Poetics - Aristotle - Chapter 13 - Tragic Action - Bangla Translation and Explanation |
Aristotle's Poetics
Tragic Action
Chapter 13
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ - ট্র্যাজিক প্রক্রিয়া
যা বলা হয়েছে তাঁর পর থেকে যদি বলা শুরু করি, তবে আমাদের এটা বিবেচনা করে এগিয়ে যেতে হবে যে একজন কবির নাট্টকাঠামো বা প্লট গঠনে কিসের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে, আর কোনটি এড়িয়ে যেতে হবে, আর কিভাবেই বা তাঁর ট্রাজেডিতে নির্দিষ্ট আবেদন সৃষ্টি করা যাবে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে ট্র্যাজেডির সর্বোত্তম গঠনের জন্য প্লটটিকে সরল নয়, অবশ্যই মিশ্র বা যৌগিক [১০ম পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য] হতে হবে। অধিকন্তু তা এমন ঘটনার উপস্থাপন করবে যা ভয় এবং করুণার উদ্রেক ঘটায়। কারণ এ-ধরনের অনুকরণের ওটাই হল বিলক্ষণ বৈশিষ্ট্য। এর থেকে এই সিদ্ধান্তেই আসতে হয় যে তিন ধরনের বৃত্ত বর্জনীয়। একজন সৎ লোক সুখময় জীবন থেকে দুঃখে পতিত হল, এমন দৃশ্য দেখানো চলে না; আবার কোন মন্দ লোক দুঃখ জয় করে সুখ সৌভাগ্যের অধিকারী হল তাও দেখানো উচিত হবে না। প্রথমোক্ত দৃশ্য আমাদের মনে না জাগায় ভয়, না করে করুণার উদ্রেক বরং তা আমাদের মনে জাগায় দারুণ বিতৃষ্ণা। দ্বিতীয়টি একেবারেই ট্র্যাজিক বৈশিষ্ট্য বিবর্জিত; কারণ এতে ট্র্যাজেডির আবশ্যকীয় উপাদান কিছুই নেই। এ দৃশ্য না তৃপ্ত করে আমাদের মানবীয় বোধকে, না জাগায় আমাদের মনে করুণা বা ভয়। অপরপক্ষে একজন অতিশয় মন্দ লোক সুখময় জীবন থেকে দুর্ভোগে পতিত হল, এমন দৃশ্যও চিত্রিত হওয়া উচিত নয়। এ ধরনের কাহিনী আমাদের মনে মানবিক অনুভূতি জাগাতে পারে কিন্তু আমাদের মনে তা না জাগাবে করুণা, না জাগাবে ভয়। অনুচিত দুঃখ ভোগ দেখেই আমাদের মনে করুণা জাগে, আর আমাদের মনে ভীতির উদ্রেক হয় আমাদেরই মত মানুষের দুঃখভোগ দেখে । সুতরাং দেখা যাচ্ছে এরূপ চরিত্রাশ্রয়ী ঘটনা ভয়ানক বা করুণ কোন রসেরই হবে না। তাহলে বাকী থাকছে দুই বিপরীত সীমার মাঝামাঝি অবস্থানকারী এক ধরনের চরিত্রের লোক। এরা বিশেষ নৈতিক উৎকর্ষ ও ন্যায় নিষ্ঠার জন্য উল্লেখের দাবী রাখে না এবং এরা দুর্ভোগে পতিত হয় কোন পাপ বা নীচতার জন্য নয়, বরং কোন Hamartia বা ভুলের জন্য১। এরা হল ঈডিপাস[১১শ পরিচ্ছেদ এর টিকা দেখুন], থায়েস্টিস২ এবং তাঁদের মত পরিবারের বিখ্যাত লোকদের ন্যায় বিশেষ সৌভাগ্য ও সুনামের অধিকারী ব্যক্তি ।
