সম্মান ১ম বর্ষের সিলেবাসের অনুবাদ ও লেখা
The Piano by D H lawrence -
Bangla translation, summary and analysis
দ্য পিয়ানো
ধীরলয়ে, গোধূলিবেলায়, এক
নারী
শোনায়
আমায় গান;
সুদূর অতীতের স্মৃতি পথে ফেরায়, যতটুকু আমার পড়ে মনে,
শিশু বসে একা, পিয়ানোর পাশে, উদ্দাম সুর যেথা
ভাসে
নিটোল পা দুটি মায়ের, চেপে
ধরে
বার
বার,
মা
গায়
আর
হাসে।
আমাকে ছাড়িয়ে সেই মোহময়ী সুর
স্মৃতিরে আমার নিয়ে যায় দূর বহুদূর
ফেলে আসা শীত-বিকেলের সে সব ছুটির দিনে
পিয়ানোর সুরে আর গানে সুখের পথ নিতাম চিনে।
পিয়ানোর বাদনে বা গীত সঙ্গীতে সেই সুর আজ কোথা
বিপুলায়তন কালো পিয়ানোর সব তান যায় বৃথা।
বালক কালের সে সব স্মৃতিতে ঢাকা পড়ে পরিণত মন
প্লাবিত স্বরণে ফিরে পেতে সে দিনে কাঁদি শিশুর মতন ।
আলোচনাঃ
কবিতাটি লেখা হয়
১৯১৮ সালে। কবি এখানে নিজের দৃষ্টিকোন থেকে কবিতাটি লিখেছেন। কবি এখানে নিজের
জীবনের স্মৃতি শৈশবের স্মৃতি বর্ণনা করছেন। কবিতার শিরোনাম পিয়ানো এখানে রূপক হিসেবে
ব্যাবহার হয়েছে।
সারাংশঃ
শৈশবকালে কবির মায়ের পিয়ানো বাজনা আর গানের প্রতি এক স্মৃতিকাতরতা ও আকর্ষণ কবিতাটির
মূল
বিষয়। শিশুকালে তার মায়ের পিয়ানো আর গানের সুর কবিকে এক কল্পলোকে
নিয়ে
যেত।
কবি
নিজ
অস্তিত্বকে ভুলে সে কল্পলোকে হারিয়ে যেতেন, পিয়ানো আর গানের সুরের রোমান্টিক আবহে মগ্ন হয়ে ডুবে থাকতেন। কবির দুঃখ সে সব
দিন, সুরের মূছনায় হারিয়ে যাবার সুযোগ আজ আর নেই । শৈশবের স্মৃতিকে ফিরে পেতে
কবি
শিশুর
মতোই
কাদেন
যেন।
প্রথম
স্তবক:
কবি
তার
শৈশব
স্মৃতিচারণ করছেন; গোধূলি লগ্নে তাঁর মা পিয়ানো বাজাতেন
আর
গান
গাইতেন।
শিশু
কবি
তখন
বার
বার
তাঁর
মার
পা
দুটো
ছুয়ে যেতেন। তার মা গাইতেন আর হাসতেন। কবি কল্পনার চোখে সেই সন্ধ্যার দৃশ্যটি
যেন
স্পষ্ট
দেখতে
পাচ্ছেন।
দ্বিতীয় স্তবক: কবি সেই ফিরে পাওয়া অসম্ভব দিনগুলোর কথা ভেবে বার বার শিহরিত হচ্ছেন
আর
ভাবছেন
যদি
সে
দিনে
ফিরে
যাওয়া
যেত,
যদি
সে
অসম্ভবকে
সম্ভব করা যেত! যদি সে সব রবিবার সন্ধ্যায় ফিরে যাওয়া যেত যখন কবির মা পিয়ানো বাজাতেন আর ধর্মীয় সঙ্গীত গাইতেন!
তৃতীয় স্তবক: পরিণত মনে কবি বোঝেন সে মধুর গান কোনোদিন আর ফিরে পাওয়া যাবে
না।
আজকের
কোনো
গায়কই
কবিকে
সে
সুরের
মাধুর্য
উপহার
দিতে
পারবে না।
তবুও
কবি
শৈশবের
সে
দিনগুলোতে ফিরে যাবার জন্য শিশুর মতোই কাদেন।
ঔপন্যাসিক ডি, এইচ, লরেন্স, ঔপন্যাসিক হিসেবে বিতর্কিত হয়েও খ্যাতি পেয়েছিলেন। কবি হিসেবে তিনি যে নির্বিরোধ এবং সফল তার প্রমাণ পিয়ানো কবিতাটি।
কোনো
এক
মহিলার
পিয়ানো
বাদন
শুনতে
শুনতে
কবি
তার
ছেলেবেলায় চলে যান, কবি তার মায়ের পিয়ানো বাদন শোনার দিনগুলোতে ফিরে যান, যখন তার মা
পিয়ানো
বাজাতেন
আর
বালক-কবি
তার
মায়ের
পায়ে
চিমটি
কাটত,
মা
হাসতে হাসতে পিয়ানো বাজাতেন আর গাইতেন। শীত-বিকেলে কবির মায়ের পিয়ানো বাদনের
স্মৃতির
মাঝে
হারিয়ে
যান,
সে
সুখ
স্মৃতি
বিলাসে
বিভোর
হন।
সে
দিনগুলো ফিরে পাবেন না জেনেও তার জন্য কাদেন; শীত-বিকেলে বৈঠকখানার বারান্দায় বসা সুখময় সেই দিনগুলোর কথা ভাবেন। সে দিনগুলো ফিরে পাবেন না জেনে শিশুর মতন কাঁদেন।
অতি সাধারণ শব্দ ব্যবহার আর
ছন্দই
কবিতাটির
সৌন্দর্য
।
স্মৃতিতে,
সুরে
ঐকতান
কবিতাটিকে স্নিগ্ধ করে। সুবোধ্য
রূপ
বন্ধ,
প্রতি
দুই
ছত্রের
অন্ত-ছন্দের
মিল
কবিতাটিতে রোমান্টিক আবহ নিয়ে
আসে,
কবিতাটিকে সুখ-পাঠ্য করে তোলে। যে কোনো পাঠকের কাছেই কবিতাটি
বার
বার
পাঠযোগ্য
মনে
হবে।
যে
সব
বৈশিষ্ট্য কোনো কবিতাকে বার বার পাঠোপযোগী করে তোলেন তার সবই কবিতাটিতে বিদ্যমান। যদিও কবিতাটিতে এক ধরনের
মাত্রা ব্যবহার হয়নি। কখনো পঞ্চমাত্রার কখনো দ্বিমাত্রিক কথনো তিন মাত্রিক যার প্রথম দুটি হ্রস্ব ও পরেরটি দীর্ঘ্য, এমন মাত্রা ব্যবহার করা হয়েছে তারপরও দুই ছত্রের অন্ত-ছন্দ কবিতাটিকে আনন্দময় ও সুপাঠ্য
করে
তোলে।
No comments:
Post a Comment