণ এখানেই
যে
জন্মের
পর
মুহূর্তেই
তাদের
ফেলে
রাখা
হয়েছিল
মৃত্যুমুখে
প্রেরণের জন্য১৪। তারপর এক
ধরনের
কল্পনা-সংমিশ্র
পরিচয় লাভও হতে
পারে,
যা
কিনা
সংশ্লিষ্ট
পাত্র-পাত্রীদের
একপক্ষের
প্রতারণাপূর্ণ
অনুমানের ফলেই
দেখা
দেয়,
যেমন
হয়েছে
দূতের ছদ্মবেশে অডিসিয়াস১৫ নামক
নাটকে।
এখানে
অডিসিয়াসকে
বলতে
শোনা
যায়
যে,
সে ধনুকখানা
চিনতে
পারবে,
যে
ধনুক
সে
দেখেই
নি।
কিন্তু
এর
থেকে
কেউ
যদি
এরূপ মনে
করে
যে
আবারও
ঐ জিনিস
দেখলেই
চিনতে
পারবে
(ভাবটা
এই
যে
সে
একবার
তা দেখেছিল)
তা
হলে
সেটা
ভ্রান্তিপূর্ণ অনুসিদ্ধান্তই হবে১৬। যাবতীয় পরিচয় জ্ঞানের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট পরিচয় জ্ঞান অবশ্য তাই, যা ঘটনার নিজস্ব ধারা থেকেই দেখা দেয়; আর
তা
তখনই
তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যখনই নাটকীয় মহা-বিষ্ময় দেখা দেয় সম্ভাব্য কোন ঘটনার সূত্র ধরে, যেমনটি
হয়েছে
সফোক্লিসের ঈডিপাস[১১শ পরিচ্ছেদ ও এর পাদটিকা দ্রষ্টব্য] নাটকে; হয়েছে
ইফিজেনিয়াতেও;[Iphigenia in Tauris]কারণ ইফিজেনিয়া তার বাড়িতে চিঠি পাঠাতে চাইবে, এ ছিল খুবই সম্ভাব্য ব্যাপার[একাদশ পরিচ্ছেদের টিকা দেখুন]। এই শেষোক্ত ধরনের পরিচয় লাভই কেবল
ক্ষতচিহ্ন, কণ্ঠহার ইত্যাদির মত কৃত্রিম উপায়ের সাহায্য ছাড়া ঘটতে পারে। এর পরই হল যুক্তিবিচারের মাধ্যমে পরিচয় লাভের স্থান।
ব্যাখ্যা ও টিকা
১। Aristotle এখানে জন্মসূত্রে প্রাপ্ত চিহ্নের সাহায্যে পরিচয় জ্ঞানের উদাহরণস্বরূপ সম্ভবতঃ Euripides এর Antigone নাটকে উল্লিখিত কোন দৃষ্টান্তের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। বাংলায় পৃথিবীবক্ষ থেকে উত্থিত বা রোপিত মানুষ সম্পর্কে বিস্তারিত।
২। গ্রীক
পুরাণের
কল্পকাহিনী অনুযায়ী জানা যায় যে ট্যান্টেলাস [Tantalus] এর ছেলে পিলোপস [Pelops]-এর বংশধররা উত্তরাধিকার হিসাবেই যেন অঙ্গে তারকাচিহ্ন ধারণ করত । কথিত আছে একবার ট্যান্টেলাস নিজের শিশুপুত্র পিলোপসকে হত্যা করে, তার মাংস রান্না করে দেবতাদের পরিবেশন করেছিলেন। এ মাংস যে কোন পশুর নয়, তা দেবতারা বুঝতে পারেন কিনা তা পরীক্ষা করার জন্যই তিনি এরূপ করেছিলেন। ডিমিটার[Demeter] নামক দেবী অসাবধানতাবশত কাঁধের দিকের মাংস কিছুটা খেয়ে ফেলেছিলেন; অন্য দেবতারা কিন্তু ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাঁরা দৈবী ক্ষমতার বলে পিলোপসকে পুনরুজ্জীবিত করলেন। তাঁর শরীরের যে অংশের মাংস ডিমিটার খেয়ে ফেলেছিলেন, তা পূরণ করে দেওয়া হল হাতির দাঁত থেকে নির্মিত তারকা আকৃতির কোন বস্তুদিয়ে। পিলোপস-এর বংশধররা যে অঙ্গে তারকাচিহ্ন ধারণ করত তার রহস্য এখানেই ।
