Nun's Priest's Tale bangla translation - নান'স প্রিস্ট'স টেলস বাংলা অনুবাদ ২য় পর্ব |
শেষ পর্বের লিঙ্ক
Nun's Priest's Tale bangla translation - নান'স প্রিস্ট'স টেলস বাংলা অনুবাদ ২য় পর্ব ২য় পর্ব শুরুঃ
এরই মাঝে হল কি, সকাল হওয়ার অনেক পূর্বেই
Nun's Priest's Tale bangla translation - নান'স প্রিস্ট'স টেলস বাংলা অনুবাদ ২য় পর্ব ২য় পর্ব শুরুঃ
এরই মাঝে হল কি, সকাল হওয়ার অনেক পূর্বেই
দ্বিতীয়জন স্বপ্ন দেখল, সে বিছানায় শুয়ে আছে আর
তার বন্ধু তাকে ডাক দিয়ে বলছে, হায়! আজ রাতে
বলদের এই গোয়াল ঘরে ঘুমের মাঝে তাকে হত্যা
করা হবে। ভ্রাতা আমার, তুমি আমাকে রক্ষা
করো, তা না হলে আমি মারা পড়ব। যত দ্রুত
সম্ভব আমার কাছে আসো ।
স্বপ্ন দেখে সে ভয় পেয়ে জেগে উঠল। কিন্তু ঘুম
থেকে জেগেই তার মনে হল এটা একটা উদ্ভট ব্যাপার ।
তাই সে এ স্বপ্নটাকে মোটেই গুরুত্ব দিল না। দ্বিতীয়বারও
সে একই স্বপ্ন দেখল। তৃতীয়বারে সে স্বপ্নে দেখল,
তার বন্ধু তার সামনে হাজির হয়ে বলছে, আমি
খুন হয়েছি। আমার দেহের মারাত্মক সব রক্তাক্ত
ক্ষতচিহ্নগুলোর দিকে তাকাও। খুব ভোরবেলায়
ঘুম থেকে উঠে শহরের পশ্চিম গেটে গেলে
সারভর্তি একটা গাড়ি দেখতে পাবে;
সেটার মধ্যেই আমার মৃতদেহটা লুকোনো থাকবে।
বুকে বল রেখে গাড়িটা থামিয়ে দেবে। আসল কথাটা
হল টাকাপয়সাই আমার খুন হওয়ার আসল কারণ।
এরপর তার বন্ধু বিষণ্ণমুখে মৃত্যুকালীন সমস্ত ঘটনাবলি
এক এক করে বলে গেল। আর বিশ্বাস করুন, সে
দেখল, তার স্বপ্নটা পুরোপুরিই বাস্তবে ফলে গেছে।
পরদিন ভোরবেলাতেই বন্ধু সেই গোয়াল ঘরের কাছে
গিয়ে তাকে ডাকতে লাগল।
সরাইখানার মালিক সাথে সাথে জানাল,
মহোদয়, আপনার বন্ধু এখান থেকে চলে গেছেন,
দিন শুরু হওয়ার আগেই তিনি এ শহর ছেড়ে চলে গেছেন।
স্বপ্নের কথা ভেবে তার মনে সন্দেহ উঁকি ঝুঁকি
দিল, সে আর দেরি না করে দ্রুত শহরের পশ্চিম
গেটে হাজির হল। সেখানে সে একটা সারভর্তি
গাড়ি দেখতে পেল। মৃত মানুষটি যেমনটি বলেছিল,
ঠিক তেমনি সারভর্তি গাড়িটা যেন কোনো জমিতে
সার ছড়ানোর কাজেই যাচ্ছিল।
সে তখন বুকে সাহস সঞ্চয় করে এই অন্যায় অপকর্মের
প্রতিশোধ গ্রহণ ও ন্যায়বিচার করার জন্য তারস্বরে চিৎকার
করতে লাগল। চিৎকার করে বলতে লাগল, গত রাতে আমার
বন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এই গাড়িতে সে মরে শক্ত হয়ে
আছে। যারা এই শহরের রক্ষাকর্তা ও প্রশাসক
তাদের কাছে আমি বিনীত প্রার্থনা জানাচ্ছি, আমাকে
আপনারা সহায়তা করুন। হায়! এখানে আমার বন্ধু।
নিহত হয়ে পড়ে আছে।
হে মহান ঈশ্বর, তুমি তো ন্যায়বিচারক ও সততার প্রতিভূ
