সূচনা ও ১ম পরিচ্ছেদ এর বাংলা অনুবাদ - ব্যাখ্যা ও টিকাসহ
চতুর্থ পরিচ্ছেদ অনুবাদ
কাব্যের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
সাধারণত কাব্য দুটি কারণে সৃষ্টি হয়। দুটিই মানুষের প্রকৃতি থেকেই উদ্ভূত। জীবনের প্রাথমিক সময় থেকেই মানুষের মাঝে অনুকরণ করার প্রবৃত্তি সহজাত থাকে। সে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা এই কারণে যে সৃষ্টির মাঝে সেই সবচেয়ে অনুকরণপ্রিয় আর সে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করে অনুকরণের মাধ্যমে। আর
অনুকরণকৃত বিষয়
উপভোগ
করার
একটি
প্রবৃত্তিও আমাদের সকলের মজ্জাগত। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা এর প্রমাণ পাই; কারণ লৌকিক রূপে যে-সব জিনিস দেখে আমরা বেদনা বোধ করি যেমন কদাকার প্রাণী ও মৃতদেহ,
সেই
সব
বস্তুরই
নিখুঁত
অনুকৃতির দিকে
তাকিয়ে
আমরা
আনন্দ
উপভোগ
করি। এমনটি যে হয় তার কারণ এই যে, কোন কিছু জানা বা শেখা একটা বড় আনন্দের ব্যাপার। এ শুধু দার্শনিকদের পক্ষে সত্য নয়, অপরাপর
লোকের
ক্ষেত্রেও
সত্য, তা
তাদের
চিন্তাশক্তি যতই সীমিত হোক না কেন। তারা যে বস্তুর অনুকরণ দেখে আনন্দ পায় তার কারণ ঐ দেখার মধ্য দিয়ে তারা বস্তু সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে। তারা মনে মনে প্রতিটি বস্তু-প্রতিরূপের অন্তর্লীন তাৎপর্য খুঁজে ফিরে এবং তার সত্য পরিচয় আবিষ্কার করে হয়তো বলে ওঠে, এই তো অমুক লোকের ছবি। তবে দৈবক্রমে
যদি
এমনি
ব্যাপার
দাঁড়ায়
যে,
অঙ্কিত
বস্তুটি
কেউ
আগে
দেখে
নি,
তাহলে ছবিটি
কোন
কিছুর
অনুকৃতি
হিসেবে
আনন্দের
কারণ
হবে
না,
হবে
সুনির্মিতি, সুরঞ্জন বা সদৃশ কোন
কারণের
জন্য। তাহলে দেখা গেল, অনুকরণের প্রবৃত্তি আমাদের স্বভাবগত একটা ব্যাপার। তেমনি স্বভাবগত হল সুর এবং ছন্দবোধ-আর মাত্রা তো স্পষ্টতঃ ছন্দেরই একটা স্বতন্ত্র ভাগ। এই স্বভাবগত
বৃত্তির
তাগিদে
প্ররোচিত
হয়ে
ক্রমাগত
অনুশীলনের মাধ্যমে ঐ বৃত্তিগুলোকে বিকশিত করে করেই শেষ পর্যন্ত মানুষ আপন উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রয়োগ করে কাব্যসৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল. যাই হোক, কবির ব্যক্তি স্বভাবের বিশেষ বিশেষ মর্জি অনুসারী হয়ে কবিতা অচিরেই দু'টি আলাদা শাখায় বিভক্ত হয়ে গেল। অপেক্ষাকৃত ভাব-গম্ভীর প্রকৃতির কবিরা মহৎ ঘটনা এবং মহৎ লোকের কার্যকলাপ অনুকরণ করলেন; আর লঘুতর প্রকৃতির কবিরা অনুকরণ করলেন হীনতর লোকের ক্রিয়াকলাপ। তাই দেখি একশ্রেণীর কবি যখন ঈশ্বরস্তুতি ও
