Total Pageviews

Wednesday, December 26, 2018

Great britain in Chaucer's Time - চসারের সময় গ্রেট ব্রিটেনের অবস্থা

great britain in Chaucer's Time
Great Britain in Chaucer's Time

Great Britain in Chaucer's Time - 
জেফ্রি চসারের সময়কালে গ্রেট ব্রিটেন এর অবস্থা
নানা ঘটনার বেড়াজালে আবর্তিত জিউফ্রে চসারের জীবনকাল। যে কালে তিনি জন্মেছিলেন সে সময়টাই ছিল ঘটনাবহুল এ সময়েই ইংল্যান্ডে কেন্দ্রীয় শাসনের চূড়ান্ত বিকাশ লাভ ঘটে। নরমান শাসকগণ কেন্দ্রীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নদ্রাবিয়া, মার্সিয়া এবং পশ্চিমা স্যাকসনদের কেন্দ্রীয় শাসনের আওতার মধ্যে নিয়ে আসেন। নরমানরা আর এরপর থেকে বিদেশি বলে প্রতীয়মান হত না। এরা আ্যাংলো স্যাকসনদের সাথে মিশে গিয়ে একতার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিল সে সময়ে। যার ফলে ইংল্যান্ডই হল তাদের আসল মাতৃভূমি। আর নরমান রাজগণ লন্ডনকেই তাদের আবাসস্থল হিসেবে বাছাই করলেন সারা ইংল্যান্ডে লন্ডন শহরটাই তখন সবচেয়ে বড় জনপদবহুল শহর হিসেবে গড়ে উঠতে থাকল। নরমান আর আ্যাংলো স্যাকসন ভাষা মিলিত হয়ে নতুন এক ভাষা তৈরি হল, যা পরবর্তীতে ইংরেজি ভাষা হিসেবে পরিচিত লাভ করল। এরই মাঝে ইংল্যান্ডের নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণী ব্যবসাবাণিজ্য করে যথেষ্ট ফুলেফেঁপে উঠল।
পনের শতকের প্রথম দিকে ইংল্যান্ডের রাজা ছিলেন তৃতীয় এডয়ার্ড তিনি কিংবদন্তির রাজা আর্থারের অনুকরণে রাউন্ড টেবিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে ইংল্যান্ডের যে সমস্ত অঞ্চল ফরাসিরা তাদের দখলে নিয়েছিল সেগুলো উদ্ধার করে ফ্রান্সের রাজা হওয়ার ইচ্ছা দেখা দিল এডয়ার্ডের মাঝে। ওদিকে ফ্রান্সও বসে ছিল না। তারাও ইংল্যান্ডের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করার চেষ্টা করতে লাগল আর ইংল্যান্ডের ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষতি সাধন করার চেষ্টা চালাতে লাগল। এর ফলে ফ্রান্সের সাথে ইংল্যান্ডের যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠল। আর এভাবেই শুরু হল ফরাসিদের সাথে ইংল্যান্ডের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধ। এ যুদ্ধে ১৩৩৭ সালে তৃতীয় এডয়ার্ড নতুন আবিস্কৃত কামান ব্যবহার করল ফরাসিদের বিরুদ্ধে এবং পরাজিত হল ফ্রান্স আর এই পরাজয় শেষ পর্যন্ত ফরাসি দেশ থেকে বয়ে আনল ভয়াবহ প্লেগ রোগ। ইংরেজ সেনারা এই ভয়াবহ মড়কের নাম দিল ব্ল্যাক ডেথ এই ভয়াল রোগের আক্রমণে ইংল্যান্ডের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোক মৃত্যুমুখে পতিত হল।
অন্যদিকে ফ্রান্স ইংল্যান্ডের এই আর্থ-সামাজিক দুর্দিনের সুযোগ নিয়ে আবার ইংল্যান্ড আক্রমণ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করল। ইংল্যান্ড রাজও ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধ করার জন্য নতুন করে দেশে বাড়তি করের বোঝা চাপাল। এতে করে ইংল্যান্ডের জনমানসে প্রচণ্ড এক ক্ষোভের সঞ্চার হল। ১৩৮০ সালে এটা নিয়ে জনগণ মিছিল করল। রাজা রিচার্ড এই বিক্ষোভ দমন করলেন শক্ত হাতে। এ সময়েই পোপের বিরুদ্ধে জনমনে ঘৃণার সৃষ্টি হয় কারণ পোপ ছিলেন রাজার ছায়ামাত্র। রাজা তৃতীয় এডয়ার্ড ক্ষমতায় এসে পোপের অধিকার মোটামুটি খর্ব করেন।
মোট কথা সে কালে গির্জাগুলো অন্যায় পাপ আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। চার্চগুলো তখন হয়ে উঠেছিল ভোগ-বিলাসের কেন্দ্র। এ সময়েই চার্চকে লক্ষ্য করে ব্যাপক গণ-আন্দোলন ও গণ-অসন্তোষ মাথা চাড়া দেয়। বহু ভক্তজন গির্জায় যাওয়া আসা বন্ধ করে দেয়। এ সময়ে তীর্থ পর্যটন বিষয়টা ছিল ইংল্যান্ডের জনজীবনের এক প্রধান দিক। ১১৭০ সালে ক্যান্টারবারি চার্চের আর্চবিশপ টমাস বেকেট রাজা দ্বিতীয় হেনরি কর্তৃক নিহত হন। এটি ছিল মূলত রাজশক্তি ও ধর্মশক্তির সংঘর্ষের শেষ পরিণতি। বেকেটের মৃত্যু ইংল্যান্ডের জনগণের ভেতরে দারুণ আঘাত হানে এবং ভক্তদের মাঝে ভক্তি ও করুণা ধারার জোয়ার বয়ে যায়। বেকেটের মৃত্যুতে জনগণ ক্যান্টারবারি চার্চকে ভক্তি ও শ্রদ্ধার চোখে দেখতে থাকে এবং ভক্তরা এটিকে তীর্থস্থান হিসেবে গণ্য করতে থাকে। বেকেটের নিহত হওয়ার দিনটিকে তারা পবিত্র দিন হিসেবে গণ্য করতে থাকে এবং এ দিনটিতে ইংল্যান্ডের নানা অঞ্চল হতে হাজার হাজার মানুষ ক্যান্টারবারি গির্জায় সমবেত হতে থাকে। এই ক্যান্টারবারি গির্জা মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের জনমানসে বিশেষ করে আধ্যাত্মিক দিক থেকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। সে কালে ভক্ত নর-নারীরা শুধু ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক চিন্তাচেতনার বশবর্তী হয়েই তীর্থযাত্রায় বের হত না। তারা তাদের একঘেয়ে জীবনে কিছুটা বৈচিত্র্য আনার মানসে তীর্থযাত্রীদের সঙ্গী হত।



1 comment: