দ্যা লায়ন অ্যান্ড দ্যা জুয়েল - সারাংশ - পর্ব ২ - নুন
সিদি বাজারে
হাটছিল আর তাঁর ছবির মাঝেই তাঁর মন পড়েছিল। ল্যাকুনলে তাঁর পিছু পিছু আসছিল। এসময়
তাঁর কাছে গ্রাম্য সরদারের স্ত্রী সাদিকু আসল। তাকে বলল সে তাকে দেখতে চায় এবং
ব্যারোকা তাঁর মঙ্গল কামনা করেছে। সিদি তাঁর ছবি নিয়েই বিড়বিড় করে কথা বলছিল।
সাদিকু তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ দেয়। সাদিকু বলে ব্যারোকা সিদিকে বিয়ে করতে
চায়। ল্যাকুনলে আগ বাড়িয়ে এসে রাগতভাবে তাঁর কথায় বাঁধা দিল। সে মাটিতে বসে পড়ে
সিদির কাছে প্রার্থনা করল সে যেন সাদিকুর কথা না শুনে।
সিদি তাঁর কথায়
বিরক্ত হল আর বলল, সে একজন সুন্দরী আর তাকে একা ছেড়ে চলে যেতে। সে আরো বলল সেতো আর
ব্যারোকার স্ত্রী হয়ে যায় নি। সাদিকু তাকে বলল সে যেনো আবার ভেবে দেখে কারন ব্যারোকার
স্ত্রী হওয়া অনেক আনন্দের ব্যাপার। সে তাকে আরো মনে করিয়ে দেয় ব্যারোকার যেমন বয়স
তাতে সে খুব তাড়াতাড়ি মারা যাবে। এরপর যে গ্রামের প্রধান হবে সিদি তাঁর সবচেয়ে বড়
বৌএর মর্যাদা লাভ করবে।
সাদিকু তাঁর
অভিজ্ঞতা থেকেই একথা বলেছে কারন সে প্রায় একচল্লিশ বছর ধরে বড় বৌএর মর্যাদা পেয়ে
আসছে। সিদি তাকে বলল সাদিকু আসলে সময় নষ্ট করছে। সে আরো বলে ব্যারোকা আসলে তাকে এই
জন্যেই চায় কারন তাঁর ছবি পত্রিকায় এসেছে। সে আসলে “জুয়েল অফ ইলুজিনলে” এর মালিক হতে চায়।
সিদির কথায়
সাদিকু বিস্মিত হল। তারপর চিৎকার করে ল্যাকুনলেকে দোষারোপ করতে লাগল। তাকে বলল এই
সব শুধু তাঁর জন্যেই হয়েছে। সিদি তাকে থামতে বলল এবং আরো বলল, সে তাঁর মনস্থির করে
ফেলেছে সে তাকে বিয়ে করবে না কারন ব্যারোকা একজন বুড়ো।
সিদি তার নিজের
ছবির দিকে তাকিয়ে ছিল, তারপর সে তাঁর চামড়া ও তাঁর বুকের প্রশংসা করল আর ভাবছিল
সেগুলো সম্পর্কে আগে তাকে কেউ কখনো কিছু বলে নি কেনো! ল্যাকুনলে বলল সে তাকে বলতে
চেয়েছিল কিন্তু তাঁর কাছে মনে হয়েছিল এটা ঠিক নয়।
সিদি তাকে
উপেক্ষা করে বরং নিজেকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতে থাকল। সে জানে তাঁর চোখে যেনো কিসের এক
বার্তা রয়েছে যা পুরুষদেরকে তাঁর ভাগ্যের দিকে দিক নির্দেশ করে। সে ব্যারোকার থেকে
বয়সে অনেক অনেক ছোট। তাঁর রুপের ঝলকানীর কাছে ব্যারোকা একটা ঘোড়ার জিনের মত। সে
তরুণী ও জীবন্ত অন্য দিকে ব্যারোকার জীবন প্রায় শেষ। সে একটা রত্নের মত অন্য দিকে
ব্যারোকাকে তুলনা করা যায় সিংহের পশ্চাৎদেশের সাথে।
সাদিকু এখনো
ভিত। সে সিদিকে জানালো তাঁর সম্মানে রাতে ব্যারোকার বাসায় ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। কারন
পত্রিকায় ছাপা হওয়া তাঁর মুখচ্ছবি ইলুজিনলের জনগনের সম্মান বৃদ্ধি করেছে। সিদি তখন
অনেকটা ব্যাঙ্গ করেই বলল রাতের ভোজের সম্পর্কে সে জানে কিন্তু সে বিবাহিত লোকের
সাথে খাবার খায় না।
সাদিকু তাকে
বোঝায় যদি সে কিছু শুনে থাকে তা গুজব। যে মহিলাই তাঁর সাথে খায় সে তাঁর রক্ষিতা হয়
না। ল্যাকুনলে তখন জোরে জোরে বলা শুরু করল, জনগণের জন্যে এই গ্রামে যে রেইলওয়ে প্রকল্প
ছিল সেটা ব্যারোকা বাঁধা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁর বাবা তাকে এইটা বলেছে। সিদি