বন্দনাগীতি রচনা করলেন, তখন অন্যরা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপাত্মক রচনার পথ ধরলেন। হোমারের আগে কোন কবির লিখিত এই জাতীয় কোন কবিতার সন্ধান আমরা পাই না। যদিও এটা খুবই সম্ভব যে অনেক কবিই ঐ জাতীয় কবিতা লিখেছিলেন। কিন্তু হোমার থেকে শুরু করে পরবর্তীকালে অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যেতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ তাঁর নিজের রচনা মার্গাইটিস১ এবং সমজাতীয় অন্যান্য কবিতার কথা উল্লেখ করা যায়। ব্যঙ্গের উদ্দেশ্য সাধনের সবিশেষ উপযোগী ছিল বলেই এই ধরনের কবিতায় ইয়াম্বিক ছন্দের
ব্যবহার
চালু
হয়েছিল। আজও এই ছন্দ ইয়াম্বিক অর্থাৎ ব্যঙ্গোক্তির ছন্দ বলে পরিচিত, কারণ এই ছন্দেই তাঁরা একে অপরকে ব্যঙ্গ করে কবিতা লিখতেন। এই ভাবেই ব্যাপারটা দাঁড়িয়ে গেল যে আমাদের প্রাচীন কবিদের কিছু সংখ্যক বীরগাথার (Epic) লেখক হিসেবে এবং কিছু সংখ্যক, ব্যঙ্গ কাব্যের লেখক হিসেবে চিহ্নিত হলেন। কিন্তু হোমার অনন্য রচনাকৌশল গুণে এবং কাব্যে নাট্য ধর্ম সঞ্চারণ ক্ষমতার পারদর্শিতায় যেমন ভাবগম্ভীর রীতির কাব্য রচনায় সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন, তেমনি তিনিই প্রথম কাব্যে ব্যক্তিগত ব্যঙ্গবিদ্রুপাশ্রয়ী বিষয়ের পরিবর্তে হাস্যাম্পদ চরিত্রকে নাটকীয় মহিমা দান করে কমেডির ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্দেশ
করেছিলেন। বস্তুতঃ আমাদের ট্র্যাজেডিগুলোর সঙ্গে তার ইলিয়াড২ এবং অডিসির৩ও যে সম্পর্ক, আমাদের কমেডিগুলোর সঙ্গে তাঁর মার্গাইটিস কাব্যের সম্পর্কও তাই। ট্রাজেডি ও কমেডির আবির্ভাবের পর দেখা গেল কবিদের একদল নিজেদের স্বাভাবিক প্রবণতা অনুযায়ী ব্যঙ্গ রচনার পরিবর্তে কমেডি রচনার দিকে, অন্যদল মহাকাব্যের পরিবর্তে ট্র্যাজেডির দিকে ঝুকে পড়লেন। কারণ এই নতুন শিল্পাঙ্গিক গুলো পূর্বতন আঙ্গিকগুলো থেকে অনেক সমুন্নত এবং বেশী আদরণীয় ছিল। বিভিন্ন আঙ্গিকে ট্রাজেডির বিকাশ যতদূর হওয়া সম্ভব আজ পর্যন্ত
ট্রাজেডির ততটা বিকাশ
সম্ভব হয়েছে কি না এবং তার বিচার নিছক রচনানির্ভর হবে, না মঞ্চের সাথে সম্পর্ক-সাপেক্ষে হবে, তা নির্ণয় করার কাজ আমার বর্তমান আলোচনার পরিধির বাইরে। ট্রাজেডি
ও কমেডি উভয় জাতীয় রচনারই প্রাথমিক সূচনা হয়েছিল প্রস্তুতি বিহীন মানুষের উপস্থিত বুদ্ধিপ্রসূত কলাকেন্দ্রের আশ্রয়ে। ট্র্যাজেডির উৎপত্তি ঘটেছিল ডিথির্যাম্ব গীতি রচয়িতাদের হাতে আর কমেডির উদ্ভব ঘটেছিল আমাদের বহু নগরে আজও ঐতিহ্যাশ্রয়ী হয়ে বেঁচে রয়েছে যে সব ফ্যালিক গীতি৪ তাদেরই রচয়িতাদের হাতে। ট্রাজেডি
অল্পে অল্পে বিকাশের পথে এগিয়ে গিয়েছিল, গৃহীত প্রতিটি নতুন উপাদানের পরিপুষ্টি সাধন করে করে। অবশেষে অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ট্র্যাজেডি তার স্বাভাবিকরুপে উত্তীর্ণ হয়ে স্থিতি লাভ করেছিল। এস্কাইলাসই৫ প্রথম অভিনেতার সংখ্যা এক
থেকে বাড়িয়ে দুই
করলেন, কোরাস বা
