The characterstics of Chaucer's literature and literature of his Time |
The characterstics of Chaucer's literature and literature of his Time - চসারের সাহিত্যকর্মের বৈশিষ্ঠ্য ও তার সমসাময়িক সাহিত্য
জিউফ্রে চসার তার সময়কালে জনসমাজে লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন না, পরিচিত ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে। এটা মনে রাখা দরকার যে মধ্যযুগীয় একজন লেখক আর আধুনিক একজন লেখক একই পর্যায়ের নন। মধ্যযুগীয় অনেক লেখক যারা কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে, মুখে মুখে ফিরেছে তাদের বর্ণিত কাহিনীসেসব কাহিনী আবার নানাবিধ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অন্য একজনের মুখ থেকে শিল্পগুণমণ্ডিত হয়ে আংশিক পরিবর্তনসহকারে শরীরে নানা রং ছড়িয়ে হাজির হয়েছে শ্রোতা সমাজে, শেকসপিয়ারের মতই মধ্যযুগে চসার তার পূর্ববর্তী নানা লেখকের রচনা দ্বারা অনুপ্রাণীত হয়ে নতুন করে ছবি আঁকার প্রয়াস পেয়েছেন। তিনি রাজদূত হিসেবে ইতালিতে গমন করেছিলেন, এবং সেখানকার সাহিত্যকর্ম তার মাঝে ব্যাপক ছায়াপাত ঘটায়। ফরাসি সাহিত্যকর্ম দ্বারাও চসার রীতিমত অনুপ্রাণিত যে ফরাসি কবিকে চসার তার আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি হলেন গুইলিয়ম ডি মাকাও- Guillaume de Machaut। বলা চলে, চসার এই কবির ভাবশিষ্য ছিলেন। তের শতকে রচিত ‘রোমান ডি লা রোজ' গ্রন্থটি তিনি আংশিক ইংরেজিতে অনুবাদ করেন এবং এ গ্রন্থটির প্রভাব চসারের সকল সাহিত্যকর্মেই লক্ষ করা যায়। ১৩৭২ সালে বিশেষ দূত হিসেবে চসার যখন ইতালি গমণ করেন তখন ইতালীয় সাহিত্যের সাথে তার সম্যক পরিচয় ঘটে। চৌদ্দ শতকে ইউরোপীয় সাহিত্য ক্ষেত্রে ইতালির স্থান ছিল সবার উপরে। দান্তে মৃত্যুবরণ করেন ১৩২১ সালে, পেত্রাক আর বোকাসিও ১৩৭২ সালে জীবিত ছিলেন। অনুমান করা হয়, পাদুয়াতে চসারের সাথে প্রেত্রাকের সাক্ষাৎ হয়েছিল। এদের সকলের কাছেই চসার কমবেশি ঋণী। দান্তে আর পেত্রাকের নিকট থেকে চসার খুব একটা কিছু গ্রহণ না করলেও গ্রহণ করেছিলেন বোকাচিওর সাহিত্যকর্ম থেকে। বোকাচিও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রভাবিত করেছেন চসারকে। বোকাসিওর বিখ্যাত কাহিনী ডেকামেরন তিনি পাঠ করেছিলেন কি না জানা যায় না। কিন্তু চসারের নাইট টেলস আর ট্রয়লাস আর ক্রেসিডার মাঝে বোকাসিওর Tescide এবং I Filostrato-এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
নাইট টেলসে বোকাসিওর মূল Tescide-কে বেশ সংক্ষেপে প্রকাশ করতে প্রয়াস পেয়েছেন। Pandarus-এর চরিত্র চসারের লেখনীতে নতুন রূপ
পরিগ্রহ
করে।
এই
চরিত্র
সৃষ্টির
কুশলতা
শেকসপিয়ারের কথা মনে করিয়ে দেয়। শেকসপিয়ার যেমন Romeo and Juliet-এর মূল
কাহিনী পরিবর্তন করে প্রকাশ করেছেন, চসারও তেমনি Troilus-এর কাহিনীতে স্বাধীনতা নিয়েছেন। একদিকে সে সময়ের বহু বিচিত্র কাহিনী
অন্যদিকে মধ্যযুগীয় জীবনধারা দুটো বিষয়কেই তিনি তুলে এনেছেন দক্ষ তুলির পরশে।
জিউফ্রে চসার তার ক্যান্টারবারি টেলস গ্রন্থে যেসব গল্প বলিয়ের চিত্র অঙ্কন করেছেন
তাদের
বাচনভঙ্গিমা পরিস্ফুট করতে গিয়ে নানা আঙ্গিকগত কলা কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। এর অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে মধ্যযুগীয় জনগণের
বাগবৈদগ্ধ আর তাদের নানা বর্ণিল বর্ণনাভঙ্গি ও বিষয় নির্বাচন। বিশেষ
করে
কবি
এখানে
নানা
বর্ণের