৩। Carcinus - কার্সিনাস খ্রীষ্টপূর্ব চতুর্থ
শতাব্দীর
অন্যতম
প্রসিদ্ধ
গ্রীক
নাট্যকার
কার্সিনাস সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। অ্যারিস্টটলের পোয়েটিক্স - Poetics ও রেটরিক্স – Rhetoric -
গ্রন্থদয়ে এবং প্লুটার্কের [Plutarch] - রচনায় তাঁর
রচিত
গ্রন্থ
সম্পর্কে
সামান্য
তথ্য
পাওয়া। কার্সিনাসের পিতার নাম Xenocles এবং পিতামহের নাম কার্সিনাস[Carcinus of Agrigentum] ছিল বলে
জানা
যায়। একজন
ট্র্যাজিক কবি বলে পরিচিত কার্সিনাস, শোনা যায়, ১৬০ খানার মত নাটক রচনা করেছিলেন এবং এগার বার নাট্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। তিনি সাইরাকিউজের [Cyracuse] রাজা ছোট
ডায়োনিসিয়াসের [DionesusThe Younger] দরবারে দীর্ঘদিন অবস্থান করেছিলেন , তাঁর নাটকগুলোর মধ্যে থিয়েন্টিস[Thyestes], এম্ফিয়ারউস[Amphiaraus], মিডিয়া[Medea]
ইত্যাদি
কয়েকখানির নাম মাত্র জানা যায়। অ্যারিস্টটল তাঁর
কাব্যনির্মাণকলা গ্রন্থে ষোড়শ এবং সপ্তদশ পরিচ্ছেদে যথাক্রমে থিয়েস্টিস এবং এম্ফিয়ারউস এই দুটি নাটকের কথা উল্লেখ করেছেন। এর বেশী এ সম্পর্কে আর কিছু জানা যায় না।
৪। Tyro - টায়রো
বিখ্যাত
গ্রীক
নাট্যকার সফোক্লিস
[Sophocles] বিরচিত একটি নাটকের নাম। এখানে আরিস্টটল পসিডনের [Poseidon] ঔরসে টায়রোর গর্ভে যে যমজ সন্তানদ্বয় জন্মে ছিল তাদের পরিচয় লাভ - ব্যাপারটা কিভাবে ঘটেছিল, তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। নলখাগড়ার ঝোপের মধ্যে একটি দোলনায় শায়িত শিশু মুসার ন্যায়, ইনিপিউস নদীতে ভাসমান একটি ছোট সিন্দুকের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল টায়রোর দুই শিশু সন্তানকে। সিন্দুকটিই এখানে পরিচয় লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
[Sophocles] বিরচিত একটি নাটকের নাম। এখানে আরিস্টটল পসিডনের [Poseidon] ঔরসে টায়রোর গর্ভে যে যমজ সন্তানদ্বয় জন্মে ছিল তাদের পরিচয় লাভ - ব্যাপারটা কিভাবে ঘটেছিল, তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন। নলখাগড়ার ঝোপের মধ্যে একটি দোলনায় শায়িত শিশু মুসার ন্যায়, ইনিপিউস নদীতে ভাসমান একটি ছোট সিন্দুকের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল টায়রোর দুই শিশু সন্তানকে। সিন্দুকটিই এখানে পরিচয় লাভের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
৫। ইউরিক্লিয়া[ Eurycleia]
কর্তৃক
অডিসিয়াসের[Odysseus]