সমবেত গীতির প্রাধান্য
কমিয়ে দিলেন এবং সংলাপকে
মুখ্যস্থান দিলেন। সফোক্লিস
অভিনেতার সংখ্যা বাড়িয়ে
করলেন তিন আর যোজনা
করলেন দৃশ্যসজ্জা ট্রাজেডির
আকৃতি ও প্রকৃতিগত
ঐশ্বর্যময়তার কথা বলতে গেলে,
বলতে হয় ট্র্যাজেডি
তার বিলক্ষণ মহিমান্বিত
রূপ লাভ করেছিল
অনেক কাল পরে
যখন স্যাটায়ারিক৬ নাটকের (Satire Play)খোলস
থেকে বেরিয়ে এসে
তা লঘূ কাহিনী
ও হাস্যকর রচনাশৈলী
বর্জন করেছিল এবং
এর ছন্দভঙ্গী চতুর্মাত্রিক
ট্রোকীয় ছন্দ৭ থেকে ত্রিমাত্রিক ইয়াম্বিকে
পরিবর্তিত হল। প্রথমে
কবিরা স্যাটায়ারিক কাব্য
রচনা করছিলেন বলে এবং
তা প্রকৃতিগত দিক
থেকে নৃত্যের ছন্দেরই
পোষকতা করত বলে
চতুর্মাত্রিক ট্রোকীয় ছন্দই
ব্যবহার করতেন; কিন্তু
সংলাপের ব্যবহার চালু
হতেই ট্র্যাজেডি তার
স্বভাব ধর্মানুযায়ী উপযুক্ত ছন্দোমাত্রা আবিষ্কার করে নিল। আয়াম্বিক ছন্দ যে গৃহীত হলো তার কারণ সকল প্রকার ছন্দোমাত্রার মধ্যে ইয়াম্বিকই কথোপকথনের ভাষার পক্ষে সবচেয়ে উপযোগী। আমরা যে পারস্পরিক কথোপকথনের সময় প্রায়শঃই ইয়াম্বিক ছন্দোমাত্রার আশ্রয় নিয়ে থাকি এবং কদাচিৎ হেক্সামিটার বা ষান্মাত্রিক ছন্দে কথা বলি এবং তাও যখন আমরা সাধারণ ভাষার স্বরভঙ্গী থেকে দূরে সরে আসি, তা থেকেই ব্যাপারটা বুঝা যায়। আর একটি পরিবর্তন হলো উপকাহিনী, অথবা অংকের সংখ্যা বৃদ্ধি। ট্রাজেডির নানাবিধ অলংকরণ এবং তাদের প্রবর্তনার পরিস্থিতিগত তাৎপর্য ইত্যাদি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের আলোচনা আমরা অবশ্যই এড়িয়ে যাব। কারণ এসব বিষয় নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করতে গেলে তা সম্ভবতঃ হয়ে উঠবে এক বিশাল ব্যাপার।
পোয়েটিকস এর ৩য় পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
পোয়েটিকস এর ৫ম পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
পোয়েটিকস এর ৫ম পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহঃ
১। Margites – এই প্রাচীন ব্যাঙ্গ কাব্যের অধিকাংশই হারিয়ে গিয়েছে। এই কাব্যের নায়ক মার্গাইটস-এর
নামানুসারে কাব্যটির নাম দেয়া হযেছে। মার্গাইটিস শব্দের অর্থ
পাগল।
কাব্যের
নায়ক
মার্গাইটস
ছিল
এক
অতি
সরল,
অল্পবুদ্ধির লোক। তার বোকামির কথা প্রায় প্রবাদবাক্যে পরিণত হয়েছিল। সে পাঁচের বেশী সংখ্যা গুণতে পারত না। বয়ঃপ্রাপ্ত ও বিবাহিত হওয়ার পরও সে অবিশ্বাস্যরূপে সরলই থেকে গেল। সে অনেক জিনিসই কিছু কিছু জানত; কিন্তু কোনটিই সঠিকভাবে জানত না। প্রধানতঃ হেক্সামিটার (ষান্মাত্রিক) ছন্দে রচিত হলেও, কাব্যটিতে মাঝে মাঝে ইয়াম্বিক
পর্বের
ব্যবহার
রয়েছে। আরিস্টটল