সুগঠিত একটি প্লটে তাই একটি প্রধান বিষয় থাকবে, দু’টি নয়-যেমন কেউ কেউ বলে থাকেন। নায়কের ভাগ্যের পরিবর্তন দুঃখ থেকে সুখের দিকে না হয়ে, বরং উল্টোটাই হবে। নায়কের চারিত্রিক কোন স্থলন নয়, তার স্বীকৃত কোন বড় রকমের ভুলই হবে তার কারণ। নায়ক স্বয়ং আমাদের বর্ণিত ধরনের চরিত্রের মত হবেন, অথবা তার চেয়ে উন্নততর হবেন; কিন্তু কখনোই নিকৃষ্টতর লোক হবেন না। বাস্তব ঘটনাও আমাদের এই ধারণাকেই সমর্থন করে। যদিও কবিরা গোড়াতে হাতের কাছে যে ট্র্যাজিক গল্প পেতেন, তা নিয়েই নাট্য রচনা শুরু করেছিলেন, আজকাল কিন্তু সর্বোৎকৃষ্ট ট্র্যাজেডি গুলো সর্বদাই লেখা হচ্ছে গুটিকয়েক পরিবারের কাহিনী নিয়ে, যেমন হচ্ছে অ্যালকমিয়ন৩, ঈডিপাস, অরেস্টিস৪, মিলিয়াজার৫, থায়েস্টিস, টেলিফাস৬ এবং অন্যান্য এমন সব লোকের কাহিনী নিয়ে, যারা ভয়ানক দুর্ভোগ ভোগ করেছেন অথবা ভয়ানক কিছু করেছেন। শিল্প সূত্রানুযায়ী সর্বোত্তম ট্র্যাজেডির বৃত্তের গঠন তা হলে এই বর্ণনানুগই হবে। সুতরাং যে-সব সমালোচক ট্র্যাজেডি রচনায় এই পথ অনুসরণ করেছেন বলে ইউরিপিডিসের৭ সমালোচনা করেন এবং অভিযোগ করেন যে, তাঁর নাটকগুলা অনেক গুলোই দুঃখাবহ পরিণতি লাভ করেছে, তারা ভুল করেন, কারণ আমি আগেই বলেছি এটাই হচ্ছে ট্র্যাজেডির যথার্থ উপসংহার। এ ধারণার যথার্থতার সর্বোৎকৃষ্ট প্রমাণ হচ্ছে, নাট্যমঞ্চে এবং নাট্য প্রতিযোগিতায়, এ ধরনের নাটকগুলোর সুষ্ঠু অভিনয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে দেখা যায় যে এগুলো রস সংবেদনার দিক থেকে সবচেয়ে খাঁটি ট্র্যাজিক নাটক হয়ে উঠেছে। যদিও নাটকে অন্যান্য কোন বিষয়ের শৈল্পিক প্রয়োগে ইউরিপিডিস ত্রুটিমুক্ত নন৮ তথাপি তিনি আমাদের নাট্যকারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ট্র্যাজিক বলে গণ্য হয়ে থাকেন। তারপর আসে অডিসির[৪র্থ পরিচ্ছেদের টিকা দেখুন] মত দুই কাহিনী সূত্রবিশিষ্ট প্লট গঠনের কথা, যাতে ভাল ও মন্দ চরিত্রের লোকের ভাগ্যের বিপরীত পরিণাম দেখানো হয়েছে[সপ্তদশ পরিচ্ছেদের শেষে অডিসির কাহিনীর সার সংক্ষেপ দ্রষ্টব্য]। কেউ কেউ একেই প্রথম শ্রেণীর বৃত্ত বলে নির্দেশ করে থাকেন। দর্শক ও শ্রোতাদের দুর্বল চরিত্র ও মনই এই ধারণা সৃষ্টি করে, কবিরা এখানে শুধু দর্শকেরই অনুসারী এবং রচনার ব্যাপারে তাদের ইচ্ছাকেই অনুসরণ করে থাকেন। কিন্তু এসব রচনা পাঠের আনন্দ, ট্র্যাজেডির রসাস্বাদন-জনিত আনন্দ নয়। এটা বরং কমেডিরই উপযুক্ত, যেখানে দেখা যায় মূল কাহিনীতে যাদের পরস্পরের চরমতম শত্রুরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেমন অরেস্টিস ও এজিস্থাস৯ তারাই উপসংহারে বন্ধুর মত মঞ্চ থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়, কেউ হত্যা করে না অথবা কাউকে হত্যা করা হয় না।
পোয়েটিকস এর ১২শ পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
পোয়েটিকস এর ১৪শ পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
পোয়েটিকস এর ১৪শ পরিচ্ছেদ এর অনুবাদ, ব্যাখ্যা ও টিকাসমূহ
ব্যাখ্যা ও টিকাঃ