তুমি তো ইচ্ছে করলেই এই খুনের একটা হিল্লে করতে পার,
এই হত্যা উদঘাটিত হবে এ বিশ্বাস পুরোপুরি আছে
আমার, এটা তো প্রতিনিয়তই দেখতে পাচ্ছি। খুন মাত্রই
জঘন্য অপকর্ম এবং মহান ঈশ্বরের কাছে ঘৃণিত
বিষয়।
কারণ ঈশ্বর ন্যায়ের প্রতীক যুক্তিবান তিনি, এ কারণে
এক দু’বছর লুকোনো থাকলেও, ঈশ্বর চিরকাল এ হত্যাকাণ্ডকে
লুকিয়ে রাখবেন না। হত্যাকাণ্ড প্রকাশিত হবেই, এটাই হল
আমার শেষ কথা। সাথে সাথেই সরকারি কর্মচারীরা
গাড়িচালককে গ্রেফতার করল আর সারওয়ালাকে
সহ গাড়িচালককে এমন ধোলাই দিল যে, মার
খেয়ে তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করল এবং ফাসি
হয়ে গেল তাদের।
এ কাহিনী থেকেই অনুমান করা যায় যে, স্বপ্নকে ভয়
পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। মোট কথা, ঐ গ্রন্থেরই
পরের অধ্যায়ে আমি পাঠ করেছি, আমি যেহেতু
সুখস্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ আশা করি, তাই আবোল
তাবোল কিছু বলব না।
দুজন মানুষ বিশেষ একটা উদ্দেশ্যে দূর দেশে
গমন করতে যাওয়ার কারণে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার
প্রয়োজন হল। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূল না
থাকার কারণে বন্দরের পাশেরই একটি শহরে
তাদের অবস্থান করতে হল। এরপর একদিন সন্ধ্যাবেলায়
বাতাস তার গতিপথ পরিবর্তন করে যাত্রী দুজনের
অভীষ্ট পথে বইতে লাগল। ওরা দুজন তখন
খুশি মনে ঘুমুতে গেল, ভাবল, পরদিন সকাল
বেলাতেই তারা যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু
এদের একজনের ক্ষেত্রে একটা অলৌকিক
ব্যাপার ঘটে গেল । ঘুমের মাঝে সে পরদিন
উপলক্ষ করে একটি অভূত স্বপ্ন দেখল।
তার মনে হল, কেউ যেন তার শয্যার-পাশে দাড়িয়ে
আগামীকাল তাকে এখান থেকে না যাওয়ার নির্দেশ
দিয়ে বলছে, আগামীকাল যদি তুমি সমুদ্রপথে
যাত্রা কর তাহলে তোমার পানিতে ডুবে মৃত্যু হবে।
আমার কাহিনী এখানেই শেষ
ঘুম থেকে জেগেই সে তার সঙ্গীকে অনুরোধ।
করল, আজকের মত সমুদ্রযাত্রা স্থগিত থাক,
আজ যাত্রা করা ঠিক হবে না। পাশের বিছানায়
শুয়ে থাকা সঙ্গী ইয়ার্কি করে বলল, স্বপ্ন দেখে ভীত
হয়ে যাত্রাবিরতি করার মত মানুষ আমি নই ।
তোমার স্বপ্নের আমি থোড়াই কেয়ার করি। স্বপ্ন
হল একটাআহাম্মকি আর কৌতুকের মত বিষয়।
মানুষ তো প্যাঁচা বাদুড় আরো কত রকম জটিলতর
বিষয় স্বপ্নে দর্শন করে। মানুষ এমন সব বস্তু
স্বপ্নে দেখে যা পৃথিবীতে নেই এবং কোনো সময়
সেগুলো আদপেই ছিল না। আমি এখন স্পষ্ট
বুঝতে পারছি যে, তোমার এখানে থাকার ইচ্ছা এবং
এ কারণে তুমি অনুকূল হাওয়া হারাতে যাচ্ছ
মহান ঈশ্বরই সব জানেন, তোমার জন্য খুবই দুঃখ
