Home Burial - Robert Frost - Bangla translation |
Home Burial - Robert Frost - Bangla translation
হোম বিউরিয়াল
সিঁড়ির নীচ থেকে তার স্ত্রীকে দেখল সে
স্ত্রী তাকে দেখার আগেই, সে নীচে আসতেছিল,
ঘাড় ঘুরিয়ে ভয়ে ভয়ে পিছু দেখছিল।
সন্ধিগ্ধভাবে এক পা ফেলে থামল তারপর আবার চলতে শুরু করল।
মাথা উচু করে আবার ফিরে দেখল। স্বামী শুধাল,
মহিলার দিকে এগিয়ে গিয়ে, “কী দেখছো তুমি
উপর থেকে সর্বদা - বলবে কি?”
মহিলা তার স্কার্টে মুখ লুকাল।
ভীত মুখটি তার নির্বিকার হয়ে গেল।
কিছু সময় নিয়ে লোকটি শুধাল: “কী দেখ তুমি”,
অবশেষে মহিলাটি তার বুকে মুখ লুকাল
“বল না আমায় কী দেখ তুমি, প্রিয়ে”
কিন্তু মহিলাটি অনড়
ঘাড় বাকিয়ে শক্ত হয়ে থাকল নীরবে।
লোকটি তার দিকে তাকিয়ে থাকল।
অন্ধের মতো থাকল সে ক্ষণিক
অবশেষে মহিলা বলল, ‘ওহ’ ‘ওহ’
“কী তা–কী” মহিলা বলল
“কী দেখি আমি ।”
“তুমি জান না” মহিলা বলল, “বল কী সে।”
বিস্ময়, আমি একবারে তা দেখিনি।
এখান থেকে দেখিনি কখনো।”
আমি এতে অভ্যস্ত-কারণ তা।
কী ছোটো কবরস্থানটি, আমার স্বজনেরা ঘুমিয়ে যেথা!
জানালাটাও ছোট্ট বটে
শোবার ঘরটির থেকে বড়ো নয় মোটে তাই না?
“তিনটি খণ্ড স্লেট পাথরের একটা মার্বেল পাথরের
প্রশস্ত তিনটে খণ্ড সূর্যালোতে
পাশের পাহাড়ে। ওগুলো না দেখলেই নয়।
কিন্তু বুঝতে পারছি: ওগুলো শুধু পাথর নয়
শিশুটির কবর —”
“না, না, না
না” মহিলাটি কেঁদে ফেলল ।
মহিলাটি তার স্বামীর বাহু বন্ধন মুক্ত হলো
সিড়ির রেলিংয়ে বিশ্রামাবস্থা থেকে
হতাশ দৃষ্টিতে মহিলা তার স্বামীর দিকে তাকাল।
স্বামীটি বার দুয়েক বলল,
“একজন মানুষ কি তাঁর নিজ সন্তানকে হারিয়ে তা বলতে পারবে না?”
“তুমি না! ওহ, আমার হ্যাট কোথায়? থাক, লাগবে না!
অবশ্যই আমি বাইরে যাব। খোলা বাতাসে ঘূরব।
জানি না ঠিক, কোন্ মানুষ কী পারে।”
“অ্যামি! কারো কাছে যেও না এখন।
শোন, আমি নীচে যাব না ।”
স্বামীটি তার মুষ্টিবদ্ধ হাতে চিবুক ঠেকিয়ে বসে রইল।
“তোমায় কিছু শুধাব, প্রিয়।”
“কীভাবে শুধাব বুঝছি না।”
“সাহায্য করবে কী আমায়।”
স্ত্রীটি উত্তরে দরজার খিল খুলল নীরবে।
“আমার ভাষা প্রায় কটুই হয়
ভালোভাবে কথা বলতে আমি শিখিইনি
তোমায় কী করে তুষ্ট করব। আমাকে শিখতেই হবে।
কী করে কথা বলতে হয়।"
পুরুষ আংশিক পৌরুষ বিসর্জন দেবে।
বিশেষ করে নারীর সামনে। কিছু ব্যবস্থাতো করা যেত
যাতে সম্পূর্ণ নীরব থাকতাম আমি
যাক, তোমাকে মনে রাখতেই হয়।
যদিও যারা ভালোবাসে তাদের মধ্যে ভণিতা মানায় না।
ভালোবাসে না যারা তারাও এ ছাড়া ঝাচে না
কিন্তু যারা ভালোবাসে তারাও বাঁচে না এ ছাড়া।
স্ত্রীটি দরজার খিল খুলল নীরবে। “যেও না, যেও না।"
আর কারও কাছে যেও না এখন,
আমাকেই বল যা কিছু বলার
তোমার ব্যথার অংশীদার করো আমায়। আমি ভিন্ন নই
অন্যদের চেয়ে, যেমন তুমি আমায় ভাবছ দাড়িয়ে হোথা।
আমায় ভিন্ন কিছু ভেব না তুমি । আমিও দুঃখী ।
আমারও ব্যথা সমান যদিবা প্রকাশ শিথিল।
তোমার বেদনা গভীর, বুঝি
প্রথম সন্তান হারানোর বেদনায়।
সান্ত্বনার ভাষা আমার নেই ‘ভালোবাসা গভীর।
তুমি ভাবছ তার স্মৃতির যাতনা নেই আমাতে,
“ওইতো তুমি বিদ্রুপ করছ আমায়!”