১। Hamartia – মানে হল To miss the mark অথবা To err অর্থাৎ সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করা বা ভুল করা। Hamartia শব্দটি Tragic Flaw নামেও পরিচিত। ট্র্যাজেডির নায়ক বড় রকমের কোন ভুল করে থাকেন। নায়ক চরিত্রের অন্তর্গত কোন নৈতিক বা মানসিক ক্রুটি অবশ্যম্ভাবীরূপে তাকে নিদারুণ বিপর্যয়কর কাজের দিকে ঠেলে দেয়। একে কোনমতেই দুর্ঘটনা বলে চিহ্নিত করা যায় না। তবে এও ঠিক, এই ধরনের কার্যধারার পিছনে নায়কের কোন অসৎ উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায় কাজ করে না। তিনি যত মহৎ গুণের অধিকারী মানুষই হউন না কেন, তিনি চরিত্রের অন্তর্গত বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য এ ভুল করে থাকেন। এই কারণেই তাঁর জন্য সবাই করুণাবোধ করে। বিস্তারিত।
২। Thyestes - থায়েস্টিসঃ থায়েস্টিস ছিল অলিম্পিয়ার একজন রাজা। থায়েস্টিস ও তাঁর ভাই অ্যাট্রিউস তাদের সৎ ভাই ক্রিসিফাস কে হত্যার জন্যে তাদের পিতা কতৃক নির্বাসিত হন। তারা মিসিনাতে আশ্রয় নেন। গ্রীক পুরাণ কাহিনীর অন্যতম ট্র্যাজিক চরিত্র । ভ্রাতা অ্যাট্রিউস এর সাথে শত্রুতার পরিণতি হিসেবে তাকে কোন এক ভোজে নিমন্ত্রিত হয়ে তাঁর অজ্ঞাতসারে নিজ পুত্রদ্বয়ের মাংস ভোজন করতে হয়েছিল। থায়েস্টিসের উপর অ্যাট্রিউসের এই বীভৎস প্রতিশোধের কাহিনী অবলম্বনে বহু নাটক গ্রীক ও রোমান কবিগণ কর্তৃক রচিত হয়েছিল। বিস্তারিত।
৩। Alcmeon - আ্যালকমিয়নঃ গ্রীক পুরাণ কাহিনীর অন্যতম নায়ক। এম্ফিয়ারাউস এবং ইরিফাইলের পুত্র। স্ত্রী ইরিফাইল কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে এম্ফিয়ারাউস থেবসের বিরুদ্ধে সপ্ত বীরের অভিযানে অংশ গ্রহণ করে মৃত্যুমুখে পতিত হন। ইরিফাইল প্রকৃতপক্ষে এম্ফিয়ারাউসের শত্রুদের উৎকোচে বশীভূত হয়ে অনিচ্ছুক স্বামীকে মৃত্রে মুখে ঠেলে দিয়েছিল। পুত্র অ্যালকমিয়ন মাতৃহত্যা করে পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছিলেন এর পর তিনি থেবস অভিযানে অংশগ্রহণকারী সপ্তবীরের বংশধরদের দ্বারা পরিচালিত নতুন অভিযানের নায়ক হন এবং থেবস দখল করেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি প্রথমে থেবসের বিরুদ্ধে অভিযান চালান, পরে পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসাবে মাতৃহত্যা করেন। পরে মানসিক অন্তর্দ্বন্দজনিত উন্মত্ততা বশে তিনি আর্গস ত্যাগ করেন এবং সফসিসে প্রস্থান করেন সেখানকার রাজা ফিজিয়াস তাকে গ্লানি থেকে মুক্ত করেন এবং নিজকন্যা আরসিনীকে তার সঙ্গে বিবাহ দেন কিন্তু সে দেশে দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হলে তিনি এ স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করেন। শোনা যায়, সেখানে তিনি রাজা একিলৌসের কন্যার পাণি-গ্রহণ করেন। কিন্তু আরসিনীর ভাইরা পথিমধ্যে তাঁকে অতর্কিতে আক্রমণ ও নিহত করে এবং ভগিনী আরসিনীকে এক সিন্ধুকের মধ্যে পুরে ক্রীতদাসীরূপে বিক্রয় করে । ইউরিপিডিস রচিত করিন্থে অ্যালকমিয়ন নাটকে উল্লিখিত আছে, অ্যালকমিয়ন ম্যান্টোর পাণি গ্রহন করেন এবং দুই সন্তানের পিতৃত্ব লাভ করেন। বিস্তারিত।