তখন এই ঘটনা জানতে চাইলো।
তখন ল্যাকুনলে
বলতে শুরু করে, একসময় জেলখানার কয়েদিদের আনা হয় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যে। সে
একটা অতীতের ছবি অংকণ করে। একজন সাদা চামরার সার্ভেয়র অলসভাবে কর্মীদের কাজ
দেখছিলেন। একজন জমাদার কর্মীদের বলে দিচ্ছিল কাকে কি কাজ করতে হবে। তারা মাটিতে
খুটি পেতে রাস্তা মাপছিল। এর মাধ্যমেই ব্যবসা, উন্নতি, অভিযান, সাফল্য, সভ্যতা,
সম্মান, আন্তর্জাতিক দৃষ্টি সবই ইলুজিনলের হাতের মুঠোয় এসে পড়তো। কেউ একজন চিৎকার
করে উঠল আর সকল কর্মীরা ভয় পেয়ে গেল। এরপর ব্যারোকা তাঁর দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত
হল আর সাদা চামড়ার সার্ভেয়রকে ঘুষ দিল যাতে করে রেল লাইনের ট্র্যাক এই গ্রামের
ভিতর দিয়ে না যায়। ব্যারোকা আসলে ভয় পেত যদি এই গ্রাম সভ্যতার ছোয়া পায় তাহলে তাঁর
নেতাগিরি শেষ হয়ে যাবে।
ততক্ষনে এই দুই
মহিলা সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছে।
[ব্যারোকার বাড়িতে]
ব্যারোকা তাঁর বিলাসবহুল ঘরে বসে আছে। তাঁর বর্তমানের সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী
আইলাতু তাঁর বগল থেকে লোম উঠিয়ে দিচ্ছে। এসময় সে তাঁর আরেকটি নতুন স্ত্রীর
প্রয়োজনীয়তার উপরে কথা বলছিল। আর পাশাপাশি তাঁর বগলের লোম তুলতে গিয়ে বেশি ব্যাথা
দিলে তাঁর স্ত্রীর সমালোচনা করছিল। আসলে তাঁর স্ত্রী আইলাতু নতুন বিয়ের কথা শুনে
ক্ষুব্ধ হয়েই তাকে বেশি ব্যাথা দিয়ে লোম তুলছিল। এ সময় সাদিকু সেখানে প্রবেশ করলে অন্য স্ত্রীটিকে কক্ষ থেকে বাহিরে পাঠিয়ে
দিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইল তাঁর জন্যে কি সেই বেদনা উপশমকারী সুগন্ধী পাথরটি এনেছে
কিনা। সাদিকু তাকে বলল সিদি তাঁর সাথে কোন কিছু করতেই রাজি নয়। এতে সাদিকু বিরক্ত
হল না। কিন্তু যখন সাদিকু বলল সিদি তাকে বুড়ো বলেছে, সে তাতে বিমর্ষ হয়ে পড়ল। সে
তখন রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়ল আর চিৎকার করে তাঁর সারাজীবনের যত পৌরুষালী কাজ সে করেছে
সেগুলো বলতে লাগল। এক সময় সে সাদিকুকে কাছে ডাকল তাকে স্বস্তি দেয়ার জন্যে।
সাদিকু তাকে
শান্ত করার জন্যে তাঁর পায়ে আলতো করে ঘষে দিচ্ছিল। এদিকে ব্যারোকা পত্রিকায় সিদির
ছবির দিকে তাকিয়ে বলছিল সম্ভবত সেই সবচেয়ে সেরা। তাঁর পৌরুষত্ত্ব একেবারে শেষের
দিকে আর এখন যদি সে সিদিকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহন করে তাহলে মানুষ হাসবে। সাদিকু কে
অবাক করে সে বলে যেতে লাগল, সে আসলে সিদিকে বিয়ে করতে চেয়েছিল তাঁর অহঙ্কারকে ধরে
রাখার আকাঙ্খার কারনেই। তারপরই ব্যারোকা তাকে বলল সে এই ঘটনা কাউকেই বলেনি আর
সাদিকুও যেন কাউকে না বলে। সে জানে সে যে বিরক্তিকর কিন্তু এটা একেবারেই অনুচিত
কারন তাঁর বয়স এখন মাত্র বাষট্টি বছর। ব্যারোকা আগের স্ত্রীদের নরম হাত গুলোর কথা
স্মরণ করতে লাগল। এই মুহূর্তে সাদিকুর হাতটাই সেরা। সকলের মাঝে সেই তাঁর
রানী।
পর্ব ৩ - নাইট পড়ুন
সম্মান ২য় বর্ষের অন্যান্য নাটক ও কবিতার অনুবাদ
পর্ব ৩ - নাইট পড়ুন
সম্মান ২য় বর্ষের অন্যান্য নাটক ও কবিতার অনুবাদ
Eta to part 2 noon
ReplyDelete