“আমি বিদ্রুপ পাবার মতো নই
তোমার বিদ্রুপে অপমানিত বোধ করি। আমারও ব্যথা তোমারই মতো।
ঈশ্বর, নারীরা যেমন করে পারে!
পুরুষেরা কি তেমন করে পারে, সন্তান হারানোয় বিলাপ করতে।”
“হ্যা, তুমি তা পারো না, তুমি শোক প্রকাশে ব্যর্থ।
দুঃখ বোধই যদি তোমার থাকত, কী করে নিজ হাতে
খুঁড়লে নিজ সন্তানের কবর কী করে?—পারলে খুড়তে ছোটো সে কবরটি;
আমি সবই দেখেছি জানালার পাশে দাড়িয়ে।
ছোট্ট সে কবরটি খুড়ছিলে এক মনে ।
মাটিগুলো খুঁড়ে তুলছিল অতি ত্রস্তে
মাটিগুলো আবার জমা করে গড়ছিলে ছোট সে স্তূপটি
তোমাকে বড়ো বেশি অচেনা লাগছিল তখন।
শিথিল পায়ে সিড়িতে উপর নীচ করছিলাম।
আবার ফিরে দেখলাম, তখনো তুমি কোদাল হাতে ব্যস্ত
অবশেষে তুমি ফিরলে, তোমার গম্ভীর গলা শুনলাম।
রসুই ঘরের পাশে, কেন জানি না,
খুব কাছ থেকে তোমায় দেখতে গেলাম।
তুমি নির্বিকার বসেছিলে,জুতোয় তখনো তোমার,
তোমার সন্তানের কবরের কাচা মাটির দাগ
কী সহজে তুমি নিত্যদিনের কথা সব বলছিলে।
দেয়ালের সাথে ঠেক দিয়ে কোদালটাকে রাখলে।
দেখলাম, নিজ চোখে কী নির্বিকার তুমি।
“তোমার কথা শুনে চরম দুঃখেও হাসি পাচ্ছে।
আমি এত অভিশপ্ত । ঈশ্বর! আমি এতই অভিশপ্ত ।”
একই কথা বলতে পারি তোমায়ও
তিন তুষারিত প্রভাত, এক বৃষ্টিতেই কী
পচে যেতে পারে বার্চ গাছের ডালে তৈরি ঘের।
একটু ভাব, এ সময়ের উপযোগী কথা বলো!
বার্চ পচে যেতে কত সময় লাগে সে কথা ছাড়ো।
বৈঠকখানাটার চারদিক কেমন আঁধার সে কথাই বল ।
তোমাকে বিচলিত করে না! নিকটতম বন্ধুদের কেউ মরলেও
তোমার তাতে কিছু এসে যায় না বুঝি
তাদের মৃত্যুতেও কি তুমি অবিচল রবে।
না, আমরণ অসুস্থ কোনো মানুষ,
বড়ো একা মরণেও সে একাই থাকে।
বন্ধুরা তার শব যাত্রায় ভান করেই শরিক হয়,
তেমন অবস্থায় না পড়লে, সব মানুষই সদা ব্যস্ত
জীবনকে নিয়ে, প্রাত্যহিকতা নিয়ে।
জীবিতাবস্থায় মানুষ যাই বুঝক
জীবন বিষাদময় আসলেই । তাই বেদনাকে ত্যাগ করব।
যদি বেদনাকে ভোলা যায়। ওহ, না, না তা করব না!
“তোমার বলার যা ছিল, সবইতো বলেছ।
এখন তুমি যেও না। তুমি কাদছ। দরজাটা বন্ধ করে দাও।
সবই যখন চলে ওটা খোলা রেখে কী লাভ?
অ্যামি ওই দেখ, রাস্তা দিয়ে ওই কারা আসছে!”
“তুমি-ওহ, ভাবছ কথায় সবই হয়ে যায়, আমি যাবই
এ বাড়ির বাহিরে কোথাও। তোমায় কী করে বুঝাব—”
“তুমিও যদি যাও!” মহিলাটি দরজা প্রশস্ত করে খুলল।
‘যাবো বলে তুমি কোথায় যেতে চাচ্ছ? আগে তাই বলো’
‘আমি তোমার পিছু নেব, আর তোমাকে ফিরিয়ে আনব শক্তি দিয়ে, আনবই—”
No comments:
Post a Comment