৪। Orestes - অরেস্টিস আর্গসের রাজা অ্যাগামেমনন ও রাণী ক্লাইটেমনেস্ট্রার পুত্র। ট্রয় যুদ্ধ থেকে সদ্য ফেরত আ্যাগামেমনন, ইজিস্থাস ও ক্লাইটেমনেস্ট্রার ষড়যন্ত্রে নিহত হন। পরে অরেস্টিস, ইজিস্থাস ও ক্লাইটেমনেস্ট্রাকে হত্যা করে পিতৃহত্যার প্রতিশোধ গ্রহণ করেন। হোমার বলেন, আ্যাগামেমনন যখন নিহত হন তখন অরেস্টিস সামান্য কিশোর মাত্র ছিলেন। যখন তিনি বয়ঃপ্রাপ্ত হলেন তখনই পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিয়েছিলেন মাঝখানে দীর্ঘদিন তিনি নির্বাসনে কাটিয়েছিলেন। বিস্তারিত।
৫। Meleager - মিলিয়াজার গ্রীক পুরাণোক্ত এক বীর। তিনি রাজা ওসেনাস (মতান্তরে এরেস) ও তৎপত্নী এলথিয়ার পুত্র ছিলেন। মাতুল হত্যার দায়ে তিনি মাতৃ-অভিশাগ্রস্ত ছিলেন । কথিত আছে, ক্যালিডোনিয়ার প্রতি শত্রুতা ভাবাপন্ন কিউরেউস জাতীয় লোকেরা যখন ক্যালিডোনিয়া আক্রমণ করে, তখন মিলিয়াজার প্রথমে অভিমান বশতঃ দেশরক্ষার্থে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে রাজী হননি। অবশেষে স্ত্রী ও কন্যার কাতর অনুনয়ে বিগলিত হয়ে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে আক্রমণকারীদের পর্যুদস্ত করেন। হোমরের মতে মিলিয়াজার এক মহাবীর যোদ্ধা ছিলেন। তাঁর সাহসিক কার্যকলাপ সর্ম্পকে বহু কাহিনী চালু আছে। কথিত আছে তাঁর পিতা দেবী আর্টেমিসের কাছে প্রতিশ্রুত উৎসর্গ প্রদানের কথা বিস্মৃত হলে, দেবী এক ভীষণ বন্য শুকর পাঠিয়ে সমগ্র রাজ্যে ত্রাসের সঞ্চার করেন। মিলিয়াজার ক্যালিডোনিয়ার এই বন্য বরাহ হত্যা করে অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। মিলিয়াজারের মৃত্যুর ব্যাপারটা রহস্যাবৃতই থেকে গেছে। শোনা যায়, আগুন থেকে তোলা ও সরিয়ে রাখা এক টুকরা জ্বালানি কাঠের অস্তিত্বের উপরই নাকি তাঁর জীবন নির্ভর করছিল। ভ্রাতাদের হত্যায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ মানসে তার মা এঁ কাঠের টুকরা পুড়িয়ে ফেলাতেই নাকি তাঁর মৃত্যু হয়। বিস্তারিত।
৬। Telephus - টেলিফাস ছিলেন হিরাক্লিস এবং আর্কেডিয়ার অন্তর্গত এলিয়ার রাজা এলিওসের কন্যা অজীর পুত্র। এথেনা দেবীর মন্দিরে অজী তাকে প্রসব করেন। তার পরেই দেশে এক মহামারী শুরু হয়। রাজা এলিওস যখন ব্যাপারটি জানতে পারেন, তখন তিনি শিশুটিকে নির্জন উন্মুক্ত প্রকৃতির মধ্যে ফেলে রাখেন এবং অজীকে ক্রীতদাসী রূপে দূরদেশে বিক্রয়ের জন্য পাঠিয়ে দেন। তারপর ঘটনাক্রমে অজী মাইসিয়ার অরগস্তত টিউথ্রেনিয়ার রাজা টিউথ্রাসের হস্তগত হন এবং টিউথ্রাস তাকে বিবাহ করেন। আঁর এদিকে শিশুটি প্রথমে এক হরিণীর স্তন্যে প্রতিপালিত হয় এবং পরে মেষপালকেরা তাকে আবিষ্কার করে গৃহে নিয়ে যায় এবং