হচ্ছে আমার, সে যাই হোক, তোমার মঙ্গল কামনা করছি।
সঙ্গীকে রেখে সে একাই যাত্রা করল । কী কারণে এমন
ঘটনা ঘটে গেল বল মুশকিল, বিষয়টা হল, যাত্রাপথের
অর্ধেক রাস্তা পাড়ি দেয়ার পূর্বেই তার জাহাজের তলাটা
গেল ফেসে, কেমন করে এ দুর্ঘটনা ঘটে গেল সেটাও
অজানা, তবে ওর জাহাজের সাথে অন্যান্য যে
সব জাহাজ পাল উড়িয়ে যাত্রা করেছিল সেগুলোর
চোখের সামনেই ওর জাহাজটা অথৈ সমুদ্রে ডুবে গেল।
অতএব ওহে রূপসী পার্টেলোট, এই পুরনো ঘটনা
থেকে এই জ্ঞানটা গ্রহণ করো যে, কোনো স্বপ্নই কোনো
মানুষের অবহেলা করা উচিত নয়। আমি জোর দিয়ে
বলছি, অনেক স্বপ্ন আছে, যেগুলোকে ভয় পাওয়া উচিত।
বুঝে দেখ, মার্সেনরাইদের মহান রাজা কেনেলফাসের
পুত্র সেন্ট কেনেমের জীবনী গ্রন্থে আমি একটি স্বপ্নের
বিষয় পাঠ করেছি । খুন হওয়ার আগে সে স্বপ্নে
তার খুনিকে দেখতে পেয়েছিল। তার ধাত্রীমাত্রা
তার স্বপ্নটার সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে সব রকম।
ষড়যন্ত্র হতে তাকে “হুশিয়ার
থাকার
নির্দেশ
প্রদান
করেছিল, কিন্তু তার বয়স তখন মাত্র সাত বছর, আর
তার অন্তঃকরণটাও ছিল সহজ সরল, আর সে কারণেই
স্বপ্নটাকে সে খুব একটা গুরুত্ব প্রদান করল না।
মহান ঈশ্বরের নামে বলছি, তুমিও যদি আমার মত সেই
কাহিনীটা পাঠ কর তাহলে আমার গায়ের জামাটা
তোমাকে দিয়ে দেব।
মাদাম পার্টেলোট, সত্যি করেই বলছি, আফ্রিকার
মহান সিপিত্তনও স্বপ্নে যা দর্শন করেছিলেন তার
বিস্তারিত বর্ণনা আছে ম্যাক্রোবিয়াসের লেখায়।
স্বপ্নকে সমর্থন করে তিনি লিখেছেন, মানুষ ভবিষ্যতে
যা দেখবে স্বপ্ন পূর্বেই সে বিষয়ে তাকে সতর্ক
করে দেয়। এছাড়া তোমাকে আরো অনুরোধ
করছি, তুমি ওল্ড টেস্টামেন্ট পাঠ করো,
দানিয়েল স্বপ্নকে একেবারে খেলো ব্যাপার মনে
করেন কি না। জোসেফ সম্পর্কে পাঠ করলেও জানতে
পারবে, সব সময় ঘটবে তা বলছি না আমি, তবে
স্বপ্ন প্রায় ক্ষেত্রেই ভবিষ্যৎ ঘটনার আগাম পূর্বাভাস
দিয়ে থাকে। মিশরের ফারাও ও তার
পাচিকা ও খানসামার দিকে তাকালেও দেখতে
পাবে, তারাও স্বপ্নের যথাযথ ফল পেয়েছিল ।
বিভিন্ন রাজবংশের ইতিহাস আলোচনা করলে
অনেক আশ্চর্য রকমের স্বপ্নের কথা পাওয়া যাবে।
লিডিয়ার রাজা ক্রেসাসের পানে তাকাও । তিনি কি
স্বপ্নে দেখেননি যে তিনি একটি বৃক্ষের উপরে আরোহণ
করে আছেন এটার অর্থ এই যে, তিনি ফাসিতে
ঝুলবেন।
হেকটরের স্ত্রী অ্যান্ড্রোমাকির কথাই
ধর
না
কেন,
হেকটর যেদিন নিহত হলেন তার আগের রাতে তীর স্ত্রী
স্বপ্ন দেখেছিল যে, পরদিন যুদ্ধের ময়দানে গেলে মৃত্যু
ঘটবে তার। তার স্ত্রী তাকে বারবার ছুঁশিয়ার করেছিল
কিন্তুকোনো ফল হয়নি। যুদ্ধে গেল সে, ফলে একিলিসের