কাব্যটিকে হোমরের রচনা বলেই গ্রহণ করেছিলেন। এতে নায়ক চরিত্রে যে অসংগতি ও হাস্যকরতার আভাস তিনি পেয়েছিলেন, তার মধ্যে তিনি গ্রীক কমেডির সূত্রপাত লক্ষ্য করেছিলেন। কিন্তু এখন জানা গিয়েছে যে, এটি আদৌ হোমারের রচনা নয়। গবেষকদের মতে গ্রন্থটি খ্রীষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে পিগ্রেস কর্তৃক রচিত
হয়েছিল
যিনি
হ্যালিকার্নাসাসের অধিবাসী ছিলেন। বিস্তারিত
২।The Iliad – ইলিয়াড অর্থ ইলিয়ন বা ইলিয়ামের গীতি। এতে ট্রয় যুদ্ধের ১০ বছর ব্যাপি কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। গ্রীক
মহাকবি
হোমার
রচিত
বিখ্যাত
মহাকাব্য
বিশেষতঃ
গ্রীককবাহিনীর সর্বাধিনায়ক অ্যাগামেমনন কর্তৃক মহাবীর একিলিসের অপমান, একিলিসের
ক্রোধ
ও
যুদ্ধকার্য থেকে সাময়িক দূরে অবস্থান থেকে শুরু করে বন্ধু পেট্রোক্লিসের মৃত্যুর পর একিলিসের যুদ্ধ যাত্রা, হেক্টর বধ ইত্যাদি যাবতীয় কাহিনী এতে সন্নিবেশিত হয়েছে। বিস্তারিত
৩।The Odyssey - মহাকবি হোমার
রচিত
বিখ্যাত
দ্বিতীয়
মহাকাব্য। এতে ট্রয়যুদ্ধের অন্যতম নায়ক অডিসিয়াসের যুদ্ধশেষে নানা দুর্যোগ ও বিপদের মধ্য দিয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সব বাধা বিপত্তি জয় করে তিনি কিভাবে তাঁর ধর্মপত্নী পেনিলোপ ও পুত্র টেলিমেকাসের সহিত মিলিত হয়েছিলেন তার সুবিস্তৃত কাহিনী গ্রন্থটিতে পরিবেশিত হয়েছে। বিস্তারিত
৪।Phalic Song – ফ্যালিক সঙ্গিত নোমিক বা ডিথির্যাম্বিক সঙ্গিতের মতই এক প্রকার সঙ্গিত। ধর্মিয় উৎসবের সময় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে গাওয়া হতো। বিস্তারিত
৫। Aeschylus – মাঝ মাঝে তাকে ট্রাজেডির জনকও বলা হয়ে থাকে। তাঁর লেখা ৭৯ টি নাটকের মাঝে মাত্র ৭ বর্তমান রয়েছে। এস্কাইলাস এথেন্স থেকে ২৭ কিলোমিটার দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থিত গ্রীসের
এটিকা প্রদেশের ইলিয়ুসিস নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ইউফোরিয়ন সম্ববতঃ এথেন্সের শেষ রাজা কডরাসের বংশধর ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে বিশেষ তথ্য পাওয়া যায় না। পারস্যের বিরুদ্ধে গ্রীসের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করে ম্যারাথন ও স্যালামিসের যুদ্ধে তিনি কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন গভীর ধর্মবিশ্বাসী। তার হাতেই প্রকৃত পক্ষে গ্রীক নাটকের যথার্থ উন্মেষ। শুধু তাই নয়, যে গ্রীক ট্রাজেডির ব্যাপ্তি ও গভীরতা আজও বিশ্বনাট্য সাহিত্যের প্রেরণার উৎস, সে ট্র্যাজেডির গৌরবময় বিকাশ তারই রচনায় প্রথম হয়েছে। তিনি একজন উঁচু দরের কবিও ছিলেন। তার রচনার ভাষাও অত্যন্ত ঐশ্বর্যময়। যতদূর জানা এস্কাইলাস প্রথম নাট্য প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হন ৪৯৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। ৪৮৫