তার নাম রাখে টেলিফাস। মতান্তরে অজী নিঃসন্তান রাজা টিউথ্রাসের কন্যারূপে গৃহীত হন। পরে কোন কারণবশতঃ বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে টেলিফাস যখন মাইসিয়াতে উপস্থিত হন, তখন অজীকে টেলিফাসের হস্তে সমর্পণ করা হয়। শেষ মুহুর্তে অজী এবং টেলিফাস তাদের প্রকৃত সম্পর্ক আবিষ্কার করেন। সে যাই হোক, টেলিফাস যে মাইসিয়ার রাজা হয়েছিলেন, তা এক প্রকার নিশ্চিত। সাইপ্রিয়া নাটকে উল্লেখ আছে যে ট্রয় অভিযানকারী গ্রীকবাহিনী ভুলক্রমে টিউথ্রেনিয়ায় অবতরণ করলে, টেলিফাস তাদের প্রতিরোধ করেন এবং একিলিস কর্তৃক নিক্ষিপ্ত বর্শার আঘাতে আহত হন। পরে একিলিসের সাহায্যেই তিনি আরোগ্য লাভ করেন। তিনি গ্রীকবাহিনীকে ট্রয়ে পৌছার পথনির্দেশ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায় না। তবে শোনা যায় ট্রোজান যুদ্ধের সময় তিনি জীবিত ছিলেন। বিস্তারিত।
৭। Euripides - ইউরিপিডিস খ্রীস্টপূর্ব ৪৮০ অব্দ থেকে ৪০৬ অব্দের মধ্যবর্তী কালে তিনি বর্তমান ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত গ্রীক ট্র্যাজেডি-রচয়িতাদের অন্যতম। তিনি গ্রীসের অ্যাটিকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যতদূর জানা যায়, তিনি কৈশোরে প্রডিয়াসের নিকট ব্যায়াম শিক্ষা করেন, যৌবনে আনাক্সাগোরাসের কাছে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষা লাভ করেন। তিনি পেশাদার মল্লবীর বা চিত্রকর-একটা কিছু হবেন, অনেকেই এমন আশা করেছিলেন। কিন্তু কার্যতঃ যখন তিনি নাটক লিখতে শুরু করেন, তখন সবাই অবাক হয়েছিলেন। আঠার বছর বয়সে তিনি প্রথম নাটক লিখেন। ৪৪২ খ্রীস্টপূর্বাব্দে বার্ষিক নাট্য প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। ৪০৮ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে তিনি জীবনে শেষবারের মত অরেস্টিস নাটকের জন্য পুরস্কৃত হন। তার জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছিল সালামিসে। প্রখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসের সঙ্গে তাঁর প্রগাঢ় বন্ধুত্ব ছিল। বিশেষ একটি দার্শনিক মতের অনুসারী বলে নির্যাতিত হবার আশঙ্কায় তিনি এথেন্স ত্যাগ করে ম্যাসিডনে আশ্রয় গ্রহণ করেন। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর এথেন্সবাসীগণ তাঁর মৃতদেহ এথেন্স নগরে সমাধিস্থ করার আবেদন জানায়। কিন্তু ম্যাসিডন-রাজ সে আবেদন অগ্রাহ্য করেন। তখন এথেন্সবাসীরা এথেন্সের রাজপথে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে তাঁর প্রতি তাদের অকুণ্ঠ ভালবাসার পরিচয় দিয়েছিল। শোনা যায়, তাঁর রচিত নাটকের সংখ্যা ৯২। তন্মধ্যে মাত্র আঠারটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মিডিয়া তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ নাটক। এটি রচিত হয়েছিল ৪৩১ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। তাঁর অন্যান্য নাটক হচ্ছে টোরিসে ইফিজেনিয়া, অরেস্টিস, মেলানিপ্পি, ইলেক্ট্রা ইত্যাদি। বিস্তারিত।