পরিচয় জ্ঞান
এবং
শুকরপালকগণ কর্তৃক অডিসিয়াসের পরিচয় লাভের ব্যাপারটি যথাক্রমে অডিসির উনবিংশ এবং একবিংশ সর্গে বণিত হয়েছে। প্রথমোক্ত ক্ষেত্রে
পরিচয় লাভ হয়েছে
ঘটনার
নিজস্ব
ধারা
থেকে।
অডিসিয়াস
তার নিজ
প্রাসাদে
এসে
উপস্থিত
হয়েছিল
দীর্ঘকাল
পরে,
তাও
আবার
ছদ্মবেশে। তখনকার দিনের সর্বোত্তম সামাজিক প্রথানুযায়ী গৃহপরিচারিকার উপর, দায়িত্ব পড়েছিল তার গোসল তদারক করার। এই গৃহ-পরিচারিকা অডিসিয়াসের প্রবীণা ধাত্রী ইউরিক্লিয়া ছাড়া আর কেউ ছিল না। অডিসিয়াসকে স্নান
করানোর
কালে
স্বাভাবিক ভাবেই তার উরুতে পুরাতন ক্ষতচিহ্ন দেখতে পেয়ে ইউরিক্লিয়া তাকে চিনতে পেরেছিল। এটি সর্বোত্তম ধরনের পরিচয় লাভ, কারণ ঘটনার নিজস্ব ধারায় এ পরিচয় লাভ ঘটেছে। শূকরপালকদের ক্ষেত্রে এই
পরিচয় লাভ ব্যাপারটি ঘটেছে অন্যভাবে । অডিসিয়াস নিজেই এ ক্ষতচিহ্নটি তাদের কাছে অবারিত করে সোজাসুজি আত্মপরিচয় ঘোষণা করেছিল । অডিসিউসের পরিচয় এ চিহ্ন দ্বারা সম্পর্কিত হওয়ায় শুকরপালকেরা তাকে চিনতে পেরেছিল। শূকরপালকদের ক্ষেত্রে পরিচয় লাভের এ
ব্যাপারটি নিতান্তই অশৈল্পিক বলে বিবেচিত হয়। কারণ এটি উদ্ভাবিত হয়েছে কবির খেয়ালখুশি মত। এটি ঘটনার স্বাভাবিক পরিণতি নয় ।
৬। অতিথি পরিচর্যার অঙ্গরূপে ছদ্মবেশী অডিসিয়াসকে স্নান করাতে গিয়ে ধাত্রী ইউরিক্লিয়া যেভাবে তার উরুতে পুরাতন ক্ষত চিহ্নটি দেখে তাকে চিনতে পেরেছিল, তা ছিল নিতান্তই একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। অথচ ব্যাপারটি কাহিনীর নিজস্ব বিকাশধারার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই এটি নিঃসন্দেহে উৎকৃষ্টতর পরিচয় লাভ।
৬-১। একাদশ
পরিচ্ছেদের
পাদটীকা
দ্রষ্টব্য।
ইফিজেনিয়ার[Iphigenia]
নিকট
আপন
কাহিনীর
সত্যতা প্রমাণের
জন্য,
অরেস্টিস[Orestes]
সোনালী
মেষ-পশমের
সাহায্যে
তার
সূচীকর্মের
কথা
এবং বাড়িতে
তারই
শয্যাকক্ষে
রক্ষিত
পিলোপস [Pelops]-এর
প্রাচীন
বর্শাটির
কথা
উল্লেখ
করে।
এটা চিহ্ন
বা
নিদর্শন
উপস্থাপিত
করারই
শামিল
।
৭। সফোক্লিস এর টেরেউস[Tereus – Play bySophocles] নাটক
সম্পর্কে
আরিস্টটলের Poetics -গ্রন্থে যে
সামান্য
তথ্য
সরবরাহ
করা
হয়েছে,
তার
বেশী
আর
কিছু
জানা
যায়নি।
এ
নাটকে
দেখা
যায়,
ফিলোমেলা [Philomela] ভগিনী
প্রকনির[Procne] কাছে
টেরেউস[Tereus]
কর্তৃক
তার
উপর
পাশবিক
অত্যাচারের কাহিনী
একটি
সূচীকর্ম-সৃষ্ট
ছবির
সাহায্যে
প্রকাশ
করেছে।
অত্যাচারী
টেরেউস
তার
জিভও কেটে
নিয়েছিল।
তাই
এই
অভিনব
পন্থায়
তাকে
তার
নিগ্রহের
কাহিনী
বর্ণনা
করতে হয়েছিল!