হাতে মৃত্যু ঘটল তার। এ কাহিনী বলতে অনেক
সময় প্রয়োজন, আর দিনের আলো ফুটে উঠেছে,
একারণেই থামতে হল আমাকে, খুবই সংক্ষেপে
আমি তার উপসংহার টেনে বলতে চাই, এই স্বপ্ন
হতেই বিপদ ঘটে যাবে আমার, এটাও বলি
কোনো জোলাপ ধরনের ঔষধ
আমার
কাছে
নেই,
কারণ আমি জানি ওসব আসলে বিষাক্ত কিছু
আর ওসবের কোনো ধার ধারি না আমি, ' ওসব
মোটেই পছন্দ নয় আমার ।
থাক এসব বিষয়, এবার হাসি-আনন্দের
বিষয় নিয়ে কথাবার্তা চলুক । মহোদয়া পার্টেলোট,
আমারও জীবনের আশা আছে, তাই একটি বিষয়ে
মহান ঈশ্বর আমাকে দয়া প্রদর্শন করেছেন। লাল
টকটকে দুটো চোখের অধিকারী তোমার সুন্দর মুখশোভা
যখন দেখি তখন আমার ভেতর থেকে সব রকম
ভয় ভীতি দূর হয়ে যায়। এ কথাটি অবধারিত
সত্য যে, নারীই একমাত্র পুরুষের পরমানন্দ ও সুখের
আকর, ম্যাডাম। কারণ রাত্রি বেলায় আমি যখন
তোমার কোমল শরীরের স্পর্শ লাভ করি, আর
দাড়টা ছোট হওয়াতে তোমার উপরে উঠতে না পারলেও
আমার মনটা পরমানন্দে এতটাই উৎফুল্ল হয়ে
ওঠে যে, সব স্বপ্ন আর অলৌকিক বিষয়সমূহ
আমি পাশ কাটিয়ে যাই।
এটা বলেই মোরগ চ্যান্টিক্লিয়ার তার আওতাভুক্ত
মুগরিগুলোসহ উঁচু দাঁড়
হতে
নিচে
নেমে
এল।
কারণ
তখন দিন শেষ হয়ে আসছে। খামারে যেসব খাদ্য
দানা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল সেগুলো সে দেখতে পেয়ে
"জোরে কক্ কক্ করে সবাইকে ডাকল. সে তখন রাজাধিরাজ,
সকল ভয়ডর দূর হয়ে গেছে তার। নটা বাজার আগেই
সে কম করে হলেও বিশবার পার্টেলোটের পালক
সুবিন্যস্ত করে দিল এবং ঠিক ততবারই সে তার সাথে মিলিত
হল। নখের উপর ভর রেখে সে এমন ভঙ্গিমায়
ঘুরে বেড়াতে থাকল যে, তখন তাকে দেখতে গোমড়ামুখো
এক সিংহ বলেই মনে হচ্ছিল। অহংকারে তার যেন
মাটিতে পা পড়তে চায় না। কোনো স্থানে শস্যদানার
খোঁজ পেলেই সে কক্ কক্ করে ডেকে ওঠে আর তখন
মুরগিগুলো দৌড়ে তার সামনে হাজির হয়। চ্যান্টিক্লিয়ারকে
যুবরাজের মত তাকে তার খামারেই রেখে দিলাম।
তার অভিযানের কথা পরে জানাব ।
মার্চ বলে পরিচিত যে মাসটিতে পৃথিবীর জন্ম
আর যে মাসে মহান ঈশ্বর প্রথম মানুষ সৃষ্টি করেছিলেন
সে মাস পার হয়ে গেল । এরপরও আরো বত্রিশ দিন
কাটল। সাত স্ত্রীকে সাথে নিয়ে গর্ভ ভরে পদচারণা করতে
করতে চ্যান্টিক্লিয়ার উজ্জ্বল সূর্যের পানে তাকাল, বলল,
সূর্যটা আকাশসীমার একচল্লিশ ডিগ্রির কিছুটা উপরে
উঠেছে। মহোদয়া, পার্টেলোট, তুমি আমার জীবনের
সকল আনন্দের মূল উৎস, শোনো, পাখিরা কেমন
মনের সুখে কলগুঞ্জন করছে, তাকিয়ে দেখো কেমন প্রস্ফুটিত
হয়ে উঠেছে নবীন পুষ্পমঞ্জুরি, আমার মনটাও খুশিতে
একেবারে টইটুমুর।
কিন্তু হঠাৎ করেই একটা বেদনাদায়ক ব্যাপার তাকে
বিষাদে আচ্ছন্ন করল। সুখের শেষ পরিণতি সর্বদাই দুঃখ।
মহান ঈশ্বরই জানেন জগতে সুখটা বড়ই ক্ষণস্থায়ী। কোনো
অলংকারশান্ত্র প্রণেতা যদি উক্ত বর্ণনা প্রদান করতে
পারতেন, তাহলে তিনি অতি সহজেই এ চিন্তাটাকে
একটি চিরন্তন সত্যি হিসেবে প্রমাণিত করতে পারতেন।
বিজ্ঞ সুধিজনেরা, আপনারা এবার আমার কথা
মনোযোগসহকারে শ্রবণ করুন । আমার কথা
হল, 'ল্যান্সেলট
ডি
লেক'
নামক
যে
গ্রন্থটিকে রমণীরা
অত্যন্ত সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে, আমার এ কাহিনীটা
তার মতই বাস্তব সত্য । আমি ফের আমার কাহিনীতে ফিরে যাচ্ছি।
শরীরের কালচে কালচে ছোপ দেয়া একটা ধূর্ত
দুষ্ট প্রকৃতির শেয়াল, অলৌকিক শক্তি বলে
পূর্ব থেকে সবকিছু জেনে তিনটি বছর ধরে পাশের
জঙ্গলে বাস করত। আর যে খামারবাড়িতে স্মার্ট
চ্যান্টিক্লিয়ার তার স্ত্রীদের নিয়ে চলাফেরা করত
রাতের বেলা শেয়ালটা বেড়া ভেঙ্গে সেই খামারে
ঢুকে পড়ল। হত্যাকারী যেমন মানুষ হত্যা করার জন্য
গোপনে লুকিয়ে থাকে, শেয়ালটাও পরদিন দুপুর
বেলা পর্যন্ত চ্যান্টিক্লিয়ারকে পাকড়াও করার সুযোগের
অপেক্ষায় ঘাসের জঙ্গলে নিঃশব্দে শুয়ে রইল ৷ ওহে
ধূর্ত খুনি, তুমি এসে নির্জন গুহায় লুকিয়ে রয়েছ,
ওহে নব স্ক্যাট্রিয়ট, নব ধূর্ত গ্যানিলন,
ওহে গ্রিক সাইনন, তোমার জন্যই পুরো ট্রয় নগরী
ধ্বংস হয়েছিল৷ ওহ, চ্যান্টিক্লিয়ার, কী দুঃসময়েই
না তুমি দাড় থেকে উড়ে এখানে নেমেছিলে । আজকের
দিনটা তোমার জন্য বড়ই বিপদসংকুল, এ ব্যাপারে
তো তোমাকে স্বপ্নে পূর্বেই সতর্ক করা হয়েছিল।
কিন্তু মহান ঈশ্বরের যা ইচ্ছা সেটা পরিণতি লাভ
করবেই; প্রায় সব গির্জার মানুষেরা তো এমনটিই
বলে থাকেন। কিন্তু যেকোনো শিক্ষিত বিজ্ঞজন
এটা মানবেন যে, এটা নিয়ে অন্য দলের মাঝে
নানা রকম বিতর্ক বিদ্যমান; হাজার
হাজার মানুষের মাঝে এ ধরনের মতবিরোধ লক্ষ
করা যায়। কিন্তু আমি মহান ডক্টর
অগাস্টিন কিংবা বোয়েসে কিংবা বিশপ
বার্ডওয়ারডিনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে পারব না
এ বিষয়টির। মহান ঈশ্বরের
অমোঘ
নিয়ম
মোতাবেকই
আমি সবকিছু করতে বাধ্য তো তাই, এখানে অমোঘ
নিয়ম বলতে আমি অনিবার্য কথাটাকেই বোঝাতে
চাচ্ছি। কিংবা কাজটি করার আগেই সেটা মহান
ঈশ্বরের জানা থাকলেও কাজটি করার কিংবা না
করার স্বাধীনতা আমাকে প্রদান করা হয় কি না,
এসব বিতর্ক করার কোনো দরকার নেই আমার ।
আপনারা তো জেনেছেন আমার গল্প একটি মোরগকে
অবলম্বন করে, যে মোরগ একটি দুঃস্বপ্ন দেখা সত্ত্বেও
স্ত্রীর পরামর্শমত দাঁড়
থেকে
উড়ে
খামার
বাড়িতে নেমেছিল যে স্বপ্নের কথা আমি আপনাদের
সামনে পূর্বেই বর্ণনা করেছি!
No comments:
Post a Comment