৮। Aristotle on Euripides - অ্যারিস্টটল ইউরিপিডিসের Medea নাটকের সমালোচনা করেছেন এই যুক্তিতে যে (১)মিডিয়া তার সন্তানদের জেনে-শুনে সজ্ঞানে হত্যা করেছে (চতুর্দশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য), (২) যথাসময়ে ইজিয়াসের আবির্ভাবের ঘটনা সম্ভাব্যতার সূত্রানুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয় এবং (৩) নাটকের একেবারে শেষ দিকে যে দৈব সংঘটনের ব্যাপারটা দেখানো হয়েছে, তা নিতান্তই মঞ্চ-কৌশলসাপেক্ষ। ইউরিপিডিস সম্পর্কে তাঁর অন্যান্য সমালোচনামূলক বক্তব্য হচ্ছেঃ তাঁর নাটকে সন্নিবেশিত কোরাস গীতি গুলো বৃত্তের পক্ষে অপরিহার্য নয়, প্রায়শঃই অপ্রাসঙ্গিক (অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য); টোরিসে ইফিজেনিয়া, নামাঙ্কিত নাটকে নায়িকার চরিত্র অসঙ্গতিপূর্ণ (পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য): অরেস্টিস নাটকে মেনেলৌসের চরিত্রকে অনর্থক হেয় এবং নীচ করে দেখানো হযেছে (পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য) : মেলানিপ্পি নামক ট্র্যাজেডিতে স্ত্রী চরিত্র হিসাবে মেলানিপ্পিকে অতিমাত্রায় দার্শনিকতা গুণমণ্ডিত চরিত্ররূপে উপস্থাপিত করা হয়েছে (পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য); টোরিসে ইফিজেনিয়া নাটকে অরেস্টিসের আত্মপ্রকাশের ব্যাপারটা ঘটনা সংস্থানের অনিবার্য পরিণাম হিসাবে দেখা দেয়নি, লেখক যেন ইচ্ছাকৃতভাবেই ঘটনাকে ঐরূপ পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছেন (ষোড়শ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য)। অধিকাংশ আধুনিক পাঠকই কিন্তু মনে করেন যে, ইউরিপিডিসের নাটকগুলো চূড়ান্ত ট্র্যাজিক ধর্মযুক্ত; কারণ তাঁর অঙ্কিত চরিত্রগুলো বীরোচিত না হয়ে প্রায়শই সাধারণ রক্ত-মাংসের মানুষরূপে দেখা দিয়েছে। এস্কাইলাস এবং সফোক্লিসের নাটকে চরিত্রের এই বৈশিষ্ট্য তেমন উপস্থিত নয়। কিন্তু আরিস্টটল এটাকেও ইউরিপিডিসেরই দোষ বলে বিবেচনা করেছেন। কারণ তাঁর মতে ট্র্যাজেডি হচ্ছে সাধারণ মানুষের চেয়ে উন্নততর চরিত্রর লোকের উপস্থাপন (পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য)। বিস্তারিত।
৯। Aegisthus - ইজিস্থাস গ্রীক পুরাণ মতে অ্যাগামেমননের পিতৃব্য থায়েস্টিসের একমাত্র সন্তান, যে এট্রিউসের প্রতিহিংসার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। অ্যাগামেমননের স্ত্রী ক্লাইটেমনেস্ট্রার সঙ্গে তার অবৈধ প্রেম সম্পর্কের কথা শোনা যায়। এরই সহায়তায় ক্লাইটেমনস্ট্রা ট্রয় থেকে সদ্য ফেরত অ্যাগামেমননকে হত্যা করে। বিস্তারিত।
No comments:
Post a Comment