৮। Dicaeogenes - ডিকেইজেনেস - তিনি
সম্ভবতঃ
খ্রীস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর শেষার্ধে এবং চতুর্থ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বর্তমান ছিলেন। তার জীবন সম্পর্কে বিশেষ কোন তথ্য পাওয়া যায় না। ট্র্যাজেডি রচয়িতা বলে পরিচিত ডিকেইজেনেসের দুটি মাত্র রচনার নাম জানা যায়, মিডিয়া[Medea]
এবং
সাইপ্রিয়ানস[ Cyprians ]।
আরিস্টট্ল Poetics
গ্রন্থে
সাইপ্রিয়ানস নাটকের পরিচয় লাভের দৃশ্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া নাটকটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। পরিচয় লাভের দৃশ্যে
দেখা
যায়
নায়ক
টিউসার
ছদ্মবেশে
থাকলেও,
তাকে
চেনা গিয়েছিল
এই
জন্যে
যে,
সে
তার
পিতা
টেলামনের[Telamon]
ছবি
দেখে
ডুক্রে
কেঁদে
উঠেছিল
ব্যাপারটা ঘটেছিল স্যালামিস[Salamis] নামক স্থানে ।
৯। অডিসি[Odyssey]
মহাকাব্যের অষ্টম সর্গে অ্যালকিনুসের[Alcinous] কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। গ্রীক পুরাণ মতে অ্যালকিনুস ছিলেন
স্কিরিয়ার ফিয়াসিয়ানদের রাজা। তিনি ট্রয়
যুদ্ধের
অন্যতম
নায়ক অডিসিয়াসকে
স্বদেশ
প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করেছিলেন।
১০। এস্কাইলাস[Aeschylus] রচিত অরেস্টিস শীর্ষক নাট্যত্রয়ীর দ্বিতীয় নাটক হচ্ছে কোয়িফোরী[Choephori]। কোয়িফোরী শব্দের অর্থ দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিতব্য পানিয় এর বাহকগণ। এ নাটকে অরেস্টিস[Orestes] কর্তৃক অরেস্টিসের পিতৃহত্যাকারী মাতা
ক্লাইটেমনেস্ট্রা[Clytemnestra] এবং তার অবৈধ-প্রেমিক ইজিস্থাসের[Aegisthus] উপর প্রতিশোধ গ্রহণের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। Poetics গ্রন্থের বর্তমান পরিচ্ছেদে অ্যারিস্টটল- অরেস্টিসের পরিচয় লাভের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছেন। ইলেক্ট্রা- পিতা
আ্যাগামেমননের কবরের উপর একগুচ্ছ চুল দেখতে পেয়েই বুঝতে পেরেছিল তা অবশ্যই অরেস্টিসের হবে। কারণ তার মত সন্তানই কেবল পারে পিতার কবরে এইরূপ নিবেদন করতে। এখানে পরিচয় লাভ ঘটেছে অবরোহ পদ্ধতিতে যুক্তিবিচারের ফলে।
১১।Polyidus - তার্কিক পণ্ডিত
পোলিইডাস
সম্পর্কে
বিশেষ
কিছু
জানা
যায়
না।
Poetics
গ্রন্থে অ্যারিস্টটল দুইবার তাঁর উল্লেখ করেছেন। একবার ১৬শ
পরিচ্ছেদে এবং আর একবার ১৭শ পরিচ্ছেদে। পোলিইডাস কোন গ্রন্থ রচনা করেছিলেন কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। টোরিসে ইফিজেনিয়া নাটকে ইফিজেনিয়া কর্তৃক অরেস্টিসের প্রত্যভিজ্ঞান ব্যাপারটা যেভাবে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পোলিইডাস এরূপ মত প্রকাশ করেছেন যে অরেস্টিস কে যখন বলি দেওয়ার জন্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন সে হয়ত তার এবং তার
বোনের
অদ্ভুত
পরিণাম
সাদৃশ্যের
কথা
আপনা-আপনিই
বেশ
স্পষ্টভাবে
আক্ষেপ সহকারে
বলছিল;
আর
ঐ ভাবেই
ইফিজেনিয়ার
কাছে
তার
পরিচয়
প্রকাশ
পেয়েছিল। পোলিইডাসের
এ
ব্যাখ্যা
নাট্যকারসুলভ
নয়।
১২। Theodectes - তিনি
লিসিয়ার[Lycia]
অন্তর্গত ফ্যাসালিয়ায়[Phaselis]
জন্মগ্রহণ
করেছিলেন। থিওডেক্টাস এর জীবনকাল খ্রীষ্টপূর্ব ৩৭৫
অব্দ থেকে
৩৩৪
অব্দ
পর্যন্ত। তিনি
প্রধানতঃ
এথেন্সেই বাস করতেন।
প্লেটো[Plato],
ইসোক্রেটিস[Isocrates]
এবং
আরিস্টটলের
কাছে
তিনি
শিক্ষালাভ
করেছিলেন
এবং একজন
বাগ্মীরুপে খ্যাতি
অর্জন
করেছিলেন
।
তিনি
একজন
ট্র্যাজেডি
রচয়িতা
ছিলেন
এবং শোনা
যায়,
পঞ্চাশ খানার উপর
নাটক
রচনা
করেছিলেন।
তিনি
তের
বার নাট্যপ্রতিযোগিতায়
অংশ
গ্রহণ
করে
আট
বার
জয়ী
হয়েছিলেন।
মাত্র
একচল্লিশ
বছর
বয়সে তিনি
পরলোক
গমন
করেন।
আরিস্টটলের
ছাত্র
থাকাকালীন
তিনি
আলেকজাণ্ডারের সহপাঠী ছিলেন বলে শোনা
যায়।
তাঁর
নাটকগুলোর
মধ্যে
লীনসিয়াস[Lynceus], ফিলোক্টেটিস[Philoctetes], টাইডিউস[Tydeus]
ইত্যাদি
কয়েকখানার
নাম
মাত্র
জানা
যায়
।
অ্যারিস্টটলের
Poetics - গ্রন্থে
পরিবেশিত
সামান্য
তথ্য
ছাড়া
এ
নাটকগুলো
সম্পর্কে
বিশেষ
কিছু
জানা যায়
না। অ্যারিস্টটল
আলোচ্য
গ্রন্থের
একাদশ
পরিচ্ছেদে
লীনসিউস
নাটকের
চূড়ান্ত
সংকট- মুহূর্তটির
নাটকীয়তার
প্রশংসা
করেছেন।
বর্তমান
পরিচ্ছেদে
টাইডিউস
নাটকের
একটি পরিচয় লাভের
দৃশ্যের
কথা
উল্লেখ
করা
হয়েছে;
নায়কের
মুখ
থেকে
সরবে
উচ্চারিত
উক্তি থেকেই
এখানে
পরিচয় আবিষ্কার হয়েছিল
বলে
মনে
হয়।
১৩। Phineidae - ফিনেইডি
নাটক
সম্পর্কে
কিছুই
জানা
যায়
নি। আরিস্টটলের Poetics – গ্রন্থের বর্তমান পরিচ্ছেদে
যে
সামান্য
তথ্য
পরিবেশিত
হয়েছে
তা
থেকে
নাটকটি
সম্পর্কে
বিশেষ কোন
ধারণা
করা
সম্ভব
নয়।
তবে
এখানেও পরিচয় লাভ হয়েছিল
চরিত্রগুলোর
সরব
উক্তি থেকেই।
১৪। পৃথিবীর
অনেক
দেশের
ন্যায়
প্রাচীন
গ্রীসেও
স্ত্রী-শিশুদের
অবাঞ্ছিত
মনে
করে
জন্মের
পরই কোন
খোলা
জায়গায়
ফেলে
রাখা
হত,
যাতে
তারা
অচিরেই
পৃথিবী
থেকে
বিদায়
নেয়।
১৫। Odysseus Disguised as a Messenger - দূতের
ছদ্মবেশে
অডিসিয়াস
নাটকটি
সম্পর্কে
বিশেষ
কিছু
জানা
যায়নি।
Poetics গ্রন্থে পরিবেশিত সামান্য তথ্যই এ নাটক সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পুঁজি ।
১৬। এখানে যে ভাবে পরিচয় আবিষ্কার হয়েছে বলে ধরা হয়েছে তা মোটেই পরিষ্কার নয়। এ যেন ধাপ্পাবাজিপূর্ণ কথার সাহায্যে পরিচয় লাভ। তাই
যুক্তির
দিক
থেকে
মোটেই
গ্রহণীয়
নয়।
No comments:
Post a Comment