এক চাষী খেতে ধান কাটিতে
কাটিতে একখানা আয়না কুড়াইয়া পাইলো।তখনও এই দেশে আয়নার প্রচলন হয় নাই।কাহারও বাড়িতে
একখানা আয়না কেও দেখে নাই।এক কাবুলিওয়ালা র ঝুড়ি থেকে কি করিয়া একখানা আয়না মাঠের
মাঝে পড়িয়া গিয়েছিলো।আয়না খানা পাইয়া চাষী হাতে লইলো।হঠাত তাহার দিকে নজর দিতেই
দেখে, আয়নার ভিতরে একটা মানুষ।
আহ-হা এ যে তার বাপজানের চেহারা।বহি দিন আগে তার বাবা মারা গিয়াছে।আজ বড় হইয়া
চাষির নিজের চেহারাটাই তার বাপের মত হইয়াছে।সব ছেলেই বড় হইয়া কতকটা বাপের মত চেহারা পায়।তাই আয়নার তারা
নিজের চেহারা দেখিয়াই চাষী ভাবিল, সে তার বাবাকে
দেখিতেছে।তখন আয়নাখানা কপালে তুলিয়া সে সালাম করিল।মুখে লইয়া চুমো দিল। " আহা
বাপজান!তুমি আসমান হইতে নামিয়া আমার ধান খেতের মাঝে লুকাইয়া আছো! বাজান --ও বাজান।
চাষী এইভাবে কথা কয় আর আয়নার দিকে চায়। চাষী বলে, " আজান! তুমি তো মরিয়া গেলে। তোমার খেত
ভরিয়া আমি সোনাদিঘা ধানা বুনিয়াছি।শাইল ধান বুনিয়াছি। দেখ দেখ বাজান। কেমন তারা রোদে
ঝলমল করিতেছে। তোমার মরার পর বাড়িতে মাত্র একখানা ঘর ছিলো।আমি তিন খানা ঘর তৈরীক
করিয়াছি, বাজান!
বাজান, আমার সোনার বাজান আমার
মানিক বাজান।সেদিন চাষী আর কোন কাজই করলো না। আয়ান খানা হাতে লইয়া সব গুলি খেতে
ঘুড়িয়া বেড়াইলো।সাঝ হলে বাড়ি আসিয়া, চিন্তায় পড়ে গেল। আয়নাখানা কোথায় রাখে এখন? সে গরিব মানুশ। তাহার বাড়িতে তো কোন বাক্স নাই। সে পানির কলশির ভিতর আয়ানা খানা লুকিয়া
রাখলো।পরদিন চাষী এ কাজ করে, ও কাজ করে, দৌড়িয়ে বাড়ি আসে। এখানে যায়, সেখানে যায় আর দৌড়িয়ে বাড়ি আসে।
পানির ভিতর হইতে সেই আয়না খানা বাহির করিয়া নাড়িয়া চাড়িয়া দেখে, আর কত রকমের কথা বলে, বাজান, ----আমার বাজান। তোমাকে একলা রাখিয়া আমি একাজে যাই, ও কাজে যাই, তুমি রাগ করিও না।দেখ বাজান,
আমরা যদি ভালো ভাবে কাজ না করি, তবে আমরা খাইবো কি? চাষার বউ ভাবে এতোদিন আমার
সাথে আমার সোয়ামী কত কথা বলিত, কত হাসি তামাশা করিয়া এটা ওটা চাহিত, কিন্তু
আজ কয় দিন আমার সাথে একটাও কথা বলে না। পানির কলসি থেকে কি যেন বাহির করিয়া দেখে
আর আবোল তাবোল বকে, ইহার কারন কি?।
Total Pageviews
Tuesday, February 9, 2016
গ্রাম বাংলার হাসির গল্পঃ আয়না (পর্ব ১)
লোককথা
Labels:
Bangla short story,
short story,
story of life,
ছোট গল্প,
মজার গল্প,
লোককথা
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment