সংগ্রহঃ জার্মান লোককথা
"চুপ। বেশি কথা বললে, আমি তোমাকেই খেয়ে ফেলবো"।
Bangla Funny Story - The Rat and The Cat |
বিড়াল আর
ইঁদুরের মাঝে বড়ই ভাব। একবার তারা চিন্তা করল, একসঙ্গে
একই ঘরে বসবাস করবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ।শুরু হলো তাদের একই বাড়িতে বসবাস। শীতকালে
চারিদিকে খাবারের খুবই অভাব। শীতের জন্য তারা একটা চর্বির পাত্র কিনলো। দূরের একটি
গির্জার বেদির নিচে লুকিয়ে রাখলো। শীতকালে যখন খাবারে টান পড়বে তখন এই পাত্রের
খাবার তারা
খাবে।
একদিন বিড়ালটি বলল, শোনো
ছোট্ট ইঁদুর, আমার
মামাতো বোনের চাঁদের মতো ফুটফুটে সুন্দর একটি ছেলে হয়েছে। পারিবারিক মুরব্বি
হিসেবে তার ছেলেটির ধর্মে দিক্ষিতের কাজটি আমাকেই করতে হবে।তাই তারা আমাকে সেখানে
নিমন্ত্রণ করেছে। তাই তোমাকে একাকী এখানে রেখে আমাকে যেতে হচ্ছে।"
" ঠিক
আছে, যাও।
তবে ভালো খাবার পেলে আমার কথাও একটু মনে কোরো। কতদিন আমি লাল আংগুরের শরবত খাই
না", বলল
ইঁদুরটি।
বিড়ালটি
সোজা চলে গেল গির্জার পেছনে। লুকিয়ে রাখা চর্বির পাত্রের ওপর থেকে খানিকটা চর্বি
তারাতারি খেয়ে নিল। তারপর ধীর পায়ে চলে গেল শহরে। সারাদিন ঘোরাফেরা করে বাড়ি ফিরলো
সন্ধ্যার পরে।
"নিশ্চয়ই বেশ আনন্দেই কেটেছে তোমার আজকের দিনটা। তা কী নাম রাখলে তোমার
ভাগ্নের?" ইঁদুর
জিজ্ঞাসা করলো। টপ-অফ, টপ-অফ(top-off) নাম
রেখেছি ভাগ্নের।টপ-অফ, মজার নাম তো! এমন নাম আগে তো কখনো শুনিনি।
কিছুদিন
পর আবার ফন্দি আঁটলো বিড়ালটি।সে ইঁদুরটিকে ডেকে বলল," শুনেছো, আমার
আর এক বোনের আবার সন্তান হয়েছে। আমাকে আবার দ্বিতীয় ভাগ্নেটির কাছে যেতে হবে।
পরিবারের মুরব্বি হিসেবে আজ তার হাতে সাদা আংটি পরাতে হবে। আমি বোনটাকে না করতে
পারিনি। তোমাকে এবারও কস্ট করতে হবে। বাড়িটির দিকে একটু নজর রেখো ভাই।"মাথা
নেড়ে সায় দিল বোকা ইঁদুরটি।
চতুর
বিড়াল গির্জার পেছনে গিয়ে চর্বির অর্ধেকটা খেয়ে কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে
এলো।"আচ্ছা, তোমার বোনটির ছেলের নাম তো জানা হলো না। কী
নাম তার?" ইঁদুর
জিজ্ঞাসা করলো।
"হাফ-গন!হাফ-গন! (half-gone)"।
"কী বলছো তুমি! এমন নামতো আমি
জীবনেও শুনি নাই। আর নামের বইয়েও তো এ রকম নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না।"
বিড়ালটির
মাথায় তখন চর্বির কৌটার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। "শুনেছো, তৃতীয়বারের
মতো আমাকে তারা নিমন্ত্রণ করেছে। এবারের ভাগ্নেটা কিন্তু কালো। কিন্তু তার পা দুটো
সাদা। সারা শরীরে আর কোথাও সাদা রঙ নেই। এমন ঘটনা খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। যাই
হোক তুমি আমাকে যাওয়ার জন্য অনুমতি দাও"। বিড়ালটি হাসতে হাসতে বলল।
"টফ-অফ, হাফ-গন!
নামগুলো বেশ রহস্যের মধ্যে ফেলছে আমাকে। ঠিক আছে, যাও"_ ইঁদুর
বলল। ইঁদুরটি ছিল হাবাগোবা। বাড়ি, ঘরদোর সে সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে রাখে। আর
এর মধ্যে চর্বির কৌটা থেকে সবটুকু চর্বি খেয়ে সাবাড় করে ফেলেছে ধূর্ত বিড়াল।
রাতে
বেশ চনমনে হয়ে বাড়ি ফিরলো বিড়ালটি।"তৃতীয় ভাগ্নেটির নাম কী রাখলে?" অল-গান!অল-গন!
(all-gone)।
"বেশ ভয়ঙ্কর নাম তো! এ নামের
অর্থ কী? কোনো
বইপত্রে তো এমন নাম কখোনো দেখিনি! মাথা নাড়তে নাড়তে
ঘুমোতে গেল বেচারা ইঁদুর।চতুর্থবারের মতো কেউ আর বিড়ালটিকে দাওয়াত করলো না।
অবশেষে শীতকাল চলে এলো। খাবার-দাবারের খুবই
অভাব।ইঁদুর বিড়ালকে বলল, চলো গির্জার পেছন থেকে লুকিয়ে রাখা চর্বির
কৌটাটি নিয়ে আসি।দু’জন
সেখানে গিয়ে খুঁজে পেল খালি কৌটাটি।
বুঝতে
পারলাম তোমার চালাকি। তুমি তাহলে এখানেই এসেছ দাওয়াত খেতে। প্রথমবার টফ-অফ, দ্বিতীয়
বার হাফ-গন, আর
তৃতীয়বার অল-গন?"
"চুপ। বেশি কথা বললে, আমি তোমাকেই খেয়ে ফেলবো"।
ধমক
শুনে থমকে গেল বেচারা ইঁদুর। "তৃতীয় ভাগ্নের নাম তাহলে অল-গান"।বলেই
বিড়াল তাকে ধরে ফেলার পূর্বেই মাথা নিচু করে দিল ভোঁ-দৌড়। পেছনে তার বন্ধু চতুর
বিড়াল।
No comments:
Post a Comment