আনসারদের পরিচয়ঃ
আওস ও খাজরাজ দুই ভ্রাতার বংসধরদের আনসার বলা হয়। নিচের
ঘটনার মাদ্ধ্যমে বিস্তারিতঃ
আমর ইবনে আমিরের ইয়ামন ত্যাগঃ
আবু যায়েদ আনসারীর বর্ণনা অনুযায়ী আমএর ইবনে আমূরের ইয়ামন ত্যাগের কারনেই ছিলো
যে, মারীবের যে বাধ টি ঈয়ামনবাসির জন্যে পানি সংরক্ষন করতোএবং
তারা ইচ্ছামত সেই পানি দিয়ে সেচ দিতো, একদিন তিনি দেখলেন সেই বাধে একটি বন্য ইদুর গর্ত খুড়েছে।এতে করে তিনি বুঝলেন
যে বাধ টি বেশি দিন টিকবে না।তাই তিনি ইয়ামন থেকে অন্যত্র চলে যাওার সিদ্ধান্ত নেন।তার বংসধররা তার সাথে
এই ব্যাপারে বিরোধে লিপ্ত হয়।এক পর্যায়ে তিনি তার ছোট ছেলেকে বললেন,আমি যখন তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করে তোমাকে চড় দেব, তখন তুমিও আমাকে আক্রমন করবে এবং পালটা চড় দেবে । তখন তার ছেলে তার নির্দেশ মত
কাজ করল।তখন আমর তার ছেলেকে বললঃ আমি এমন দেশে আর থাকবো না , যেখানে আমার ছেলে আমকে থাপ্পর দেয়।তারপর তিনি নিজের সমস্ত সম্পদ
বিক্রির জন্যে বাজারে নিয়ে গেলেন।এ সময় ইয়ামানের কিছু গন্যমান্য ব্যাক্তি
দেশবাসীকে বলল, তোমরা আমরের রাগকে স্বাগত
জানাও।তারপর তারা তার সম্পত্তি কিনে নিল।আমর তার নিজের কিছু সন্তান এবং পৌত্রদের
নিয়ে দেশ ত্যাগ করলেন।
এই সময়
বনু আযদ বলল , আমরাও আমর ইবনে আমীরের সাথে চলে যাব।এখানে
থাকবো না।তারপর তা্রাও তাদের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে চলে গেল।বহু এলাকা পেরিয়ে
তারা আকের নামক এলাকায় গিয়ে বসতি স্থাপন করল। ‘আকের বংসধর তাদের সাথে যুদ্ধে
লিপ্ত হল।যুদ্ধে কখোনো তারা জিততো আবার কখোনো তারা হারতো। তারপর
তারা সেখান থেকে বেরিয়ে গেল এবং তারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লো।হাফনা ইবনে আমীরের
বংসধর সিরিয়ায়, আওস ও খাজরাজ ইয়াসরিবে(মদিনায়) , বনূ খজায়া মারয়ায় , আযদের বংসধর সারা ও
আম্মানে বসতি স্থাপন করলো।এরপর আল্লাহ তা’য়ালা বন্যা দিয়ে ম’রিবের
বাধ ভেংগে দিলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সুরা সাবায় বলেন,
১৫) ‘সাবা’র জন্য তাদের নিজেদের আবাসেই ছিল
একটি নিদর্শন৷ দুটি
বাগান ডাইনে ও বাঁমে৷ খাও তোমাদের রবের দেয়া রিযিক থেকে এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ কর৷ উত্তম ও পরিচ্ছন্ন দেশ এবং ক্ষমাশীল রব৷
১৬)
কিন্তু তারা মখু ফিরালো৷ শেষ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে পাঠালাম বাঁধভাঙ্গা বন্যা৷ এবং তাদের আগের দুটি বাগানের
জায়গায় অন্য দুটি বাগান তাদেরকে দিয়ে দিলাম যেখানে ছিল তিক্ত ও বিস্বাদ ফল এবং
ঝাউগাছ ও সামান্য কিছু কুল৷
কবি আ’শা বলেন, “ইংগিত
উপলব্ধিকারীদের জন্যে যথেষ্ঠ নিদর্ষন ও শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে।এবং বন্যা মারীব বাধ
টিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। হিময়ার সেটি পাথর দিয়ে নির্মান করেছিলো।বন্যায় সেটি কখোনো
তার ক্ষতি করতে পারেনি। সেই বাধ তাদের ফসল ও আংগুরকে পানি দিয়েছে অকৃপন ভাবে।যখন তা বন্টিত হত, তখন তা সবার জন্যে পর্যাপ্ত হত। এরপর তারা
এমন অভাবগ্রস্থ হয় যে,তারা দুধ ছাড়ানো বাচ্চাকে এক চুমুক
পানিও দিতে পারতো না ।
ইসমাঈল আলাইহিস্ সালামের অধস্তন পুরুষদের বংশক্রম
ইসমাঈল আলাইহিস সালামের ঔরসে ১২ জন পুরুষ সন্তান জন্মগ্রহণ
করেন। তাঁরা হলেন: নাবেত, কাইযার, আযরাল, মীশ, মাসমা’, মাশী, দাম, আযর, তীম, ইয়াতুর, নাবাশ ও কাইয়ুম।
নাবেতের ঔরসে ইয়াসজুব, ইয়াসজুবের ঐরসে ইয়া’রুব, ইয়া’রুবের ঔরসে উদ এবং উদের ঔরসে আদনান জন্মগ্রহণ করেন।
আনদানের পর থেকে ইসমাঈলের বংশধরগণ গোত্রে গোত্রে বিভক্ত হয়ে
পড়ে। আদনানের দু’টি পুত্রসন্তান ছিল : মাআদ ও আক।
আক ইবনে আদনান চলে যান ইয়ামানে এবং সেখানেই তাঁর বংশধররা
স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন। আক সেখানকার বনু আশয়ার গোত্রে বিয়ে করেন এবং তাদের সাথেই
বসবাস করতে থাকেন, ফলে তাদের দেশ ও ভাষা
উভয়ই এক হয়ে যায়। বনু আশয়ার গোত্রের ঊর্ধতন পুরুষরা হলো : আশয়ার, তদীয় পিতা নাবাত, তদীয় পিতা উদ, তদীয় পিতা হামাইসা, তদীয় পিতা আমর, তদীয় পিতা উরাইব, তদীয় পিতা ইয়াশজুব, তদীয় পিতা যায়েদ, তদীয় পিতা কাহলান, তদীয় পিতা ইয়াশযুব, তদীয় পিতা ইয়ারুব ও তদীয় পিতা কাহতান।
আদনানের অপর পুত্র মাআদ ইবনে আদনানের চারটি সন্তান জন্মে :
নিযার, কুদাআ, কানাস ও ইয়াদ। কুদাইর
বংশধর হিমইয়ার ইবনে সাবা পর্যন্ত বেঁচে থাকার সৌভাগ্য অর্জন করে। কিন্তু মাআদ
সংক্রান্ত বংশধর বিশেষজ্ঞের মতে, কানাস বিন মাআদের
বাদবাকী বংশধর নিশ্চিহ্ন হযে যায়। তবে হিরার বাদশাহ নুমান ইবনে মুনযির তাদেরই
বংশধর।
তথ্যসূত্রঃ সিরাতে ইবনে হিশাম (মূল বই-ইসলামীক ফাউন্ডেশন
এবং সংক্ষিপ্ত বই ইসলামীক সেন্টার )
very nice
ReplyDelete