ব্যতিক্রমধর্মী ব্যবহার করেছেন নিপুণতা সহকারে।
চসার
এখানে
বিখ্যাত
ছান্দসিক
গাফার্ড
ডি
ভিনশাপের
নোভা পোয়েট্রিয়ার বাক কৌশল ব্যবহার করেছেন। চসার তাঁর কাব্যের চরিত্র বর্ণনা করতে
এ
বিষয়টির
প্রতি
গুরুত্ব
প্রদান
করেছেন
এবং
অনুসরণ
করতে
প্রয়াসী হয়েছেন। এখানে আমরা চসারের নানস প্রিস্ট টেলসে উল্লেখিত মোরগ চ্যন্টিক্লিয়ারের বিষয় উল্লেখ করতে পারি। পরিবেশ
পরিস্থিতি অনুসারে তার চরিত্রগুলোতে যে আবেগ অনুভূতির প্রকাশ ঘটানো হয়েছে তা সত্যিই অতুলনীয়। নানস প্রিস্ট টেলের মোরগ চ্যন্টিক্লিয়ারের মাঝে নাগরিক জীবনধারার পরিচয় এবং স্বল্পচারী দিকটির পরিচয় মেলে। চসারের
সাহিত্যকর্মের একটি অসাধারণ দিক হচ্ছে একটি অতি সাধারণ বিষয়কে
তিনি
অসাধারণরূপে পরিবেশন করে বিষয়টিকে তুঙ্গে তুলে দেন। সাধারণ
একটি
চরিত্রকে
তিনি
নানা
রঙের
আবরণে
জড়িয়ে
তাকে
দৃষ্টিনন্দন করে তোলেন। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর শারীরিক এবং মানসিক বর্ণনা তিনি এতটাই
বর্ণিল
ভঙ্গিমায় প্রকাশ করেন যে সে চরিত্রগুলোর বিষয়ে পাঠককে আর
বেশি
ভাবতে
হয়
না,
চেনা
হয়ে
যায় তারা।
আধুনিক ইংরেজি কবিতার আদিপুরুষ চসার তার কবিতার ছন্দ আর কাঠামো নির্মাণে
যে
দক্ষতা
প্রয়োগ
করেছেন
তা।
এড়িয়ে
যাওয়া
যায়
না।
কারণ অষ্টাক্ষর বা Octo-syllabic ছন্দ ছাড়া
অন্য
সকল
ছন্দই
চসারের
সৃষ্টি। দশ অক্ষরের Deca-Syllabic নামক যে
ছন্দে
অধিকাংশ
ইংরেজি কবিতা লেখা হয়েছে তা চসারেরই কীর্তি । তিনি এ ছন্দরীতিটি গ্রহণ করেছিলেন
ফরাসি
কাব্যজগৎ
থেকে। চসার অসম্ভব সাহস আর ঝুঁকি সহকারে লন্ডনের আঞ্চলিক ভাষাকে তাঁর কবিতায়
ব্যবহার
করেছেন।
তিনি
কোনো
অ্যাংলো
স্যাক্সন
ছন্দ
ব্যবহার করেননি। তার আদর্শ ছিল মূলত ফরাসি আর ইতালিয়ান কাব্যধারা।
চসার প্রথমে লিরিক দিয়ে তার সাহিত্যচর্চা শুরু করেন, কিন্তু সেসব রচনার
সন্ধান
মেলেনি।
পরবর্তীতে তিনি বেশ কিছু ব্যালাড রচনা করেছিলেন। ব্যালাডগুলোতে তাঁর ভাষাগত নৈপুণ্যের পরিচয় মেলে। চসারের
সময়ে
প্রায়
কাব্যগুলোই স্বল্পচারিতা আশ্রয় করে লেখার রেওয়াজ
ছিল,
যাকে
বলা
হয়
Dream allegory। চসারও প্রথমে এই রীতি
গ্রহণ
করেছিলেন। রূপক আকারে এগুলো লিখিত হলেও এর মাঝে গভীর বাস্তববাদের পরিচয় মেলে।
জিউফ্রে চসারের বিখ্যাত গ্রন্থ ক্যান্টারবারি টেলসে একদিকে উঁচুতলার রাজপুরুষ
এবং
নীচুতলার
চাষী
মজুর
সকলেই
তীর্থযাত্রা প্রাক্কালে একই ছাতার তলায়
উপস্থিত।
এখানে
প্রতিটি
চরিত্রই
স্বমহিমা
নিয়ে
দীপ্যমান। চসার তাঁর এ
কাব্যে
শুধু
তীর্থযাত্রীদের চরিত্রই বর্ণনা করেননি, তাদের সংলাপ এবং তাদের
দৈনন্দিন
কর্মব্যস্ততা ও জীবনযাপন প্রণালীও
তুলে
ধরেছেন। ক্যান্টারবারি যাত্রাকালে তারা একদিকে যেমন গল্প বলেছে, আবার অন্যদিকে আরেক
জনের
গল্পের
সমালোচনাও করেছেন। চসার মাঝেমধ্যেই এসব গল্প বলিয়ের
ব্যক্তি
জীবনের
রহস্যও
তুলে
ধরতে
প্রয়াস
পেয়েছেন। যার ফলে তাদের
জীবনযাত্রা ও দৈনন্দিন কার্যক্রমের একটা নিখুঁত ছবি ফুটে ওঠে পাঠকের সামনে। এসব গল্প বলিয়ে যেসব গল্প বলেছেন সেসবই তাদের জীবনাচরণও চরিত্রগত দিকের সাথে প্রায় মিলে গেছে।
চসার খুবই ধৈর্যসহকারে তার কাহিনী বুনে গেছেন। ধর্মভীরু, অসৎজন, পাপী
সবার
চরিত্রকেই তিনি সমান আন্তরিকতায় বর্ণনার প্রয়াস পেয়েছেন। মোট
কথা সমসাময়িক ইংল্যান্ডের জীবনধারার একটি পূর্ণাঙ্গ ছবি ফুটে ওঠে এইসব তীর্থযাত্রীদের আচার-আচরণ ও কাহিনী পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
No comments:
Post a Comment