খ্রীস্টপূর্বাব্দে প্রথম বারের
মত শ্রেষ্ঠ পুরস্কার
লাভ করেন। তারপরেও আরও তের
বার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
শোনা যায়,
একবার সফোক্লিসের নাটক
তার তুলনায় শ্রেষ্ঠ
বিবেচিত হওয়ার ক্ষোভে
তিনি স্বদেশ ত্যাগ
করে সিসিলিতে প্রস্থান
করেন । তিনি সম্ভবতঃ
আর এথেন্সে ফিরে
আসেননি।
সিসিলির গেলা অঞ্চলেই
তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
করেন। তাঁর জীবনকাল
মোটামুটি ৫২৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ
থেকে ৪৫৬ খ্রীস্টপূর্বাব্দ
পর্যন্ত প্রায় সত্তর
বছর। এস্কাইলাস রচিত
নাটকগুলোর মধ্যে অভিশপ্ত
পুরী,
বন্দী প্রমিথিউস, থেবসের বিরুদ্ধে
সাত বীর,
পারসিকগণ, এটনার স্ত্রীলোকগণ,
আবেদনকারিনী স্ত্রীলোকগণ ইত্যাদি বিখ্যাত। গ্রীসের
পুরাণ এবং উপকথা
তার নাট্যরচনার উপাদান যুগিয়েছে।
নাটকের আঙ্গিকের নানাবিধ
সংস্কার ছাড়াও তিনি
নাট্যাভিনয়ে পোশাক, দৃশ্য
ও মুখোশের ব্যবহার
প্রবর্তন করেন। বিস্তারিত
৬। Satire plays – স্যাটিরিক
নাটক হচ্ছে এক
ধরনের গ্রীক নাটক
যা আঙ্গিক ও বিষয়বস্তুর
দিক থেকে ট্রাজেডির
মত, কিন্তু
পরিচর্যার দিক থেকে
এতে কমেডির মত ক্রিয়াশীল
কল্পনা ও লঘু
চিত্ততার প্রকাশ ঘটে
বেশী। এই জন্য
এই জাতীয় নাটককে ট্র্যাজি-কমেডি বলে
চিহ্নিত করা চলে। স্যাটির হচ্ছে
কল্পিত গ্রীক বনদেবতা।
লেজ এবং লম্বা
কান বিশিষ্ট এই বনদেবতাকে
রোমানরা অংশতঃ ছাগল
রূপে দেখিয়েছে। অন্য
মতে, বনদেবতা
স্যাটির অংশতঃ অশ্ব
ও অংশতঃ মানুষ। এর স্যাটিরিক
নামকরণের কারণ হলো
এ জাতীয় নাটকে অভিনেতারা
অর্ধ ছাগ বা
অশ্ব এবং অর্ধ
মানবাকৃতি হয়ে ডায়োনিসাসের
অনুচররপে অংশগ্রহণ করত।
প্রাচীন ট্র্যাজেডি জাতীয়
রচনার সঙ্গে এর
সম্পর্কের কথা সুনিশ্চিতরূপে জানা
যায় না। কারো
কারো মতে,
প্র্যাটিনাস নামে পিলোপন্নেসের
এক গ্রীক নাট্যকার
ও কবি স্যাটিরিক
নাটকের উদ্ভাবক এবং
সম্ভবতঃ তিনি নাট্য
প্রতিযোগিতায় প্রথম এর অবতারণা
করেছিলেন।
কৌতুকপ্রদ করে তোলা
যায় এমন যে
কোন বিষয় স্যাটিরিক নাটকের
অন্তর্ভুক্ত হতে পারত। বিস্তারিত
৭।
Trochee – এই শব্দটি গ্রিক শব্দ ট্রকোস থেকে এসেছে। যার অর্থ হল চাকা। গ্রীক ও ল্যাটিনে
যে ছন্দের প্রতি
পর্বে একটি দীর্ঘ
অক্ষরের পর একটি
হ্রস্ব অক্ষর থাকে
অথবা ইংরেজীতে পর্বের
প্রথম অক্ষরটি প্রস্বরযুক্ত
এবং দ্বিতীয়টি প্রস্বরবিহীন
হলে (-v) তাকে ট্রোকীয়
ছন্দ বলে। উল্লেখিত
ধরনের চারটি পর্বযুক্ত ছন্দকে
চতুর্মাত্রিক ট্রোকীয় ছন্দ
বলে। বিস্তারিত
৮। Hexameter – গ্রীক ও ল্যাটিন মহাকাব্যের চরণের ক্ষেত্রে আদর্শ মানদন্ড হল ৬ মাত্রা। ইলিয়াড, অডিসি, ভার্জিলের ঈনিড, হোরেসের স্যাটায়ার সমূহ, অভিডের মেটামরফোসিস ইত্যাদি ছয় মাত্রায় রচিত। বিস্তারিত
No comments:
Post a Comment